লালমনিরহাটে তিস্তার ভাঙনে হারিয়ে যাচ্ছে চর গোকুন্ডা গ্রাম

Lalmonirhat teesta erosion
লালমনিরহাট সদর উপজেলার গোকুন্ডা ইউনিয়নে তিস্তার ভাঙনের শিকার চর গোকুন্ডা গ্রাম। ১৯ আগস্ট ২০২০। ছবি: স্টার

লালমনিরহাটে বিভিন্নস্থানে তিস্তার ভাঙন তীব্র আকার ধারণ করেছে। তিস্তার গর্ভে চলে যাচ্ছে ফসলি জমি, বসতভিটা, ফলের বাগান। হুমকিতে রয়েছে আরও বসতভিটা ও আবাদি জমি।

কয়েকদিন থেমে থাকার পর আবারও তিস্তার ভাঙনে পড়েছে চর গোকুন্ডা গ্রাম। লালমনিরহাট সদর উপজেলার গোকুন্ডা ইউনিয়নের তিস্তাপাড়ের এই গ্রামটি ধীরে ধীরে হারিয়ে যাচ্ছে নদীগর্ভে।

চর গোকুন্ডার নদীভাঙনের শিকার কৃষক আবু বক্কর (৬৫) দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘লালমনিরহাটের বিভিন্নস্থানের মতো চর গোকুন্ডা গ্রামে তিস্তার ভাঙন তীব্র হয়েছে। গত পাঁচ দিনে প্রায় ৫০টি বসতভিটা ও কয়েকশ বিঘা আবাদি জমি তিস্তার গর্ভে বিলীন হয়েছে। এর আগে গত দুই মাসে তিস্তার গর্ভে বিলীন হয়েছে আরও ৬০টি বসতভিটা ও বিপুল পরিমানে আবাদি জমি।’

ভাঙনের শিকার কৃষক আমিরুল ইসলাম (৫৮) ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘ভাঙন অব্যাহত থাকায় ইউনিয়নের মানচিত্র থেকে হারিয়ে যাচ্ছে চর গোকুন্ডা গ্রামটি। অবশিষ্ট রয়েছে আর কয়েকটি বসতিভটা। সেগুলোও রয়েছে ভাঙনের হুমকিতে। শুনেছি, ভাঙন ঠেকাতে একমাস আগে পানি উন্নয়ন বোর্ড ৬৭ লাখ টাকা খরচে ১৪ হাজার ৭৫০টি জিও-ব্যাগ ডাম্পিং করার কাজ হাতে নিয়েছে। কিন্তু, কাজে কোনো অগ্রগতি নেই।’

‘জিও-ব্যাগে বালু ভরাটের নামে নদীতে ড্রেজার বসিয়ে বালু তোলা হচ্ছে। এ কারণে ভাঙন তীব্র আকার ধারণ করেছে,’ বলে মনে করেন তিনি।

ভাঙনকবলিত এলাকার শরিফা বেগম (৪৬) ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘বসতভিটা, আবাদি জমি ও বেঁচে থাকার অবলম্বন হারিয়ে চর গোকুন্ডা গ্রামের মানুষজন আশ্রয় নিয়েছেন সরকারি রাস্তায় ও অন্যের জমিতে।’

‘পরিবার নিয়ে চরম বিপাকে পড়েছি’ উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, ‘অনেকে গ্রাম ছেড়ে চলে গেছেন অজানা ঠিকানায়। শুষ্ক মৌসুমে তিস্তা থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করায় এখানে ভাঙন তীব্র হয়েছে’ বলেও অভিযোগ করেন তিনি।

কৃষক আমিনুল আসলামের (৪৮) অভিযোগ, ‘পানি উন্নয়ন বোর্ডের কাজ সময়মতো শেষ না করায় চর গোকুন্ডায় তিস্তার ভাঙন থামছে না। একের পর এক বসতভিটা ও আবাদি জমি হারিয়ে যাচ্ছে।’

অতিদ্রুত জিও ব্যাগ প্রস্তুত করে ভাঙনকবলিত স্থানে তা ফেলে ভাঙন ঠেকানোর দাবি জানিয়েছেন এই কৃষক।

লালমনিরহাট পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মিজানুর রহমান ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘রাজনৈতিক প্রভাবে একটি কাজ পাঁচ ভাগ করে পাঁচ ঠিকাদার করছেন। সে কারণে কাজের কোনো গতি নেই।’

‘ঠিকাদারদের বারবার তাগিদ দেওয়া হলেও তারা কর্ণপাত করছেন না’ জানিয়ে তিনি আরও বলেন, ‘আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে জিও- ব্যাগ প্রস্তুত করে তা ডাম্পিং করা না হলে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করে নতুন ঠিকাদারের মাধ্যমে কাজটি সম্পন্ন করা হবে।’

জিও-ব্যাগে বালু ভরাটের নামে যাতে নদীর কিনারা থেকে বালু যাতে না তোলা হয় সেজন্য তারা বিশেষ নজর দিয়েছেন বলেও জানান তিনি।

Comments

The Daily Star  | English

Not going anywhere till the job is done: Adviser Wahiduddin Mahmud

When asked about the chief adviser's resignation the adviser said, 'But he did not say he was leaving'

55m ago