ফেসবুক জনস্বাস্থ্যের জন্য হুমকি: আভাজের জরিপ

ছবি: রয়টার্স ফাইল ফটো

ফেসবুকে গত এক বছরে প্রায় ৩৮০ কোটি স্বাস্থ্য সম্পর্কিত ভুল তথ্য দেখেছেন ব্যবহারকারীরা। কোভিড-১৯ মহামারির সবচেয়ে সংকটজনক সময়েই সবচেয়ে বেশিবার ভুল স্বাস্থ্য বার্তা মানুষের কাছে পৌঁছেছে বলে এক জরিপে উঠে এসেছে। 

বিবিসি জানায়, ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া ভুল স্বাস্থ্য বার্তা নিয়ে এই গবেষণা চালিয়েছে আভাজ নামের একটি প্রতিষ্ঠান। তারা জানায়, ফেসবুক জনস্বাস্থ্যের জন্য একটি ‘বড় হুমকি’ তৈরি করেছে।

ফেসবুক কর্তৃপক্ষের দাবি, তারা যেসব পদক্ষেপ নিয়েছে, তা এই প্রতিবেদনে প্রতিফলিত হয়নি।

এক বিবৃতিতে প্রতিষ্ঠানটি জানায়, ‘মিথ্যা তথ্য রুখতে আভাজের এই লক্ষ্যের সঙ্গে আমরাও একমত। বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে থাকা ফ্যাক্ট চেকার্স নেটওয়ার্ক এর মাধ্যমে আমরা এপ্রিল থেকে জুন পর্যন্ত ৯ কোটি ৮০ লাখ ভুয়া তথ্যে কোভিড-১৯ এর সর্তকতা লেবেল যোগ করেছি। ক্ষতির কারণ হতে পারে এমন ৭০ লাখ কন্টেন্ট সরিয়ে নিয়েছি।’

ফেসবুক আরও জানায়, ‘আমরা দুইশো কোটিও বেশি মানুষের কাছে স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষের রেফারেন্স পৌঁছে দিয়েছি। যখনই কেউ কোভিড-১৯ সম্পর্কে কোনও লিংক শেয়ারের চেষ্টা করে, আমরা তখন তাকে বিশ্বাসযোগ্য তথ্যসূত্রের সঙ্গে সংযুক্ত করার জন্য একটি পপ-আপ দেখানোর ব্যবস্থা করেছি।’

এদিকে, আভাজ বলছে, এমন প্রচেষ্টার পরেও ফেসবুকে স্বাস্থ্য সংক্রান্ত ভুল তথ্যের মাত্র ১৬ শতাংশ শনাক্ত করা গেছে ও তাতে সতর্কতা লেবেল যোগ করা হয়েছে।      

আভাজের ওই গবেষণা প্রতিবেদনে ভুল স্বাস্থ্য বার্তা ছড়ায় এমন শীর্ষ ১০টি ওয়েবসাইট চিহ্নিত করেছেন গবেষকরা। ফেসবুকে শেয়ারের মাধ্যমে ১০টি সাইটের খবর বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা-সহ অন্য অনেক স্বীকৃত প্রতিষ্ঠানের তুলনায় প্রায় চারগুণ বেশি মানুষ দেখেছে।

ফেসবুকের মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভুল স্বাস্থ্যবার্তার একটি বড় অংশ বিভিন্ন পাবলিক পেইজ থেকে শেয়ার করা হয়। এই ধরনের ৪২টি পেইজের প্রায় ২ কোটি ৮০ লাখ ফলোয়ার আছে বলে জানিয়েছে আভাজ।

উদাহরণ হিসেবে গবেষকরা জানান, বিল গেটসের অর্থায়নে একটি পোলিও টিকার ব্যবহারে ভারতে পাঁচ লাখ শিশুর পক্ষাঘাত হয়েছে- এমন একটি ভুয়া খবর প্রায় ৮৪ লাখ মানুষ দেখেছেন।

ইবোলার মতো মারাত্মক রোগের ভুল চিকিৎসা পদ্ধতি নিয়ে লেখা একটি প্রবন্ধ ৪৫ লাখ মানুষ দেখেছেন। 

‘কোয়ারেন্টিন মানুষের জন্য ক্ষতিকর’ এমন একটি প্রবন্ধ দেখেছেন ২৪ লাখ মানুষ।

আভাজের ক্যাম্পেইন ডিরেক্টর ফাদি কুরান বলেন, ‘জনস্বাস্থ্যের জন্য ফেসবুকের অ্যালগরিদম মারাত্মক হুমকি। করোনাভাইরাস মহামারির সময়ে মার্ক জাকারবার্গ নির্ভরযোগ্য তথ্য সরবরাহের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। কিন্তু ফেসবুকের এলগরিদম ২৭০ কোটি ব্যবহারকারীর অনেককেই ভুল স্বাস্থ্যবার্তা প্রচার করে এমন নেটওয়ার্কের খবর দেখিয়েছে।’

এদিকে, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভ্যাকসিন সম্পর্কে মিথ্যা তথ্য ছড়ানো হচ্ছে বলে আশংকা করছেন চিকিত্সকরা। তারা জানান, ভুয়া তথ্য ছড়ানোর ফলে করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিন পাওয়ার পর অনেকেই হয়তো বিভ্রান্ত হয়ে সেটা নিতে চাইবেন না।

Comments

The Daily Star  | English

10 ministries brace for budget cuts

The railway ministry, the power division, and the primary and mass education ministry will see the biggest chop.

10h ago