র‌্যাপিড টেস্ট কিটের অনুমোদন দিতে যাচ্ছে সরকার

সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে দাঁড়ানোর পরিবর্তে কোভিড-১৯ উপসর্গ রয়েছে এমন ব্যক্তিরা করোনা পরীক্ষা করানোর জন্য রাজধানীর মুগদা জেনারেল হাসপাতালের সামনে ভিড় করেছেন। ১৯ আগস্ট ২০২০। ছবি: এস এনামুল হক

আরটি-পিসিআর মেশিনের ওপর নির্ভরতা কমিয়ে দৈনিক করোনা পরীক্ষার সংখ্যা বাড়াতে র‌্যাপিড টেস্ট কিট ব্যবহারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।

মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. মোস্তফা কামাল গতকাল বুধবার দ্য ডেইলি স্টারকে জানান, এ লক্ষ্যে করোনা পরীক্ষার প্রোটোকলে সংশোধনী আনা হচ্ছে।

সরকার কর্তৃক গঠিত নয় সদস্যের আন্তঃমন্ত্রণালয় টাস্ক ফোর্সের প্রধান মোস্তফা কামাল বলেন, ‘আমরা আগামী রোববারের মধ্যে টেকনিক্যাল টিমের কাছ থেকে এ বিষয়ে চূড়ান্ত গাইডলাইন পেয়ে যাব এবং এরপরে চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য সরকারের কাছে জমা দেব। আশা করছি আগামী সপ্তাহের মধ্যে পুরো প্রক্রিয়াটি শেষ হবে।’

ন্যাশনাল টেকনিক্যাল এডভাইজারি কমিটি (এনটিএসি) তিন মাস আগে করোনা পরীক্ষায় পিসিআর মেশিনের ওপর চাপ কমাতে র‌্যাপিড টেস্ট কিট ব্যবহারের সুপারিশ করে।

এই অতিরিক্ত সচিব বলেন, দৈনিক পরীক্ষা সংখ্যা বাড়ানো ওপর জোর দিচ্ছে টাস্ক ফোর্স এবং ‘দ্রুত ও পরীক্ষার খরচ কমানোই এর লক্ষ্য’।

তিনি আরও যোগ করেন, ‘বিশ্বের অনেক দেশের মতো আমাদেরও সংক্রামিত সকলকে শনাক্ত করতে এ জাতীয় (র‌্যাপিড) পরীক্ষার অনুমতি দেওয়া দরকার।’

এক মাসেরও বেশি সময় ধরে দৈনিক শনাক্তের হার ২০ শতাংশেরও বেশিতে আটকে আছে। যা সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে রাখার প্যারামিটারে নির্দিষ্ট হার পাঁচ শতাংশের তুলনায় অনেক বেশি।

র‌্যাপিড টেস্ট কিটের মাধ্যমে সর্বোচ্চ ৩০ মিনিটের মধ্যে পরীক্ষাগারের বাইরেই করোনা পরীক্ষা করা সম্ভব। এই কিট দুই ধরনের। একটি এন্টিজেন ভিত্তিক এবং অপরটি অ্যান্টিবডি ভিত্তিক।

অ্যান্টিজেন ভিত্তিক র‌্যাপিড টেস্ট একটি মলিকুলার পরীক্ষা। এটি আরটি-পিসিআর পরীক্ষার বিকল্প। কারো শরীরে যদি ভাইরাস থাকে, তাহলে এ পদ্ধতিতে তা শনাক্ত করা যায়। অ্যান্টিবডি পরীক্ষার মাধ্যমে জানা যায়, শরীরে ভাইরাসের উপস্থিতি ছিল কিনা এবং তার শরীরে সম্ভাব্য রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরি হয়েছে কিনা।

গত ২৪ জুন ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তরের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত একটি নোটিশ বলা হয়েছে, ন্যূনতম ৯০ শতাংশ সংবেদনশীলতা এবং ৯৫ শতাংশ সঠিক ফলাফল দেয় এমন কিটকে অনুমোদন দেওয়া হবে।

তবে বিশেষজ্ঞদের দৃঢ় সুপারিশ থাকলেও এ বিষয়ে আর কোনো অগ্রগতি হয়নি।

যোগাযোগ করা হলে এনটিএসি সদস্য অধ্যাপক নজরুল ইসলাম গতকাল দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘সত্যি হলে এটা একটা সুসংবাদ। আরটি-পিসিআর পরীক্ষার জন্য মানুষকে যে দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে হতো সেই দুর্ভোগের অবসান হবে এতে।’

র‌্যাপিড টেস্টের বিষয়টি বিবেচনা করছেন জানিয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক গতকাল গণমাধ্যমকে বলেন, ‘অ্যান্টিজেন বা অ্যান্টিবডি যাই হোক না কেন, জনগণের জন্য যেটা ভালো হয় সেটাতেই আমরা যাব।’

করোনা পরীক্ষার ফি কমেছে

কোভিড-১৯ পরীক্ষার ফি ৫০ শতাংশ কমিয়েছে সরকার। গতকাল এ বিষয়ে সরকারি আদেশে স্বাক্ষর করেছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী।

স্বাক্ষর করে মন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের কাছে তথ্য আছে, অনেক দরিদ্র মানুষ পরীক্ষা করাচ্ছেন না। এ বিষয়ে আমরা প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা করেছি। করোনা পরীক্ষার ফি কমানো হয়েছে। আশা করি পরীক্ষার সংখ্যা আরও বাড়বে।’

করোনা পরীক্ষার ফি কমিয়ে, সরকার নির্ধারিত কেন্দ্রে গিয়ে নমুনা দিলে ১০০ টাকা এবং বাড়িতে বসে নমুনা দিলে ৩০০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। এই ফি ছিল ২০০ ও ৫০০ টাকা।

দেশে শুরু থেকে করোনা পরীক্ষা বিনামূল্যে করা হলেও গত ২৯ জুন থেকে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এই ফি ধার্য করে।

Comments

The Daily Star  | English

What we expect from a people-centric health budget

We must strongly advocate for a people-centric health budget.

8h ago