আধা কিলোমিটার মহাসড়ক পার হতে অপেক্ষা ঘণ্টার পর ঘণ্টা
গাজীপুর থেকে পাবনায় মায়ের বাড়িতে আসবেন বলে মঙ্গলবার সকাল ৮টায় বাসে উঠেছিলেন মোমেনা বেগম। যানজট না থাকায় বঙ্গবন্ধু সেতু পার হতে সময় লাগে মাত্র তিন ঘণ্টা। ভেবেছিলেন দুপুরের মধ্যে পৌঁছে মায়ের সঙ্গে দুপুরের খাবার খাবেন। তা আর হলো না।
সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর উপজেলায় বিসিক বাসস্ট্যান্ড এলাকায় বগুড়া-নগরবাড়ি মহাসড়কে পৌঁছাতেই শুরু হয় যানজট। গাড়ির চাকা ঘুরে বাড়ি যেতে দুপুর গড়িয়ে বিকেল।
তবে, এই যানজট হঠাৎ নয়। গত চার মাস ধরে মহাসড়কের এই অংশে সংস্কার কাজ চলছে। সড়কের এক পাশ বন্ধ করে দেওয়ায় যানবাহন চলাচলে এই অসুবিধার সৃষ্টি হয়েছে।
সিরাজগঞ্জ সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আশরাফুল ইসলাম দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘বগুড়া-নগরবাড়ি মহাসড়ক উত্তরাঞ্চলের অন্যতম ব্যস্ততম মহাসড়ক। বিসিক বাসস্ট্যান্ড এলাকার পাঁচ শ মিটার সড়ক সম্পূর্ণ ভেঙে গিয়ে যান চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। যে কারণে মহাসড়কের আধা কিলোমিটার ঢালাই করে উঁচু করা হচ্ছে।’
‘প্রায় দুই কোটি ৫০ লাখ টাকা ব্যয়ে এ সংস্কার কাজের কার্যাদেশ গত মে মাসে দেওয়া হলেও করোনার কারণে কাজ শুরু হতে দেরি হয়। জুনের মাঝামাঝিতে সংস্কার কাজ শুরু হয়। ইতোমধ্যে একপাশের ঢালাইয়ের কাজ শেষ হয়েছে। আশা করছি আগামী দুই মাসের মধ্যে পুরো কাজ শেষ হয়ে যাবে’, বলেন তিনি।
এদিকে মহাসড়কে সংস্কার কাজের ধীরগতির জন্য গত কয়েক মাস ধরে বগুড়া-নগরবাড়ি মহাসড়কে চলাচল দুর্বিষহ হয়ে পড়েছে বলে জানিয়েছেন পরিবহন শ্রমিকরা।
ঢাকা-পাবনা কোচের চালক ফারুক হোসেন দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘সড়কের এক লেনে ঢালাইয়ের কাজের জন্য অবশিষ্ট একটি লেন দিয়ে দুই লেনের গাড়ি চলাচল করছে। কিন্তু, যে লেন দিয়ে গাড়ি চালানো হচ্ছে, সে লেনটি ভেঙে যানবাহন চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়ায় প্রচুর পরিমাণ গাড়ির চাপে প্রতিদিন এ মহাসড়কে যানজট সৃষ্টি হচ্ছে।
বগুড়া-নগরবাড়ি মহাসড়ক দিয়ে উত্তরবঙ্গ ও রাজধানী ঢাকার সঙ্গে চলাচলকারী বিপুল পরিমাণ যাত্রীবাহী বাস ও মালবাহী ট্রাকের চাপে বছরজুড়েই কমবেশি যানজট লেগে থাকে। কিন্তু, সংস্কার কাজের জন্য গত চার মাস এ মহাসরকে চলাচল প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়েছে বলে জানান ফারুক। যানজটের কারণে অনেক যাত্রীবাহী বাস বনপারা-হাটিকুমরুল মহাসড়ক হয়ে যাতায়ত করে বলেও তিনি জানান।
ফারুক হোসেন আরও বলেন, ‘ভাগ্য ভালো থাকলে আধা ঘণ্টা থেকে এক ঘণ্টার মধ্যে বিসিক বাসস্ট্যান্ডের আধা কিলোমিটার এলাকার যানজট পার হওয়া যায়। তবে, বেশিরভাগ দিনই দুই থেকে তিন ঘণ্টার বেশি সময় লাগে বিসিক বাজারের যানজট পার হতে।’ তার অভিযোগ, নির্মাণ কাজের ধীরগতির কারণেই এ দুর্ভোগ হচ্ছে।
তবে, কাজে ধীরগতির অভিযোগ অস্বীকার করে সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী আশরাফুল আলম দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘এটি পিচ ঢালাইয়ের কাজ নয়, এটি কংক্রিট ঢালাইয়ের কাজ। কংক্রিটের ঢালাইয়ের জন্য সময় বেশি লাগে। কারণ ঢালাইয়ের পর ঢালাইকে মজবুত করতে সময় দিতে হয়। প্রায় এক ফুট পুরু এ ঢলাইয়ের কাজ দ্রুত গতিতে এগিয়ে চলেছে এবং সময়মতো শেষ হবে।’
Comments