সরকারি বরাদ্দ না পাওয়ায়

স্ব-উদ্যোগে ধরলার ভাঙন রোধ করছেন চর ফলিমারীর বাসিন্দারা

সরকারি বরাদ্দ না পাওয়ায় অবশেষে নিজেদের উদ্যোগেই ধরলা নদীর ভাঙন রোধ করছেন লালমনিরহাট সদর উপজেলার মোগলহাট ইউনিয়নের চর ফলিমারী গ্রামের বাসিন্দারা।
লালমনিরহাট সদর উপজেলার মোগলহাট ইউনিয়নের চর ফলিমারী গ্রামের বাসিন্দারা নিজেদের উদ্যোগেই ধরলা নদীর ভাঙন রোধ করছেন। ২০ আগস্ট ২০২০। ছবি: এস দিলীপ রায়

সরকারি বরাদ্দ না পাওয়ায় অবশেষে নিজেদের উদ্যোগেই ধরলা নদীর ভাঙন রোধ করছেন লালমনিরহাট সদর উপজেলার মোগলহাট ইউনিয়নের চর ফলিমারী গ্রামের বাসিন্দারা।

নিজেদের মধ্যে বাঁশ-কাঠ ও নগদ টাকা তুলে সবাই মিলে ভাঙন ঠেকানোর কাজ করছেন তারা। এরই মধ্যে ধরলার ভাঙনে নদীর গর্ভে বিলীন হয়েছে ২০টি বসতভিটা ও শতাধিক বিঘা আবাদি জমিসহ কয়েকটি কলার বাগান।

চর ফলিমারী গ্রামের নদীভাঙন কবলিত বাবুল হোসেন দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘আমাদের গ্রামে প্রায় আধা কিলোমিটার জুড়ে ধরলা নদীর ভাঙন তীব্র আকার ধারণ করেছে। লালমনিরহাট সদর উপজেলার মোগলহাট ইউনিয়নের এই গ্রামে পাঁচ শতাধিক পরিবার বসবাস করেন। নদীতে মাছ ধরা আর ফসল ফলানোই তাদের মূল জীবিকা।’

‘সরকারি সহযোগিতা না পাওয়ায় গ্রামের মানুষ ভাঙন ঠেকাতে নেমেছেন’ উল্লেখ করে তিনি জানান, গত সাতদিন ধরে গ্রামের সবাই কাজ করছেন।

একই গ্রামের নদীভাঙনে শিকার মোতালেব হোসেন ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘চাঁদা হিসেবে কেউ দিয়েছেন বাঁশ, কেউ কাঠ, কেউ রশি আবার কেউ নগদ টাকা দিয়েছেন। এর মধ্যে ঢাকা থেকে শাহরিয়ার নামে একজন দিয়েছেন এক হাজার প্লাস্টিকের বস্তা।’

‘ভাঙন ঠেকাতে বাঁশের পাইলিং তৈরি করে প্লাস্টিকের বস্তায় বালু ভরে নদীর কিনারায় ফেলা হচ্ছে। আপাতত ভাঙন ঠেকানো গেলেও এর স্থায়িত্ব নিয়ে আমরা চিন্তিত,’ যোগ করেন তিনি।

ধরলার ভাঙনে ভিটেহারা শফিকুল ইসলাম ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘সরকারি সহায়তা না পাওয়ায় নিজ উদ্যোগে ধরলার ভাঙন ঠেকানোর কাজ করা হচ্ছে। স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদেরও সহায়তা পাওয়া যায়নি।’

তিনি আরও বলেন, ‘এসবে হতাশ হলেও বসে থাকেনি গ্রামবাসী। তারা কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে ভাঙন ঠেকানোর কাজ করে যাচ্ছেন। নিজেদের কাজ বাদ দিয়ে সবাই বসতভিটা রক্ষা করার জন্যে ভাঙন ঠেকানোর কাজ করছেন।’

চর ফলিমারী গ্রামের আবু বক্কর সিদ্দিক ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘উত্তরে ও পূর্বে ধরলা নদী। মাঝেখানে চর ফলিমারী গ্রাম। এখানে রয়েছে তিনটি মসজিদ-মাদ্রাসা ও একটি স্কাউট স্কুল। ধরলা যেভাবে ভাঙছে তাতে পুরো গ্রাম হুমকিতে রয়েছে।’

‘ভাঙন ঠেকাতে টেকসই ব্যবস্থা গ্রহণ করা না হলে গ্রামবাসীদের নিজ উদ্যোগে ভাঙন ঠেকানোর প্রচেষ্টা ভেস্তে যেতে পারে’ আশঙ্কা প্রকাশ করে তিনি সরকারের কাছে পর্যাপ্ত জিও ব্যাগের দাবি জানান।

লালমনিরহাট সদর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান কামরুজ্জামান সুজন ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘আমি ঘটনাস্থলে গিয়ে চর ফলিমারী গ্রামের ভাঙনকবলিত মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছি। সাধ্যমতো তাদেরকে সহায়তা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছি।’

জিও ব্যাগ দিয়ে সহযোগিতা করার জন্য তিনি পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলীর সঙ্গে কথা বলেছেন বলেও জানান।

‘জিও ব্যাগ দেওয়ার বিষয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ড আশ্বস্ত করেছে’ যোগ করেন তিনি। বলেন, ‘সরকারি বরাদ্দের অপেক্ষা না করে স্থানীয়রা নিজ উদ্যোগে ভাঙন ঠেকানোর চেষ্টা করেছেন তা সত্যিই আমাদের আরও বেশি স্বাবলম্বী হতে অনুপ্রেরণা যোগাবে।’

Comments

The Daily Star  | English

Political parties want road map to polls

Leaders of major political parties yesterday asked Chief Adviser Professor Muhammad Yunus for a road map to the reforms and the next general election.

2h ago