বন্যা মোকাবিলার প্রস্তুতি নিচ্ছেন নদীপাড়ের মানুষ
আগস্টের শেষ নাগাদ আরও একটি ভয়াবহ বন্যা আসতে পারে এমন আগাম সতর্কবার্তায় বন্যা মোকাবিলায় আগাম প্রস্তুতি নিচ্ছেন নদীপাড়ের মানুষ। কুড়িগ্রাম ও লালমনিরহাটের ব্রহ্মপুত্র নদ, তিস্তা ও ধরলা নদীপাড়ের কয়েক লাখ মানুষ আগস্টের বন্যার ক্ষতি থেকে রক্ষা পেতে আগে থেকেই সচেতন ও সতর্ক অবস্থানে আছেন বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
কুড়িগ্রামের রৌমারী উপজেলার ব্রহ্মপুত্র নদেরপাড়ের যাদুরচর এলাকার বন্যাদুর্গত কৃষক মেরাজুল ইসলাম বলেন, ‘আগস্ট মাসের শেষ নাগাদ আরও একটি ভয়াবহ বন্যার কবলে পড়তে হবে এমন আগাম সতর্কবার্তায় আমরা বিচলিত হয়ে পড়েছি। কিন্তু, জমিতে আমন চারাসহ অন্যান্য ফসল লাগাতে বিরত থাকেনি। এবার বন্যা মোকাবিলায় আগাম প্রস্তুতি নিয়েছি। নৌকা প্রস্তুত করেছি। পানি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে দ্রুত নিরাপদ আশ্রয়ে চলে যাব।’
কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার ধরলা নদীর তীরবর্তী সারডোব এলাকার বন্যাদুর্গত কৃষক মজিদুল মুন্সি বলেন, ‘গেল বন্যায় আমাদের আগাম প্রস্তুতি না থাকায় অনেক ক্ষতি হয়েছে। ভেসে গেছে ঘরের আসবাবপত্র, হাঁস-মুরগি ও জমির ফসল কিন্তু এবার আগাম প্রস্তুতি নিয়েছি। নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র নিয়ে নিরাপদে চলে যাব।’
লালমনিরহাট সদর উপজেলার তিস্তা নদীর তীরবর্তী চর রাজপুরের বন্যাদুর্গত কৃষক অমল চন্দ্র বর্মণ বলেন, ‘আগস্ট মাসের বন্যা একটু ভয়াবহ হয়ে থাকে। এ মাসের বন্যায় ফসলের বিশেষ করে আমন ধানের ব্যাপক ক্ষতি হয়। ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করি এ মাসে যেন বন্যার মুখোমুখি হতে না হয়। যেহেতু পানি উন্নয়ন বোর্ডের আগাম সতর্কবার্তা পাওয়া গেছে সেজন্য প্রস্তুতি নিতে হচ্ছে। ইতোমধ্যে বাড়ির শিশু ও বয়স্কদের নিকট আত্মীয়স্বজনের বাড়িতে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে।’
লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলার চর গড্ডিমারী গ্রামের বন্যাদুর্গত কৃষক মিয়া কবির বলেন, ‘আমরা তিস্তা ব্যারেজের নিকটতম গ্রামের বাসিন্দা। তিস্তার পানি বাড়লে প্রথম ধাক্কা আমাদের সহ্য করতে হয়। তিস্তার পানি এখনো সাধারণ প্রবাহে চলছে, তবে পানি বাড়ার আশঙ্কা আছে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের ঘোষণা পেলেই নিরাপদে চলে যাব এবং বাড়ির প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র রক্ষা করব।’
লালমনিরহাট পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মিজানুর রহমান দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘উজানে ভারতের নদ-নদীতে পানি বৃদ্ধির খবর পেয়েছি। উজান থেকে এসব পানি নেমে বাংলাদেশের নদ-নদীতে পানি বেড়ে বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি হতে পারে। এখন পর্যন্ত নদ-নদীর পানি বিপৎসীমার নিচে আছে এবং সাধারণ প্রবাহে পানি প্রবাহিত হচ্ছে।’
Comments