নায়করাজ অভিনীত আলোচিত ১০ চলচ্চিত্র

বাংলাদেশের চলচ্চিত্রে নায়করাজ রাজ্জাক একটি অতি উজ্জ্বল নক্ষত্রের নাম। আজ এই নায়কের তৃতীয় মত্যুবার্ষিকী। ২০১৭ সালের এইদিনে পৃথিবীর মায়া ছেড়ে চলে যান বরেণ্য এই অভিনেতা।

বাংলাদেশের চলচ্চিত্রে নায়করাজ রাজ্জাক একটি অতি উজ্জ্বল নক্ষত্রের নাম। আজ এই নায়কের তৃতীয় মত্যুবার্ষিকী। ২০১৭ সালের এইদিনে পৃথিবীর মায়া ছেড়ে চলে যান বরেণ্য এই অভিনেতা।

নায়করাজকে বাদ দিয়ে বাংলা চলচ্চিত্রের ইতিহাস কল্পনা করাও অসম্ভব। দেশের চলচ্চিত্রের গভীর থেকে গভীরে তার বিস্তার। তিনি অভিনয়ের জন্য প্রথম জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পান ‘কী যে করি’ সিনেমার জন্য। এরপর আরও চার বার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছেন তিনি। ২০১১ সালে আজীবন সম্মাননা দেওয়া হয় গুণী এই অভিনেতাকে।

নায়করাজ রাজ্জাকের তৃতীয় মত্যুবার্ষিকীতে তার অভিনীত আলোচিত ১০টি চলচ্চিত্রের সারসংক্ষেপ পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হলো।

ছুটির ঘণ্টা

শিশুতোষ চলচ্চিত্র হিসেবেই সমধিক পরিচিত ‘ছুটির ঘণ্টা’। সিনেমাটি পরিচালনা করেছেন আজিজুর রহমান। ঈদের ছুটি ঘোষণার দিন স্কুলের বাথরুমে তালাবদ্ধ হয়ে আটকে পড়ে ১২ বছর বয়সের এক ছাত্র। সেখানেই দীর্ঘ ১১ দিন কাটে তার। স্বজনদের প্রতীক্ষার মধ্য দিয়ে ফুটে ওঠে করুণ চিত্র।

সিনেমাটিতে আব্বাস নামের দপ্তরির ভূমিকায় অভিনয় করে সবার মন জয় করে নেন রাজ্জাক। এতে আরও অভিনয় করেন— শাবানা, সুজাতা, শওকত আকবর, এটিএম শামসুজ্জামান ও শিশুশিল্পী সুমন। সিনেমাটি ১৯৮০ সালে মুক্তি পায়।

অনন্ত প্রেম

১৯৭৭ সালে মুক্তি পায় ‘অনন্ত প্রেম’। রাজ্জাক-ববিতা জুটির দারুণ ব্যবসা-সফল সিনেমা এটি। সঙ্গে ছিলেন আনোয়ারা, রওশন জামিল, এটিএম শামসুজ্জামান, ব্ল্যাক আনোয়ার প্রমুখ। এতে সংগীত পরিচালনা করেন আজাদ রহমান।

পরিচালক হিসেবে রাজ্জাকের প্রথম আত্মপ্রকাশ ঘটে ‘অনন্ত প্রেম’ শিরোনামের এই বিয়োগান্ত প্রেমের সিনেমাটিতে। গল্পের শেষে নায়ক-নায়িকা দুই জনই মারা যান। সীমান্ত পার হয়ে পালাতে গিয়ে গুলিবিদ্ধ হন তারা। শেষ দৃশ্যে মরতে মরতে নায়ক নায়িকাকে চুম্বন করে। ১৯৭৭ সালে বিষয়টা এত সহজ ছিল না।

বড় ভালো লোক ছিল

‘হায়রে মানুষ রঙিন ফানুশ’ কিংবা ‘তোরা দেখ দেখরে চাহিয়া’ গানগুলো যারা শুনেছেন, তারা জানেন সিনেমাটির নাম। ‘বড় ভালো লোক ছিল’ মুক্তি পায় ১৯৮২ সালে। পরিচালক মোহাম্মদ মহিউদ্দিন। এটি রাজ্জাককে অভিনেতা হিসেবে শ্রেষ্ঠত্ব এনে দেয়। পেয়েছিলেন জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার। সিনেমাটিতে তার সহশিল্পী ছিলেন প্রবীর মিত্র, অঞ্জু ঘোষ ও সাইফুদ্দিন আহমেদ।

রংবাজ

১৯৭৩ সালে জহিরুল হক পরিচালিত সিনেমার মাধ্যমে প্রযোজক হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন রাজ্জাক। সিনেমাটির ‘হই হই হই রঙিলা’, ‘সে যে কেন এলো না’ গান দুটো এখনো মানুষের মুখে মুখে ফেরে। বাংলা চলচ্চিত্রের পালাবদলে এ সিনেমাটি বিরাট ভূমিকা রাখে। রাজ্জাক তার রোমান্টিক ইমেজ ভেঙে এ সিনেমায় অ্যান্টি-হিরোর নতুন ইমেজ দাঁড় করান। সিনেমায় কবরী ছিলেন তার নায়িকা।

নীল আকাশের নিচে

নারায়ণ ঘোষ মিতা পরিচালিত ‘নীল আকাশের নিচে’ ১৯৬৯ সালে মুক্তি পায়। সিনেমাটির ‘হেসে খেলে জীবনটা’, ‘নীল আকাশের নিচে আমি’, ‘গান হয়ে এলে’ ও ‘প্রেমের নাম বেদনা’ গানগুলো অনেক শ্রোতাপ্রিয় হয়। ছবিতে প্রধান দুই চরিত্রে অভিনয় করেছেন রাজ্জাক ও কবরী। আরও আছেন— আনোয়ার হোসেন, রোজী সামাদ।

জীবন থেকে নেয়া

কালজয়ী নির্মাতা-লেখক জহির রায়হানের ‘জীবন থেকে নেয়া’ সিনেমাটি মুক্তি পায় ১৯৭০ সালে। এটা ছিল পরিচালকের শেষ সিনেমা। এতে রাজ্জাকের সঙ্গে আরও অভিনয় করেন— সুচন্দা, রোজী সামাদ, খান আতাউর রহমান, রওশন জামিল, আনোয়ার হোসেন প্রমুখ। এই সিনেমার ‘এ খাঁচা ভাঙব আমি কেমন করে’ গানটি অনেক সমাদৃত হয়েছিল।

আলোর মিছিল

নারায়ণ ঘোষ মিতা পরিচালিত ‘আলোর মিছিল’ সিনেমাটি মুক্তি পায় ১৯৭৪ সালে। এতে সংগীত পরিচালনা করেন খান আতাউর রহমান ও মোস্তাফিজুর রহমান। সিনেমাটির ‘এই পৃথিবীর পরে’ গানটি অনেক জনপ্রিয়তা পায়।

স্বরলিপি

রাজ্জাক অভিনীত ‘স্বরলিপি’ সিনেমাটি মুক্তি পায় ১৯৭০ সালে। এটি পরিচালনা করেন নজরুল ইসলাম। সিনেমার ‘গানেরই খাতায় স্বরলিপি লিখে’ গানটি অনেক শ্রোতাপ্রিয়তা পায়।

অশিক্ষিত

১৯৭৮ সালে আজিজুর রহমান পরিচালিত ‘অশিক্ষিত’ ছবিটি মুক্তি পায়। ‘মাস্টার সাব আমি নাম দস্তখত শিখতে চাই’ এ গানটি দিয়েই ছবিটি কালজয়ী হয়ে আছে। এই ছবির ‘‘ঢাকা শহর আইসা আমার আশা ফুরাইছে’গানটিও অনেক জনপ্রিয়।

আওয়ারা

কামাল আহমেদ পরিচালিত ছবি ‘আওয়ারা’ মুক্তি পায় ১৯৮৫ সালে। ত্রিভুজ প্রেমের গল্পের এই ছবিতে রাজ্জাকের লিপে ‘এই শহরে আমি যে এক আওয়ারা’ গানটি তার নামভূমিকাকে তুলে ধরে। এছাড়াও, শাবানার লিপে ‘সুর ঝরা এই আলোর মেলায়’ ছবিটির কালজয়ী গান।

Comments

The Daily Star  | English

Fashion brands face criticism for failure to protect labour rights in Bangladesh

Fashion brands, including H&M and Zara, are facing criticism over their lack of action to protect workers' basic rights in Bangladesh, according to Clean Clothes Campaign (CCC)..One year after a violent crackdown by state actors and employers against Bangladeshi garment workers protesting

5m ago