রোহিঙ্গা সমস্যার স্থায়ী সমাধানের আহ্বান জাতিসংঘ শরণার্থী সংস্থার
বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া মিয়ানমারের বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের জন্য নতুন করে সহযোগিতা ও এ সমস্যার স্থায়ী সমাধানের আহ্বান জানিয়েছে জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা (ইউএনএইচসিআর)।
আজ শুক্রবার জেনেভাতে এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে ইউএনএইচসিআরের মুখপাত্র আন্দ্রেজ মাহেসিক এ আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, 'রোহিঙ্গা এবং হোস্ট কমিউনিটির জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সহযোগিতা পেলেই কেবল চলবে না। এ সমস্যা সমাধানে আরও গভীরভাবে কাজ করতে হবে।’
কোভিড-১৯ মহামারি রোহিঙ্গা সমস্যাকে আরও জটিল করে তুলেছে উল্লেখ করে ইউএনএইচসিআর জানায়, ২০১৭ সালের আগস্টে মিয়ানমার ছেড়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়ার তিন বছর পেরিয়ে গেলেও রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর সমস্যাগুলো এখনও থেকে গেছে।
রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর প্রায় এক-চতুর্থাংশ বর্তমানে মিয়ানমারের বাইরে আছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ইউএনএইচসিআর ও বাংলাদেশ আলাদাভাবে কক্সবাজারের শরণার্থী শিবিরে আট লাখ 8০ হাজারেরও বেশি রোহিঙ্গাকে নিবন্ধন করেছে।
ইউএনএইচসিআর মুখপাত্র আন্দ্রেজ বলেন, ‘বাংলাদেশ রোহিঙ্গা শরণার্থীদের প্রতি গভীর মানবিক সহযোগিতা দেখিয়েছে। তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করাসহ এশীয়-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে নিবন্ধিত দশজন রোহিঙ্গার মধ্যে নয় জনকে আশ্রয় দিয়েছে বাংলাদেশ।’
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের এই উদারতাকে স্বীকার করে নিতে রোহিঙ্গা শরণার্থী ও বাংলাদেশি হোস্ট কমিউনিটির জন্য সহযোগিতা অব্যাহত রাখতে হবে।’
রোহিঙ্গাদের এ দুর্দশার সমাধান মিয়ানমারে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘রাখাইন রাজ্য সম্পর্কিত উপদেষ্টা কমিশনের সুপারিশগুলো বাস্তবায়নে মিয়ানমার সরকার যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল তার মাধ্যমেই এ সমস্যার সমাধান করতে হবে।’
সংবাদ ব্রিফিংয়ে তিনি বলেন, ‘রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর নিরাপদ ও স্থায়ী প্রত্যাবর্তনের জন্য উপযুক্ত পরিবেশ তৈরি করতে মিয়ানমার কর্তৃপক্ষ ও রোহিঙ্গা শরণার্থীদের মধ্যকার সংলাপ পুনরায় শুরু করার পাশাপাশি তাদের মধ্যে আস্থা বৃদ্ধি করে এমন উদ্যোগ নেওয়া প্রয়োজন।’
তিনি আরও বলেন, 'এর মধ্যে আছে- রোহিঙ্গাদের চলাচলের স্বাধীনতার উপর নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার, অভ্যন্তরীণ বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের তাদের নিজ গ্রামে ফিরে যাওয়া নিশ্চিত করা এবং তাদের সে দেশের নাগরিকত্ব নিশ্চিত করার বিষয়ে সুষ্ঠু ব্যবস্থা নেওয়া।’
আন্দ্রেজ বলেন, ‘মিয়ানমারের বাইরে রোহিঙ্গাদের মর্যাদা ও মঙ্গল নিশ্চিত করার জন্যই শুধু নয় বরং তাদের প্রত্যাশা রক্ষা করা এবং তাদের সুন্দর ভবিষ্যতের লক্ষ্যে সম্মিলিত উদ্যোগ নিতে হবে।’
Comments