১৫ আগস্ট হত্যাযজ্ঞের ‘আসল খলনায়ক’ জিয়া: প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে ঢাকায় আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন। ছবি: পিআইডি

জিয়াউর রহমানকে ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট হত্যাযজ্ঞের ‘আসল খলনায়ক’ অভিহিত করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, এই কলঙ্কজনক অধ্যায়ের কয়েক বছর পর একইভাবে তার স্ত্রী খালেদা জিয়া ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট ভয়াবহ গ্রেনেড হামলার মতো আরেকটি নারকীয় হত্যাযজ্ঞে একই চরিত্রে আবির্ভূত হয়।

ঘটনা দুটি তুলনা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রথম ঘটনায় বাংলাদেশের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে তার পরিবারের অধিকাংশ সদস্যসহ হত্যা করা হয়। দ্বিতীয় হত্যা পরিকল্পনার লক্ষ্য ছিল আমিসহ আওয়ামী লীগের জ্যেষ্ঠ নেতৃবৃন্দ।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু হত্যার পিছনে আসল খলনায়ক ছিলেন জিয়াউর রহমান।’

জাতির পিতার ৪৫তম শাহাদাৎ বার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে এক ভার্চুয়াল আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন। আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে (আইএমএলআই) বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটি এই আলোচনা সভার আয়োজন করে। প্রধানমন্ত্রী গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এতে অংশ নেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই কলঙ্কজনক ঘটনার সবচেয়ে সুফল ভোগকারী ছিলেন জিয়া। বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর পরই তিনি সেনা প্রধান ও খন্দকার মোস্তাক আহমেদের উচ্ছেদের পরই তিনি রাষ্ট্রপতি হন। দণ্ডপ্রাপ্ত খুনি ফারুক ও রশিদ বিবিসিকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এই ষড়যন্ত্রে জিয়ার সম্পৃক্ততার কথা স্বীকার করেছে।

‘জিয়া, রশিদ, ফারুক, ডালিম ও অন্যান্যদের সহায়তায় জাতির পিতাকে হত্যার পর পরই খন্দকার মোস্তাক স্বঘোষিত রাষ্ট্রপতি হয়ে জিয়াকে সেনাপ্রধান হিসেবে নিয়োগ দেন।’

হাসিনা আরও বলেন, ‘জিয়াকে সেনা প্রধান হিসেবে মোস্তাকের নিয়োগ ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট হত্যাকাণ্ডে জিয়ার সম্পৃক্ততার আরেকটি প্রমাণ।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, স্বামীর পদাঙ্ক অনুসরণ করে আওয়ামী লীগকে নেতৃত্বশূন্য করতে খালেদা জিয়া ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসবাদবিরোধী শান্তি সমাবেশে ভয়াবহ ও বর্বরোচিত গ্রেনেড হামলা ঘটায়।

তিনি বলেন, হত্যাকারীরা বঙ্গবন্ধুর বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালিয়েও তাকে জনবিচ্ছিন্ন করতে ব্যর্থ হয়ে হত্যা করে।

বঙ্গবন্ধুর জ্যেষ্ঠকন্যা শেখ হাসিনা বলেন, ‘এই নৃশংস ও ঘৃণ্য অপরাধের প্রধান লক্ষ্য ছিল বাংলাদেশ যে জন্য স্বাধীন হয়েছে, তা নস্যাৎ করে দেয়া।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, খুনী ফারুক ও রশীদ বিবিসিকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন যে, তারা বঙ্গবন্ধুকে জনবিচ্ছিন্ন করতে চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু এতে ব্যর্থ হয়ে তারা তাকে হত্যা করেন।

অনুষ্ঠানে আইএমএলআই থেকে বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী আমির হোসেন আমু, এমপি, আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক এবং প্রখ্যাত ইতিহাসবিদ আবু মো. দেলোয়ার হোসেন।

বঙ্গবন্ধুর জন্ম শতবার্ষিকী উদযাপন বাস্তবায়ন বিষয়ক জাতীয় কমিটির চেয়ারম্যান জাতীয় অধ্যাপক ড. রফিকুল ইসলাম অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণকারীদের ধন্যবাদ জানান।

সাবেক সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর এমপি বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে রচিত একটি কবিতা আবৃত্তি করেন। বঙ্গবন্ধুর জন্ম শতবার্ষিকী উদযাপন বাস্তবায়ন বিষয়ক জাতীয় কমিটির প্রধান সমন্বয়ক ড. কামাল আব্দুল নাসের চৌধুরী স্বাগত বক্তব্য রাখেন।

অনুষ্ঠানে বঙ্গবন্ধুর জীবন ও কর্মের উপর একটি প্রামাণ্য চিত্র প্রদশিত হয়।

Comments

The Daily Star  | English

Israel will take all of Gaza: PM

Strikes kill 52 more; WHO chief says 2 million 'starving'

7h ago