রাবির সংগীত প্রশিক্ষকের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের এক সংগীত প্রশিক্ষকের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। গতকাল শনিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক এম আব্দুস সোবহান বরাবর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ছাত্র সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের সংগীত প্রশিক্ষক রকিবুল হাসান রবিনের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ আনেন এক নারী।

লিখিত ওই অভিযোগে তিনি জানান, ১০ বছর আগে শৈশবে তিনি একাধিকবার ধর্ষণের শিকার হন।   

উপাচার্যের কার্যালয়ে অভিযোগ গৃহিত হয়েছে এমন একটি অনুলিপি দ্য ডেইলি স্টারের কাছে এসেছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের এক কর্মকর্তা অভিযোগ পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
অভিযোগে ওই নারী জানান, ২০১০ সালে তিনি শিশু সাংস্কৃতিক কর্মী ছিলেন। রাজশাহীর বাইরে একটি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে রবিনের সঙ্গে যান তিনি। সেখানে বাবা-মা না থাকার সুযোগে তাকে ধর্ষণ করা হয়। পরে বাড়িতে বিভিন্ন সময়ে বাবা-মায়ের অনুপস্থিতিতে ভয় দেখিয়ে ধর্ষণ করেন রবিন।

‘আমার ন্যায়-অন্যায় বোঝার জ্ঞান যেমন ছিল না, তেমনি নিজের কথা অকপটে বলার সাহসও ছিল না। কোন সামাজিক সমর্থন না পাওয়ার ভয়ে আমি চুপ করে ছিলাম। তবে এই ঘটনার প্রেক্ষিতে আমার মানসিক বিপর্যয়ের সাথে সাথে আমার পড়াশোনা, সামাজিক ক্রিয়াকলাপ ভয়াবহভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এখনও সেই ঘটনার স্মৃতি আমাকে কঠোর যন্ত্রণা দেয়,’ অভিযোগে জানান ওই নারী।

তিনি জানান, পড়াশোনার জন্য দেশের বাইরে চলে গিয়েছিলেন তিনি। করোনা পরিস্থিতির সময় দেশে ফিরেছেন। এখানে এসে জানতে পারেন, আরও অনেকেই রবিনের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ তুলেছেন। তাদের অনেকেই হ্যাশট্যাগ মি টু এর আওতায় সোশ্যাল মিডিয়ায় তাদের অভিজ্ঞতা শেয়ার করেছেন।
‘এই মেয়েদের অভিজ্ঞতা শুনে আমার ট্রমা ফিরে এসেছে এবং আমি কথা বলার সাহস দেখানোর জন্য তৈরি হয়েছি’ তিনি অভিযোগে লিখেছেন।
‘এই জাতীয় ঘটনাগুলি সমাজ, সংস্কৃতি, পৃথিবী দূষিত করছে এবং মেয়েদের জন্য পরিবেশকে অনিরাপদ করে তুলছে,’ বলেন এই নারী।
মেয়ের অভিযোগে, বাবা-মাও যৌথভাবে সই করেছেন। তারা লিখেছেন যে তারা তাদের মেয়ের মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে উদ্বিগ্ন।
‘আমরা এজন্যেও উদ্বিগ্ন যে ধর্ষকের মতো একজন লোক বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদে অধিষ্ঠিত, সে আরও ক্ষতি করতে পারে। আমরা তার দ্রুত বিচার চাই,’ যৌথভাবে লিখেছেন তারা।
অভিযোগকারী নারীর বাবা দ্য ডেইলি স্টারকে জানান, তারা শৈশবের এই ধর্ষণ সম্পর্কে কিছুই জানতেন না।
‘তবে আমরা লক্ষ্য করেছিলাম যে সে পড়াশোনার প্রতি মনোযোগ হারাচ্ছে এবং সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে অংশ নেয়া বন্ধ করে দিয়েছে। মহামারি চলাকালীন সে বিদেশ থেকে দেশে ফিরে এসে তার জীবনের এই দুঃসহ অভিজ্ঞতার কথা মনে করে অসুস্থ হয়ে পড়ার পরেই আমরা জানতে পেরেছি এবং আমার মেয়ে যাতে বিচার পায় সেজন্য তাকে সাহায্য করছি।’

অভিযোগকারী ওই নারী জানিয়েছেন রবিনের বিরুদ্ধে মামলা করার বিষয়ে বিবেচনা করছেন তিনি।

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন শিক্ষক জানিয়েছেন, যৌন হয়রানির অভিযোগ বিবেচনা করার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি স্থায়ী কমিটি রয়েছে। রাবি যৌন হয়রানি প্রতিরোধ কমিটি সাধারণত তদন্ত করে অভিযোগগুলির বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করে।
দ্য ডেইলি স্টার মুঠোফোনে রাকিবুল হাসান রবিনের সাথে বারবার যোগাযোগের চেষ্টা করলেও তার ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।

Comments

The Daily Star  | English

BGMEA wants 3-month window from India to clear pending shipments

The association urges the interim government to send a letter to India seeking the opportunity

5h ago