পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জে অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপনের প্রক্রিয়া শুরু

১০ হাজার নারী-পুরুষের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টির সম্ভাবনা
চুক্তি স্বাক্ষর ও দলিল সম্পাদন অনুষ্ঠান। ছবি: স্টার

পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জ উপজেলায় অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তোলার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। উপজেলার দেবীগঞ্জ, দেবীডুবা ও সোনাহার ইউনিয়নে প্রস্তাবিত ৬০২ দশমিক ৪২ একর জমিতে এটি গড়ে তোলার পরে প্রায় ১০ হাজার দক্ষ-অদক্ষ নারী-পুরুষের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে বলে মনে করছে অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষ।

এরই অংশ হিসেবে বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষ (বেজা) বরাবর খাসজমি বরাদ্দের নিমিত্তে চুক্তি স্বাক্ষর ও দলিল সম্পাদন করা হয়েছে।

এ উপলক্ষ্যে গতকাল সোমবার জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে এক অনুষ্ঠানে জেলা প্রশাসনের পক্ষে জেলা প্রশাসক সাবিনা ইয়াসমিন ও বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষের (বেজা) পক্ষে সহকারী ব্যবস্থাপক একেএম আনোয়ার দলিলে সই করেন।

জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, দেবীগঞ্জে অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তোলার লক্ষ্যে উপজেলার দেবীগঞ্জ, দেবীডুবা ও সোনাহার ইউনিয়নে প্রস্তাবিত ৬০২ দশমিক ৪২ একর জমির মধ্যে উপজেলার প্রধানপুর, দেবীডুবা ও দাড়ারহাট মৌজার ২১৭ দশমিক ৭৮ একর খাস জমি হস্তান্তরের লক্ষ্যে দলিল সম্পাদন করা হয়েছে।

বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষের (বেজা) সহকারী ব্যবস্থাপক একেএম আনোয়ার জানান, ২০৩০ সালের মধ্যে সারাদেশে ১০০টি অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠার কাজ চলছে। এসব অঞ্চলে দেশি-বিদেশি উদ্যোক্তারা ৪০ বিলিয়ন ডলার বিনিযোগ করবে বলে আশা করা হচ্ছে।

এরই অংশ হিসেবে পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জ উপজেলায় ৬০২ দশমিক ৪২ একর জমির ওপর ৩ দশমিক ৩৫ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে গড়ে তোলা হবে অর্থনৈতিক অঞ্চল।

একেএম আনোয়ার বলেন, ‘দেবীগঞ্জে অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠার জন্য প্রাথমিকভাবে ২১৭ দশমিক ৭৮ একর সরকারি খাস জমি গ্রহণ করা হয়েছে। এখনও অনেক জমি অধিগ্রহণ বাকি আছে। পুরো জমিটা কেনা হলে সেখানে মাটি ভরাটসহ বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হবে। জনশক্তি, কাঁচামাল ও পরিবেশের ওপর নির্ভর করে সেখানে কী ধরনের শিল্প-কারখানা করলে বিনিয়োগকারীরা লাভবান হবেন, সে বিষয়ে জরিপ করা হবে। তারপর বিনিয়োগকারীদের জন্য প্লট তৈরি করা হবে।’

দেবীগঞ্জের এই অর্থনৈতিক অঞ্চলে প্রায় ১০ হাজার দক্ষ-অদক্ষ নারী পুরুষের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে। এসব অর্থনৈতিক অঞ্চলে কৃষিপণ্য প্রক্রিয়াজাত করে উৎপাদিত পণ্য রপ্তানি করা হবে। এতে এই অঞ্চলে উৎপাদিত কৃষি পণ্যের যথাযথ ব্যবহার হবে এবং কৃষকের পণ্যের নায্যমূল্য নিশ্চিত হবে। এ উপলক্ষ্যে জেলা প্রশাসকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় রেলপথমন্ত্রী আডভোকেট নূরুল ইসলাম সুজন ঢাকা থেকে ভার্চুয়ালি প্রধান অতিথি হিসেবে অনুষ্ঠানে সংযুক্ত হন।

বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ছিলেন পঞ্চগড়-১ আসনের সংসদ সদস্য মো. মজাহারুল হক প্রধান। এ ছাড়াও, করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য পঞ্চগড় জেলার সমন্বয়কারী হিসেবে দায়িত্বপ্রাপ্ত ভূমিসচিব মাকছুদুর রহমান পাটওয়ারী, বিভাগীয় কমিশনার আবদুল ওয়াহাব ভূঁইয়া ভার্চুয়ালি সভায় সংযুক্ত ছিলেন।

রেলমন্ত্রী বলেন, ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্ন ছিল ক্ষুধা ও দারিদ্রমুক্ত বাংলাদেশ গড়ে তোলা। কিন্তু, তাকে হত্যার পর সেই স্বপ্ন বাধাগ্রস্ত হয়েছে। বর্তমানে তারই কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশ আবার ঘুরে দাঁড়িয়েছে। আমরা সেই স্বপ্ন বাস্তবায়নে এগিয়ে যাচ্ছি।’

তিনি বলেন, ‘কৃষিতে এগিয়ে থাকা দেশকে এখন শিল্প বিপ্লবের দিকে এগিয়ে নিতে সরকার সারাদেশে অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তোলার উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। এতে কর্মসংস্থানের পাশাপাশি স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত বিভিন্ন পণ্যের চাহিদাও বাড়বে। ফলে স্থানীয় অর্থনীতির চাকা গতিশীল হবে।’

‘এর মাধ্যমে তরুণ প্রজন্ম চাকরি-নির্ভর না হয়ে উদ্যোক্তা হিসেবে আত্মপ্রকাশ করার সুযোগ পাবে’, বলেন মন্ত্রী।

Comments

The Daily Star  | English

Smaller in size, larger in intent

Finance Adviser Salehuddin Ahmed has offered both empathy and arithmetic in his budget speech, laying out a vision that puts people, not just projects, at the heart of economic policy.

9h ago