যশোরের ভবদহ অঞ্চলের জলাবদ্ধতা এখন ১০ লাখ মানুষের দুঃখ

যশোরের ভবদহ অঞ্চলের জলাবদ্ধতা এখন ১০ লাখ মানুষের দুঃখে পরিণত হয়েছে। ভবদহ অঞ্চলের মানুষের পিছু ছাড়ছে না দীর্ঘদিনের জলাবদ্ধতা। এর মধ্যেই হঠাৎ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে জলাবদ্ধতা নিরসনে তৈরি বিল খুকশিয়ার জোয়ারাধার (টিআরএম)।
ছবি: সংগৃহীত

যশোরের ভবদহ অঞ্চলের জলাবদ্ধতা এখন ১০ লাখ মানুষের দুঃখে পরিণত হয়েছে। ভবদহ অঞ্চলের মানুষের পিছু ছাড়ছে না দীর্ঘদিনের জলাবদ্ধতা। এর মধ্যেই হঠাৎ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে জলাবদ্ধতা নিরসনে তৈরি বিল খুকশিয়ার জোয়ারাধার (টিআরএম)।

বর্তমানে জোয়ারের সঙ্গে আসা পলি জমে ভরাট হয়ে যাচ্ছে পানি নিষ্কাশনের একমাত্র মাধ্যম শ্রীহরি ও টেকা নদী। ফলে, প্রতি বছর ভবদহে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হচ্ছে। জোয়ারাধার চালু না হাওয়ার কারণে চলতি বর্ষা মৌসুমে পলি জমে নদীর তলদেশ উঁচু হয়ে গেছে।

বৃষ্টির পানি জমে বালিধা, পাঁচাকড়ি, বাজেকুলটিয়া, মশিয়াহাটি, হাটগাছা, সুজাতপুর, ডুমরতলা, লখাইডাঙ্গা ও কপালিয়াসহ কয়েকটি গ্রাম জলাবদ্ধতার কবলে পড়েছে। গ্রামের অধিকাংশ মানুষের বাড়িতে পানি ঢুকে পড়েছে।

ভবদহ স্লুইসগেট দিয়ে ২৭টি বিলের পানি পার হয়। কিন্তু, কারণে অকারণে এ সুইচ গেটটি আজ মরণ ফাঁদ হয়ে দাঁড়িয়েছে ভবদহবাসীর কাছে। নদীর তলদেশ উঁচু হয়ে যাওয়ায় বিলের পানি নামতে পারছে না।

জানা গেছে, যশোর ও খুলনার ৩৩০ বর্গকিলোমিটার এলাকার ১০ লাখ মানুষের দুঃখ-দুর্দশার নাম ভবদহ। এ সমস্যা সমাধানের নামে বহু প্রজেক্ট গ্রহণ করা হলেও তেমন কোনো ফল পাওয়া যায়নি। বর্তমানে ভবদহ স্লুইসগেটের ২১ কপাটের মধ্যে ১৮টি কপাট পলি জমে বন্ধ হয়ে গেছে। স্থানীয়দের ধারণা, দ্রুত সংস্কার করা না হলে প্রতিবারের মতো এবারের বর্ষায় ভবদহ অঞ্চল তলিয়ে যাবে।

পলি পড়ে এই অঞ্চলের মুক্তেশ্বরী, টেকা, শ্রী ও হরি নদী নাব্যতা হারিয়েছে। জোয়ারের সময় হাঁটুপানি হলেও ভাটার সময় পুরোটাই শুকিয়ে যায়। এ কারণে এলাকাবাসীকে আবারও ভয়াবহ বন্যার সম্মুখীন হতে হচ্ছে। এ ছাড়া, অতিরিক্ত বর্ষায় এ অঞ্চলের তিনটি উপজেলার ১০ লক্ষাধিক মানুষ জলাবদ্ধতার মধ্যে পড়ছে।

ভবদহ পানি নিষ্কাশন সংগ্রাম কমিটির সমন্বয়ক কানু বিশ্বাস বলেন, 'জলাবদ্ধতা পরিস্থিতি আস্তে আস্তে ভয়াবহ রূপ নিতে চলেছে। বাড়িতে পানি উঠে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হওয়ায় মানুষের দুর্ভোগের শেষ নেই।'

ভবদহ পানি নিষ্কাশন সংগ্রাম কমিটির আহবায়ক রণজিত বাওয়ালী বলেন, 'ভবদহকে নিয়ে একটি মহল টিআরএম সিস্টেম বন্ধ করে দিয়েছে। এটি চালু না করতে পারলে আমরা প্রতি বছর স্থায়ী জলাবদ্ধতার শিকার হব। তাই জলাবদ্ধতার হাত থেকে আমাদের বাঁচার একমাত্র উপায় টিআরএম ব্যবস্থা।'

পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্য এমপি গত ১২ আগস্ট অভয়নগরে ভবদহের স্লুইসগেট ২১ ভেন্ট চত্বরে জলাবদ্ধতা নিরসন শীর্ষক এক মতবিনিময় সভায় বলেন, 'ভবদহের জলাবদ্ধতা নিরসনে ইতোপূর্বে নানা প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে। কিন্তু, তা কোন কাজে আসেনি, নদী পরিণত হয়েছে খালে। ফলে, হালকা বৃষ্টিতেই সৃষ্টি হচ্ছে জলাবদ্ধতা। তাই জলাবদ্ধতা নিরসনে টিআরএম প্রকল্পের বিকল্প নেই।'

Comments

The Daily Star  | English

Floods cause Tk 14,421 crore damage in eastern Bangladesh: CPD study

The study highlighted that the damage represents 1.81 percent of the national budget for fiscal year (FY) 2024-25

2h ago