পটুয়াখালী

জোয়ার ও টানা বৃষ্টিতে প্রায় ৬৫ হাজার হেক্টর ফসলের খেত পানির নিচে

গত ৭ দিনে পটুয়াখালী কৃষি বিভাগ প্রায় ২০০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করেছে। ছবি: সোহরাব হোসেন

জোয়ার ও টানা বৃষ্টিতে পটুয়াখালীর প্রায় ৬৫ হাজার হেক্টর ফসলের ক্ষেত পানির নিচে। গত বুধবার থেকে মঙ্গলবার পর্যন্ত ৭ দিনে জেলায় প্রায় ২০০ মিলি বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে।

পটুয়াখালী কৃষি সম্প্রসারণ অফিস সূত্র জানায়, জেলায় মোট ১ লাখ ৪৭ হাজার ৩৫৩ হেক্টর জমিতে আউশ, আমনসহ গ্রীষ্মকালীন শাক-সবজীর আবাদ হয়েছে। গত বুধবার থেকে গতকাল পর্যন্ত এই চারদিনের প্রবল বর্ষণ ও উচ্চ জোয়ারের পানিতে ৬৪ হাজার ৭৮৩ হেক্টর খেত ডুবে আছে। জেলায় রোপা আমনের চাষ হয়েছে ৮৯ হাজার ৭০০ হেক্টর জমিতে। এর মধ্যে ডুবে গেছে ৩২ হাজার ১৫ হেক্টর। উচ্চফলনশীল ও স্থানীয় জাতের আউশের আবাদ হয়েছে ৩৮ হাজার ৩৬০ হেক্টর জমিতে। এর মধ্যে ডুবে গেছে ২৪ হাজার ৯১৮ হেক্টর। গ্রীষ্মকালীন শাক-সবজী, পেঁপে ও পানের আবাদ হয়েছে ৩ হাজার ১৭৫ হেক্টর জমিতে। তার মধ্যে ডুবে গেছে ২ হাজার ৬৩০ হেক্টর।

গত ৭ দিনে কৃষি বিভাগ প্রায় ২০০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করেছে।

পানি উন্নয়ন বোর্ড পটুয়াখালী কার্যালয় সূত্র জানায়, অমাবস্যার প্রভাবে গত চারদিন ধরে জোয়ারের সময় পানির উচ্চতা বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে।

রাঙ্গাবালী সদর ইউনিয়নের কাজীর হাওলা গ্রামের কৃষক আ. মান্নান (৩৫) বলেন, ‘আমি এ বছর ১৫ একর জমিতে আমনের আবাদ করেছি। রোপা আমন খেত গত চারদিন ধরে বৃষ্টি ও জোয়ারের পানিতে ডুবে আছে। জোয়ারের চাপ কমলেও প্রতিদিনই বৃষ্টি হচ্ছে, তাই পানি কমছে না। দীর্ঘদিন অবস্থা থাকলে রোপা আমন নষ্ট হয়ে যাবে। নতুন করে আবার বীজ সংগ্রহ করে আবাদ করতে হবে।’

পটুয়াখালীর সদর উপজেলার লাউকাঠি ইউনিয়নের কিসমত মৌকরন গ্রামের কৃষক রফিকুল ইসলাম (৪০) বলেন, ‘প্রতিবছরের মতো এবার ৪০ শতাংশ খেতে গ্রীষ্মকালীন শাক-সবজীর আবাদ করেছি। দুইদিন ধরে খেত থেকে ফসল তুলে বাজারে বিক্রি করতে শুরু করেছি। ঠিক তখন জোয়ার ও প্রবল বৃষ্টিপাতে পুরো খেত পানিতে তলিয়ে গেছে। এ অবস্থায় খেতের ফসল পচতে শুরু করেছে।’

একই গ্রামের রফিকুল বলেন, ‘এ বছর আমি ৪০ শতাংশ জমিতে পুঁইশাক, চুনা কুমার, করলা, সিম ও বরবটির আবাদ করেছি। এতে প্রায় ২০ হাজার টাকার মতো খরচ হয়েছে। মাত্র ক্ষেত থেকে ফসল তুলে বাজারে বিক্রি করতে শুরু করেছে, এর মধ্যে জোয়ারের পানি ও টানা বৃষ্টিতে খেত তলিয়ে গেছে।’

রাঙ্গাবালী উপজেলার উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা মো. জুয়েল বলেন, ‘কৃষি বিভাগ থেকে কৃষকদের খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে। খেত থেকে পানি সরানোর পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।’

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক হৃদয়েশ্বর দত্ত বলেন, ‘অমাবস্যা ও মৗসুমি বায়ুর প্রভাবে জোয়ারের পানি ও অতিরিক্ত বৃষ্টিপাতে ফসলের খেত প্লাবিত হয়েছে। রোপা আমন ক্ষতি হলে কৃষক নতুন করে আবাদ করে পুষিয়ে নিতে পারবে। তরে গ্রীষ্মকালীন শাক-সবজির ক্ষতির আশঙ্কা আছে। অতিরিক্ত বৃষ্টি ও জোয়ারের পানি নেমে গেলে প্রকৃত ক্ষয়ক্ষতি পরিমাপ করা যাবে।’

Comments

The Daily Star  | English

Abdul Hamid returns home after treatment in Thailand

Two police officials were withdrawn and two others suspended for negligence in duty regarding the former president's departure from the country

5h ago