ক্রসফায়ারের ভয় দেখিয়ে টাকা আদায়, লিয়াকতসহ ৭ জনের বিরুদ্ধে মামলা

ক্রসফায়ারের ভয় দেখিয়ে ব্যবসায়ীর কাছ থেকে টাকা আদায় ও পরে মিথ্যা মামলায় ফাঁসানোর অভিযোগে বাহারছড়া তদন্ত কেন্দ্রের বরখাস্তকৃত পুলিশ পরিদর্শক ও মেজর (অব.) সিনহা মো. রাশেদ হত্যা মামলার আসামি লিয়াকত আলীসহ সাত জনের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা হয়েছে।
বরখাস্তকৃত পুলিশ পরিদর্শক লিয়াকত আলী। ছবি: সংগৃহীত

ক্রসফায়ারের ভয় দেখিয়ে ব্যবসায়ীর কাছ থেকে টাকা আদায় ও পরে মিথ্যা মামলায় ফাঁসানোর অভিযোগে বাহারছড়া তদন্ত কেন্দ্রের বরখাস্তকৃত পুলিশ পরিদর্শক ও মেজর (অব.) সিনহা মো. রাশেদ হত্যা মামলার আসামি লিয়াকত আলীসহ সাত জনের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা হয়েছে। 

বুধবার চট্টগ্রামের মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আবু সালেম মো. নোমানের আদালতে লিয়াকত ও নয় পুলিশ সদস্যসহ ১৩ জনের বিরুদ্ধে নালিশি অভিযোগটি করেন চট্টগ্রামের ব্যবসায়ী জসিম উদ্দীন।

এরমধ্যে লিয়াকত ও অন্য দুই পুলিশ সদস্যসহ সাত জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।

২০১৪ সালে লিয়াকত যখন চট্টগ্রাম ডিবিতে এসআই হিসেবে কর্মরত ছিলেন সেই সময়ের ঘটনায় এই মামলা করা হয়।

বাদীর আইনজীবী জুয়েল দাশ দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘১৩ জনের বিরুদ্ধে নালিশি অভিযোগ করেছি আমরা।’

‘আদালত লিয়াকতসহ সাত জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ আমলে নিয়ে চট্টগ্রাম নগর পুলিশ (সিএমপি) এর গোয়েন্দা বিভাগের উপকমিশনার (উত্তর) কে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন,’ বলেন জুয়েল।

২০১৪ সালের ১৪ জুন এই ঘটনা ঘটে বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয় বলেন এই আইনজীবি।

সিনহা হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে বর্তমানে কারাগারে আছেন লিয়াকত।

যে সাতজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ তদন্তের নির্দেশ দেয়া হয়েছে তাদের মধ্যে লিয়াকত ছাড়া বাকিরা হলেন- কুমিল্লার দাউদকান্দি থানার তৎকালীন দুই এসআই নজরুল ও হান্নান, বাদীর ব্যবসায়িক প্রতিদ্বন্দ্বী বিষ্ণুপদ পালিত, কাজল কান্তি বৈদ্য, এস এম সাহাবুদ্দীন ও জিয়াউর রহমান।

অন্য যে ছয়জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয় তারা হলেন- সিএমপির ডিবির সেসময়ের এসআই সন্তোষ কুমার, এসআই কামরুল, সেসময়ে সদরঘাট থানার এসআই তালাত মাহমুদ, সদরঘাট থানার সাবেক ওসি প্রণব চৌধুরী (বর্তমানে খুলশী থানার ওসি), দাউদকান্দি থানার সাবেক মর্জিনা বেগম (বর্তমানে উখিয়া থানার ওসি) এবং গোয়েন্দা পুলিশের সেসময়ের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার বাবুল আক্তার।

জসিম উদ্দীন বলেন, ‘আমরা প্রতিষ্ঠানে চুরি ও লুটের ঘটনায় আদালতে একটি নালিশি মামলা করেছিলাম। সেই মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) ছিলেন এসআই লিয়াকত আলী। ওই মামলার তদন্তের জন্য আমার কাছ থেকে এসআই লিয়াকত ৫০ হাজার টাকা নিয়েছিল।’

‘মামলাটির জন্য ২০১৪ সালের ১৪ জুন সকালে আমাকে ডিবি অফিসে ডাকা হয়। সেখানে গেলে তারা আমাকে আপস করার প্রস্তাব দেয়। রাজি না হওয়ায় উল্টো আমার থেকে পাঁচ লাখ টাকা দাবি করে। দিতে না চাওয়ায় শারীরিক নির্যাতন করে।’

সেদিনের ঘটনার বর্ণনা দিয়ে জসিম উদ্দীন বলেন, ‘এরপর পতেঙ্গা থানায় নিয়ে আমাকে আটকে রাখে। দাউদকান্দি থানার একটি নারী নির্যাতন মামলার ভুয়া ওয়ারেন্ট দেখিয়ে আটকে রাখা হয়। আমার ব্যবসায়ী প্রতিদ্বন্দ্বী সাহাবুদ্দীনের আত্মীয় সেই মামলার বাদী।’

‘পতেঙ্গা থানার ওসি যাচাই করে জানতে পারেন যে ওই মামলায় আমার নামে কোনো ওয়ারেন্ট নেই। তারপর তিনি আমাকে ছেড়ে দিলে বিকেল ৪টায় থানার কম্পাউন্ড থেকেই এসআই লিয়াকত আমাকে আবার আটক করেন। তখন বলে পাঁচ লাখ টাকা না দিলে ক্রসফায়ারে দেবেন।’

জসিম বলেন, ‘আমি দুই লাখ টাকা দেওয়ার পরেও আমাকে ছাড়া হয়নি। সদরঘাট থানায় আমার সাহাবুদ্দীনের করা একটি চাঁদাবাজির মামলায় আমাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়।’

‘সেখানে আটকে রেখে নির্যাতন করে পরদিন আদালতে হাজির করা হয়। ১৯ দিন পর জেল হাজত থেকে জামিনে বের হই,’ বলেন জসিম।

মামলায় বাদীসহ ৯ জনকে সাক্ষী করা হয়েছে।

Comments

The Daily Star  | English

One month of interim govt: Yunus navigating thru high hopes

A month ago, as Bangladesh teetered on the brink of chaos after the downfall of Sheikh Hasina, Nobel Laureate Muhammad Yunus returned home to steer the nation through political turbulences.

2h ago