ওসি প্রদীপসহ ১২ জনের বিরুদ্ধে অটো চালককে সাত মাস আটকে রেখে হত্যার অভিযোগ

কক্সবাজার আদালতে আরও একটি এজাহার দাখিল
প্রদীপ কুমার দাশ। ছবি: সংগৃহীত

টেকনাফ থানার বরখাস্তকৃত ওসি প্রদীপ কুমার দাসসহ ১২ জনের বিরুদ্ধে সাত মাস আটকে রেখে এক অটোরিকশা চালককে হত্যার অভিযোগে আরও একটি এজাহার দাখির করা হয়েছে কক্সবাজার আদালতে।

টেকনাফের হোয়াইক্যং ইউনিয়নের পশ্চিম মহেষখালিয়া পাড়ার আবদুল জলিল (প্রকাশ গুরা পুতুইক্যা) নামে এক অটোরিকশা চালককে সাত মাস আটক রাখার পরে চাহিদা মতো চাঁদা না পাওয়ায় গুলি করে হত্যার অভিযোগ আনা হয়েছে তাদের বিরুদ্ধে।

আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে কক্সবাজার আদালতে নিহত আবদুল জলিলের স্ত্রী ছেনুয়ারা বেগম (২৪) বাদী হয়ে এজাহারটি দাখিল করেন।

জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম আমলী আদালত-৩ (টেকনাফ) এর বিচারক মোহা. হেলাল উদ্দীন এজাহারটি আমলে নেন। এই হত্যার ঘটনায় ইতোপূর্বে টেকনাফ থানায় কোনো মামলা হয়ে থাকলে তার প্রতিবেদন ১০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে আদালতে দাখিল করার জন্য টেকনাফ থানার ওসিকে আদেশ দেন বিচারক।

আদালত আরও বলেন, ‘১০সেপ্টেম্বর পুলিশের প্রতিবেদন পাওয়ার পর পরবর্তী আদেশ দিবেন আদালত।’

বাদীর পক্ষের আইনজীবী মাহমুদুল হক মাহমুদ দ্য ডেইলি স্টারকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন।

বাদী ছেনুয়ারা বেগম আদালতে দাখিল করা এজাহারে উল্লেখ করেন, গত বছরের ৩ ডিসেম্বর তার স্বামী সৌদি আরব যাওয়ার জন্য স্বাস্থ্য পরীক্ষা করতে কক্সবাজার যান। ওইদিন সকাল সাড়ে নয়টায় রফিক উল্লাহ নামে এক যুবকসহ তার স্বামীকে কক্সবাজার ডিবি পুলিশ ধরে নিয়ে যায়। রফিক উল্লাহকে ১৫ ডিসেম্বর আদালতে সোপর্দ করা হয়। ৬ ডিসেম্বর স্বামী নিখোঁজ হওয়া সংক্রান্ত একটি জিডি করতে গেলে টেকনাফ থানা পুলিশ তা গ্রহণ না করে জেলা পুলিশ সুপারকে লিখিতভাবে অভিযোগ করতে বলে। ৭ ডিসেম্বর জেলা পুলিশ সুপার বরাবরে লিখিত অভিযোগ করেন তিনি।

৩ মার্চ পুলিশের কয়েকজন সদস্য তার বাড়িতে গিয়ে স্বামীকে প্রাণে বাঁচাতে চাইলে ১০ লাখ টাকা দাবি করেন। তা না হলে স্বামীর মৃতদেহ প্রদান করা হবে বলে হুমকি দেন। ১৬ মার্চ তিন পুলিশ সদস্য তার বাড়িতে এসে পাঁচ লাখ টাকা নিয়ে যান। পরে তার স্বামী নিখোঁজ সংক্রান্ত সংবাদ বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়। এরপর কক্সবাজার ডিবি পুলিশের সঙ্গে পুনরায় যোগাযোগ করলে তারা তার স্বামীকে ছেড়ে দেওয়ার আশ্বাস দেন। দীর্ঘ সাত মাস তার স্বামীকে টেকনাফ থানার একটি গোপন কক্ষে আটকে রাখা হয়। পরে ৭ জুলাই আনুমানিক রাত দুই থেকে পৌনে তিনটার মধ্যে টেকনাফের হোয়াইক্যং ইউনিয়নের কম্বনিয়া বড়ছড়া এলাকায় তার স্বামীর শরীরে বিভিন্ন স্থানে গুলি করে হত্যা করা হয়।

এই মামলার এজাহারে আসামি করা হয়েছে- হোয়াইক্যং পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই মশিউর রহমান, টেকনাফ থানার বহিষ্কৃত ওসি প্রদীপ কুমার দাস, এএসআই আরিফুর রহমান, এসআই সুজিত চন্দ্র দে, ডিবি পুলিশের পরিদর্শক মানস বড়ুয়া, এসআই অরুন কুমার চাকমা, এসআই নাজিম উদ্দীন, এএসআই রামধন চন্দ্র দাশ, এসআই মো. নাজিম উদ্দীন ভুইয়া, কনস্টেবল সাগর দেব, রুবেল শর্মা, গ্রাম পুলিশের দফাদার আমিনুল হকসহ অন্যান্যদের।

Comments

The Daily Star  | English

Police struggle as key top posts lie vacant

Police are grappling with operational challenges as more than 400 key posts have remained vacant over the past 10 months, impairing the force’s ability to combat crime. 

12h ago