হাতি দিয়ে চাঁদাবাজি

যশোরের চৌগাছা উপজেলায় হাতি ব্যবহার করে অভিনব কায়দায় দীর্ঘদিন ধরে চলছে চাঁদাবাজি। চৌগাছা পৌর এলাকাসহ উপজেলার অন্তত ১০-১২টি এলাকার ব্যবসায়ী, পথচারী ও স্থানীয়রা জিম্মি হয়ে পড়েছেন হাতির এই চাঁদাবাজির কাছে।
Extortion by elephant.jpg
টাকা না দেওয়া পর্যন্ত দোকান থেকে হাতি সরছে না, এমন দৃশ্যও দেখা গেছে। ছবি: স্টার

যশোরের চৌগাছা উপজেলায় হাতি ব্যবহার করে অভিনব কায়দায় দীর্ঘদিন ধরে চলছে চাঁদাবাজি। চৌগাছা পৌর এলাকাসহ উপজেলার অন্তত ১০-১২টি এলাকার ব্যবসায়ী, পথচারী ও স্থানীয়রা জিম্মি হয়ে পড়েছেন হাতির এই চাঁদাবাজির কাছে।

আজ শুক্রবার সকালে চৌগাছা শহরের কয়েকটি মোড়ে গিয়ে হাতি দিয়ে দোকান থেকে টাকা তুলতে দেখা যায়। বড় একটি হাতির পিঠে বসে একজন হাতিটিকে পরিচালনা করছেন। হাতি শুঁড় দিয়ে দোকানীর কাছ থেকে টাকা নিয়ে নিচে থাকা সহযোগীর হাতে তুলে দিচ্ছে।

টাকা না দেওয়া পর্যন্ত দোকান থেকে হাতি সরছে না, এমন দৃশ্যও দেখা গেছে।

বিষয়টি নিয়ে উপজেলার চাঁদপাড়া বাজার, ফাঁসতলা বাজার, হাকিমপুর বাজার, বন্দুলিতলা বাজার, টেঙ্গুরপুর মোড়, পুড়াপাড়া, সিংহঝুলী বাজার, পাতিবিলা বাজার, দেবীপুর বাজার ও পাশাপোল বাজারের ব্যবসায়ী ও স্থানীয়দের মাঝে বিরাজ করছে চাপা উত্তেজনা।

চৌগাছা বাজারের রেস্তোরাঁ মালিক জারিফ হোসেন জানান, উপজেলার বাসস্ট্যান্ড থেকে ব্রিজঘাট পর্যন্ত প্রতিটি দোকানে হাতি এনে চাঁদাবাজি করা হচ্ছে। দোকান প্রতি কমপক্ষে ২০ থেকে ৩০ টাকা করে আদায় করা হয়।

তিনি বলেন, ‘হাতিসহ দোকানের সামনে এসে দোকানিদের ভয় দেখিয়ে টাকা আদায় করা হয়। চাঁদার টাকা না দেওয়া পর্যন্ত সেখান থেকে হাতি সরানো হচ্ছে না।’

চাহিদা অনুযায়ী টাকা না পেলে হাতির শুঁড় দিয়ে দোকানের মালামাল ফেলে দেওয়া হচ্ছে বলে তার অভিযোগ। এভাবে টাকা আদায়ের কারণে দোকানে বেচা-কেনায় সমস্যা হচ্ছে বলেও জানান তিনি।

চৌগাছা বাজারের ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী কবির হোসেন বলেন, ‘দুই-তিন মাস পরপর বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা হাতি দিয়ে এখানে চাঁদাবাজি করা হচ্ছে। প্রশাসনিকভাবে বিষয়টি দেখার কেউ নেই।’

হাতির পরিচালক রাসেল হোসেন বলেন, ‘আমরা দুটি হাতি নিয়ে ঘুরে ঘুরে বিভিন্ন এলাকা থেকে খাবারের জন্য টাকা সংগ্রহ করি। তবে, জোর করে কারো কাছ থেকে টাকা নেওয়া হয় না। লোকজন স্বেচ্ছায় যা দেয়, তাই নিয়ে আমরা সন্তুষ্ট।’

চৌগাছা উপজেলা বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক ইবাদত হোসেন জানান, হাতি দিয়ে চাঁদাবাজি করার কোনো সুযোগ নেই।

চৌগাছা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রাজিব খান বলেন, ‘এলাকার লোকদের কাছ থেকে হাতি দিয়ে চাঁদাবাজির অভিযোগ পেয়েছি। শিগগির এদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

যোগাযোগ করা হলে চৌগাছা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এনামুল হক জানান, হাতি দিয়ে কিংবা ব্যক্তি মালিকানাধীন প্রাণী দিয়ে টাকা আদায়কারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

ইতোমধ্যে তাদেরকে চাঁদাবাজি বন্ধের জন্য নির্দেশনাও দেওয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।

Comments

The Daily Star  | English
Digital journalism has not been kind to rural journalists

Digital journalism has not been kind to rural journalists

As the mainstream media adapts to the demands of digital age, the ugly sides of digital journalism continue to emerge.

7h ago