রাজশাহীর সংসদ সদস্য আয়েন উদ্দিন বললেন

‘মাইরের ওপর কোনো আইন নাই’

জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে কেশরহাট পৌরসভায় আয়োজিত জনসভায় বক্তব্য দিচ্ছেন রাজশাহী-৩ আসনের সংসদ সদস্য মো. আয়েন উদ্দিন।

গত ২৭ আগস্ট রাতে রাজশাহী-৩ আসনের সংসদ সদস্য মো. আয়েন উদ্দিন এক জনসভায় বক্তব্যে বলেন, ‘মাইরের ওপর কোনো আইন নাই।’

তিনি তার আসনের মোহনপুর উপজেলার স্থানীয় সাংবাদিক যারা তাদের পেশার আড়ালে চাঁদাবাজি, মাদকব্যাবসার সঙ্গে জড়িত এবং নিজেরাও মাদকাসক্ত তাদেরকে উল্লেখ করে বক্তব্য দেন।

জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে কেশরহাট পৌরসভায় আয়োজিত জনসভায় সাংবাদিকদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘আপনি মাদকের ব্যবসা করবেন, নিরাপদে মাদক সেবন করবেন— আগে তাদের বাইবেন (বাঁধবেন) কিন্তু।… কতো বড় সাংবাদিক আমি দেখতে চাই।… আপনি মানুষেরে ভয় দেখাবেন, আপনি বলবেন এই কথাটি লিইখ্যা দিবো, পেপারে দিয়ে দিব, ফেসবুকে দিয়ে দিবো…।’

তিনি আরও বলেন, ‘তথ্য সন্ত্রাস আইন করা হয়েছে বাংলাদেশে। তথ্য সন্ত্রাস আইন কিন্তু কঠিন আইন। আর তার চেয়ে বড় আইন আছে এই জনগণ। কিলের ওপর, মাইরের ওপর কোনো আইন নাই।’

‘(সাংবাদিকদের) এমন মাইর, এমন ধাতানি দিবেন যাতে ঐ গদি ফেলে যেতে বাধ্য হয়,’ যোগ করেন তিনি।

আইন প্রণেতার এই বক্তব্যের একটি ভিডিও ক্লিপ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে।

আজ শনিবার আইন প্রণেতা মো. আয়ন উদ্দিন দ্য ডেইলি স্টারের কাছে তার বক্তব্যের বিষয়ে বলেন, ‘আমি বলতে চেয়েছিলাম যে জনগণের চেয়ে বড় শক্তি আর নেই।’

‘আমার বক্তব্যটি কেবলমাত্র সেই সাংবাদিকদের উদ্দেশে যারা সাংবাদিকতার নামে বিভিন্ন অপরাধে জড়িত,’ উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, ‘আমি সত্যিকারের নিবেদিতপ্রাণ সাংবাদিকদের সম্মান রক্ষার জন্য এই বক্তব্য দিয়েছি।’

তার মতে, মোহনপুর উপজেলায় ছয়টি ইউনিয়ন, একটি পৌরসভা ও ৬৭টি ওয়ার্ড আছে। কিন্তু, সেখানে সাংবাদিক রয়েছেন কমপক্ষে ৭৬ জন। তার মানে সেখানে মোট ওয়ার্ড সংখ্যার চেয়ে নয় জন সাংবাদিক বেশি।

‘এই সাংবাদিক ও ওয়েব পোর্টালগুলোর কোনো অফিস বা প্রধান কেউ নাই যাতে যে কেউ তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করতে না পারে। পুলিশ যখনই তাদের গ্রেপ্তার করে, কিছুদিন পরে তারা কারাগার থেকে বেরিয়ে আসে এবং পুনরায় অপরাধে জড়িয়ে পড়ে,’ বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

তিনি আরও বলেন, ‘ভিডিও ক্লিপে আমার সম্পূর্ণ বক্তব্য নেই।’

তিনি বলেন যে তিনি সভায় বলেছিলেন যে তার দল আওয়ামী লীগের কিছু কর্মীও চাঁদাবাজি করেছে। কিছু ক্ষেত্রে এই চাঁদাবাজরা অপরাধী সাংবাদিকদের সঙ্গে সিন্ডিকেট তৈরি করে।

‘একটি সিন্ডিকেট আজকাল সক্রিয় হয়েছে। সাংবাদিক হওয়ার প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছে। আমাদের পার্টির কিছু চাঁদাবাজ তথাকথিত সাংবাদিকদের সঙ্গে সম্পর্ক তৈরি করে এবং এক সাথে চাঁদাবাজি, মাদক চোরাকারবার ও মাদকাসক্তিতে জড়িয়ে পড়ে। ওদের জ্বালায় মানুষজন অতিষ্ঠ। ভীতি প্রদর্শন করে তারা ডেভেলপার, কর্মকর্তা, এনজিও কর্মী ও স্কুল-কলেজের শিক্ষকসহ বিভিন্ন ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে চাঁদা আদায় করে,’ যোগ করেন সংসদ সদস্য মো. আয়েন উদ্দিন।

Comments

The Daily Star  | English

Advisory council set to hold emergency meeting this evening

The meeting will be held tonight at 8:00pm at the State Guest House, Jamuna

1h ago