‘কিং অব পপ’ স্মরণ

১৯৮০ দশকে আমেরিকার জনপ্রিয় সংগীতশিল্পী হিসেবে দর্শক মহলে জায়গা করে নেওয়া এক স্টাইলিশ যুবক। একাধারে তিনি ছিলেন গায়ক, ড্যান্সার, গীতিকারসহ বহুপ্রতিভায় অধিকারী। গানের পাশাপাশি নাচের মাধ্যমে বিশ্বের অগনিত ভক্তকে মুগ্ধ করেছেন তিনি।
সেই যুবকের নাম মাইকেল জোসেফ জ্যাকসন। আজ ২৯ আগস্ট পপ সম্রাট মাইকেল জ্যাকসনের জন্মদিন।
১৯৫৮ সালের এই দিনে আমেরিকার ইন্ডিয়ানা প্রদেশের গ্যারে শহরে জন্ম ‘কিং অব পপ’ নামে খ্যাত এই সংগীততারকার। দরিদ্র পরিবারে জন্ম নিয়েছিলেন তিনি। দশ ভাইবোনের মধ্যে তিনি ছিলেন অষ্টম। বাবা জোসেফ জ্যাকসন একজন কারখানার শ্রমিক হলেও গানের চর্চাও করতেন।
মাত্র পাঁচ বছর বয়সে মাইকেল জ্যাকসনের সংগীতজীবন শুরু হয়। ‘জ্যাকসন ফাইভ’ নামের একটি সংগীতদলের সদস্য ছিলেন প্রথমে। ব্যান্ডটি গঠন করার পর ১৯৬৬-৬৮ পর্যন্ত পরবর্তী তারা কিছু গান রিলিজ করেন। পরবর্তীতে তা বিলবোর্ড চার্টে স্থান করে নেয়।
বিখ্যাত মিউজিক ম্যাগাজিন রোলিং স্টোন প্রচ্ছদে এই উঠতি তারকাদের কভার নিউজ করে। সত্তর দশকের পর একক ক্যারিয়ারের প্রয়োজনে ‘জ্যাকসন ফাইভ’ ছাড়েন মাইকেল। এরপর তিনি একক শিল্পী হিসেবে পথচলা শুরু করেন।
১৯৮২ সালে মুক্তি পাওয়া ‘থ্রিলার’ অ্যালবাম বিক্রির সর্বকালের রেকর্ডের তালিকায় রয়েছে। এটি সারা পৃথিবীতে নব্বই লাখের বেশি বিক্রি হয়েছে।
জীবিতকালে অসংখ্য পুরস্কারে ভূষিত হন মাইকেল জ্যাকসন। তিনি দুই বার পেয়েছেন ‘রক এন রোল হল অফ ফেম’ খেতাব।
এছাড়াও, ১৩টি গ্র্যামি পুরস্কারের পাশাপাশি ৭৫ কোটি অ্যালবাম বিক্রির রেকর্ড রয়েছে এই পপ তারকার ঝুলিতে।
মাইকেল জ্যাকসনের গাওয়া পাঁচটি সংগীত অ্যালবাম বিশ্বে সবচেয়ে বেশি আলোচিত হয়েছে। এগুলোর মধ্যে রয়েছে ‘অফ দ্য ওয়াল’ (১৯৭৯), ‘থ্রিলার’ (১৯৮২), ‘ব্যাড’ (১৯৮৭), ‘ডেঞ্জারাস’ (১৯৯১) ও ‘হিস্টোরি’ (১৯৯৫)।
গানের তালে-তালে মাইকেলের নাচের কৌশলগুলোও ব্যাপক জনপ্রিয়তা পায়। তার জনপ্রিয় নাচের মধ্যে রয়েছে ‘রোবট’ ও ‘মুনওয়াক’।
এলভিস প্রিসলির মেয়ে লিসা মেরি প্রিসলিকে বিয়ে করেছিলেন মাইকেল। দুই বছর সংসারের পর আলাদা হয়ে যান তারা। ১৯৯৭ সালে আবারো তিনি বিয়ের পিঁড়িতে বসেন। সঙ্গিনী ছিলেন পেশায় নার্স ডোবরা জেনি রো। দুই বছর সংসার করার পর তারাও আলাদা হয়ে যান।
জনপ্রিয়তার শীর্ষে থাকা এই মহাতারকা পেপসির একটি বিজ্ঞাপনের মডেল হতে গিয়ে দুর্ঘটনায় পড়েন। এ কারণে তাকে প্লাস্টিক সার্জারি করতে হয়। বার-বার অসুস্থ হওয়ায় অবশেষে নিজের চেহারায় ব্যাপক পরিবর্তন ঘটান পপ সম্রাট।
হৃদরোগে আক্রান্ত বিশ্বের অগণিত ভক্তদের কাঁদিয়ে ২০০৯ সালের ২৫ জুন মাইকেল জ্যাকসন পাড়ি জমান না ফেরার দেশে।
Comments