৩ জনকে হত্যার অভিযোগে ওসি প্রদীপসহ ৪১ জনের বিরুদ্ধে আরও একটি এজাহার

প্রদীপ কুমার দাশ। ছবি: সংগৃহীত

কক্সবাজার জেলার টেকনাফে বন্দুকযুদ্ধের নাটক সাজিয়ে একসঙ্গে তিন জনকে হত্যার অভিযোগ এনে বহিষ্কৃত ওসি প্রদীপ কুমার দাশকে প্রধান আসামি করে ৪১ জনের বিরুদ্ধে আদালতে আরেকটি এজাহার দায়ের করা হয়েছে।

আজ সোমবার সুলতানা রাবিয়া মুন্নী (২২) বাদী হয়ে কক্সবাজার আদালতে এ এজাহার দায়ের করেন।

জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম আদালত-৩ এর বিচারক মোহা. হেলাল উদ্দীন এজাহারটি আমলে নিয়ে এ বন্দুকযুদ্ধের ঘটনায় ইতোমধ্যে কোনো মামলা হলে তার সর্বশেষ অবস্থা ও অগ্রগতির প্রতিবেদন আগামী ১৫ সেপ্টেম্বরের মধ্যে আদালতে দাখিল করতে টেকনাফ থানার ওসিকে আদেশ দিয়েছেন।

বাদীর আইনজীবী মো. কাসেম আলী দ্য ডেইলি স্টারকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন।

বাদী সুলতানা রাবিয়া মুন্নী টেকনাফ উপজেলার হ্নীলা ইউনিয়নের রঙ্গীখালী গাজীপাড়ার স্থায়ী বাসিন্দা। আদালতে দাখিল করা এজাহারে তিনি উল্লেখ করেন, তার স্বামী সৈয়দ আলম, সৈয়দ আলমের আপনভাই নুরুল আলম ও তাদের ভাগিনা সৈয়দ হোসেনকে গত ৬ মে রাত দুইটায় নিজ বাড়ি থেকে ধরে নিয়ে যায় মামলায় উল্লেখিত আসামিরা। পর ওসি প্রদীপ কুমার দাশ ও এসআই মশিউর রহমান ওই তিন জনের পরিবারের কাছ থেকে ৫০ লক্ষ টাকা চাঁদা দাবি করেন। চাঁদা দিতে অপারগতা প্রকাশ করায় একইদিন রাত চারটা ৪০ মিনিটে ওই তিন জনকে তাদের বসতবাড়ির পশ্চিম পাশে পাহাড়ের নীচে ধানক্ষেতে নিয়ে কথিত বন্দুকযুদ্ধের নাটক সাজিয়ে অভিযুক্ত আসামিরা যোগসাজেশে গুলি করে হত্যা করে। এ ছাড়া, আসামিরা তিন জনের বাড়িতে গভীর রাতে সশস্ত্র অবস্থায় প্রবেশ করে লুটপাট, ভাঙচুর ও বাড়ির মানুষদের মারধর করে।

এজাহারে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, ওসি প্রদীপ ও এসআই মশিউর রহমান তিন জনকে হত্যার পরে বাদী ও নিহত তিন জনের পরিবারের সদস্যদের সরাসরি হুমকি দিয়ে আসছিলেন- হত্যার ঘটনা কাউকে বললে কিংবা মামলা দায়ের করলে সকলের পরিণতি ওই তিনজনের মতো হবে। তিন জনকে বন্দুকযুদ্ধের নামে হত্যা করে তাদের একজন আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর সদস্য নুরুল আলমকে মিয়ানমারের নাগরিক বলে গণমাধ্যমে প্রচার করে। 

মামলায় আসামি করা হয়েছে- ওসি প্রদীপ কুমার দাশ, এসআই মশিউর রহমান, রাসেল আহমেদ, এসআই নাজিমউদ্দীন কামরুজ্জামান, জামশেদ আহমদ, সুজিত চন্দ্র দে, অরুণ কুমার চাকমা ও মো. নাজিম উদ্দীন ভুঁইয়া, এএসআই কাজী সাইফুদ্দীন, ফকরুজ্জামান, মো. জামাল উল্লাহ, মো. মাজহারুল ইসলাম, মাঈন উদ্দীন, নাইমুল হক, মিশকাত উদ্দীন, রামধন চন্দ্র দাশ, আমির হোসেন, অহিদ উল্লাহ, সনজিব দত্ত ও  মিঠুন কুমার ভৌমিক, কনস্টেবল সাগর দেব, আবু হানিফ, হেলাল উদ্দীন, আমজাদ হোসেন, মো. মামুন, নাজমুল হাসান, জসীম উদ্দিন, মো. আমজাদ হোসেন, কামরুল হাসান, মো. জাহাঙ্গীর, মো. হাবীব, মো. নুর নবী, আনোয়ার হোসেন ও সৈকত বড়ুয়া, স্থানীয় পুলিশের সোর্স গিয়াস উদ্দীন, আনোয়ার হোসেন, লুৎফুর রহমান, সরোয়ার আলম, নুরুন্নবী ও বোরহান উদ্দীন।

এ এজাহারটি দায়েরের আগে গত দুই সপ্তাহে প্রদীপ কুমার দাশ, কিছু পুলিশ সদস্য, স্থানীয় পুলিশের সোর্স ও গ্রাম পুলিশের বিরুদ্ধে হত্যার অভিযোগ এনে চারটি এজাহার দায়ের হয় আদালতে। গত ১৮ আগস্ট হোয়াইক্যং এলাকার সাদ্দাম হোসেনকে হত্যার অভিযোগে তার মা গুলচেহের, ২৩ আগস্ট হোয়াইক্যং ইউনিয়নের আওয়ামী লীগ নেতা মোহাম্মদ আলম বাবুল হত্যার অভিযোগে তার ভাই বদিউল আলম, ২৬ আগস্ট সৌদি প্রবাসী যুবক মাহমুদুল হককে হত্যার অভিযোগে তার ভাই নুরুল হোসাইন ও ২৭ আগস্ট সাত মাস আটকে রাখার পর সিএনজিচালিত অটোরিকশা চালক আবদুল জলীলকে হত্যার অভিযোগে তার স্ত্রী ছেনুয়ারা বেগম আদালতে এজাহার দায়ের করেন।

Comments

The Daily Star  | English

Beyond development paradox & unnayan without democracy

As Bangladesh seeks to recalibrate its path in the aftermath of recent upheavals, the time is ripe to revisit an oft-invoked but under-examined agenda: institutional reform. Institutions are crucial to understand, as they are foundational for governance, transformation, and economic development.

16h ago