নারায়ণগঞ্জে ধর্ষণ ও হত্যার জবানবন্দি দেওয়া ১ আসামির জামিন, নির্যাতনের অভিযোগ পারিবারের

গণধর্ষণ ও হত্যার দায় স্বীকার করে তিন আসামির স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেওয়ার পর সেই কিশোরীকে জীবিত উদ্ধারের ঘটনায় এক আসামির জামিন মঞ্জুর করেছেন আদালত।
স্টার অনলাইন গ্রাফিক্স

গণধর্ষণ ও হত্যার দায় স্বীকার করে তিন আসামির স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেওয়ার পর সেই কিশোরীকে জীবিত উদ্ধারের ঘটনায় এক আসামি জামিনে কারামুক্ত হয়েছেন।

বুধবার দুপুরে নারায়ণগঞ্জ জেলা ও দায়রা জজ আনিসুর রহমানের আদালতে তিন আসামির অনুপস্থিতিতে আইনজীবী জামিনের আবেদন করেন। শুনানি শেষে আদালত মাঝি খলিলুর রহমানের জামিন মঞ্জুর করেন। অন্য দুই আসামি আব্দুল্লাহ ও রাকিবের জামিন শুনানির তারিখ ধার্য হয় ৭ সেপ্টেম্বর।

কারামুক্তির পর খলিলুর রহমানকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন পরিবারের সদস্যরা। 

বুধবার বিকেল সাড়ে ৫টায় সদর উপজেলার সস্তাপুর এলাকায় নারায়ণগঞ্জ কারাগার থেকে মুক্তি পান তিনি। মাইক্রোবাসে করে তাকে কারা ফটক থেকে দ্রুত নিয়ে চলে যান পরিবারের সদস্যরা।

পরে মোবাইলে খালিলুরের বড় ভাই জলিলুর রহমান দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘ভাইয়ের কিডনির চিকিৎসা করাতে হবে। জানেন তো রিমান্ডে টর্চার করেছে। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাচ্ছি। এখন ও (খলিলুর) কথা বলতে পারে না। ওর অবস্থা আশঙ্কাজনক। সুস্থ হলে তখন কথা বলবেন।’ 

এর আগে গত ৩১ আগস্ট নারায়ণগঞ্জ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে গণধর্ষণ ও হত্যার দায় স্বীকার করে আগের দেওয়া স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রত্যাহারের আবেদন করলে আদালত তারা গ্রহণ করে নথিভুক্ত করেন। তবে সেদিন আদালত তিনজনের জামিন না-মঞ্জুর করেন।

প্রসঙ্গত গত ৪ জুলাই নিখোঁজ হয় ওই কিশোরী। প্রায় দুই সপ্তাহ পর ১৭ জুলাই সদর মডেল থানায় জিডি করেন কিশোরীর মা। পরে গত ৬ আগস্ট থানায় অপহরণ মামলা করেন বাবা। পরদিন বন্দরের খলিলনগর এলাকার মো. আব্দুল্লাহ (২২), বুরুন্দি পশ্চিমপাড়া এলাকার ইজিবাইক চালক রাকিব (১৯) ও ইস্পাহানী খেয়াঘাটের নৌকার মাঝি খলিলুর রহমানকে (৩৬) গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

৯ আগস্ট নারায়ণগঞ্জ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ও জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের পৃথক আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেন আসামিরা। স্বীকারোক্তিতে তারা জানান, ওই স্কুল ছাত্রীকে নৌকায় করে গণধর্ষণের পর হত্যা করে লাশ শীতলক্ষ্যা নদীতে ভাসিয়ে দিয়েছেন তারা।

নারায়ণগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘আমরা জানতে পারি ওই কিশোরীকে ধর্ষণ করা হয়নি। ঘটনার দিন অভিযুক্ত আব্দুল্লাহার সঙ্গে ওই কিশোরী দেখা করে। পরে রাতে ইকবালের সঙ্গে পালিয়ে যায়। তারা বিয়ে করে বন্দর কুশিয়ারা এলাকায় বাসা ভাড়া নিয়ে বসবাস শুরু করে। গত ২৩ আগস্ট দুপুরে ওই কিশোরী তার মাকে ফোন দিয়ে টাকা চায়। পরে পুলিশ কুশিয়ারা থেকে কিশোরীকে উদ্ধার করে এবং স্বামী ইকবালকে আটক করে।’

এদিকে অভিযুক্ত তিন যুবকের পরিবারের অভিযোগ, মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই শামীম আল মামুন রিমান্ডে নির্যাতনের ভয় দেখিয়ে তাদের তিন পরিবারের কাছ থেকে ৪৬ হাজার টাকা নিয়েছেন। এরপরও রিমান্ডে নির্যাতন করে, ভয় দেখিয়ে তাদের মিথ্যা স্বীকারোক্তি আদায় করেন। অভিযোগ উঠার পর ২৬ আগস্ট শামীমকে সদর থানা থেকে পুলিশ লাইনে সংযুক্ত করা হয়। ৩১ আগস্ট তাকে সাময়িক বরখাস্ত করে তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা প্রক্রিয়াধীন বলে জানান এসপি জায়েদুল আলম।

আরও পড়ুন: 

‘ধর্ষণের পর হত্যা’ ৫১ দিন পর জীবিত উদ্ধার কিশোরী

Comments

The Daily Star  | English

Further uncertainty over Rooppur plant launch

The construction work for the transmission line through the Padma and Jamuna rivers for the Rooppur nuclear power plant has come to a grinding halt with the ouster of the Awami League government as the Indian contractor has left the site.

9h ago