রাজবাড়ীতে তরুণীকে ধর্ষণের দায়ে তিন জনের মৃত্যুদণ্ড
রাজবাড়ীতে অটোরিকশা থেকে নামিয়ে এক তরুণীকে ধর্ষণের দায়ে তিন জনের মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। আজ বুধবার রাজবাড়ী নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক শারমীন নিগার এই রায় দেন।
এ তথ্য নিশ্চিত করে সরকারি কৌঁসুলী (পিপি) উজির আলী শেখ বলেন, ‘মামলার রায় ঘোষণার সময় আসামি ও বাদী আদালতে উপস্থিত ছিলেন। বিচারক মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত তিন আসামির প্রত্যেককে এক লাখ টাকা জরিমানা করেন এবং বাকি তিন আসামিকে মামলা থেকে বেকসুর খালাস দেন।’
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- রানা মোল্লা (২৬), মামুন মোল্লা (২২) ও হান্নান সরদার (২৮)। রানা ও হান্নান সদর উপজেলার বসন্তপুর ইউনিয়নের মজলিসপুর গ্রামের বাসিন্দা। মামুনের বাড়ি খানখানাপুর ইউনিয়নের দত্তপাড়া গ্রামে।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, ওই তরুণী একজন চিকিৎসক এবং তার বয়স ছিল ২৪। তিনি ২০১৮ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি ঢাকা থেকে গ্রামের বাড়ি গোপালগঞ্জ যাচ্ছিলেন। যাওয়ার পথে সন্ধ্যা সাতটার দিকে রাজবাড়ী সদর উপজেলার শহীদওহাবপুর ইউনিয়নের গোয়ালন্দ মোড় এলাকা থেকে ফরিদপুর যাওয়ার জন্য গাড়ি খুঁজছিলেন। ওই সময় অটোরিকশা চালক রানা তাকে জানায়, এখান থেকে গাড়ি পাওয়া যাবে না। ফরিদপুরে গেলে গাড়ি পাবেন। তখন মামুন অটোরিকশাতে বসে ছিল। পরে হান্নানও অটোতে ওঠে। কিছুদূর যাওয়ার পর চালকসহ সবাই তার সঙ্গে অশোভন আচরণ শুরু করে। হান্নান তার চোখে টর্চ মারেন। একপর্যায়ে মজলিসপুর এলাকায় নির্জন স্থানে যাওয়ার পর তাকে অটোরিকশা থেকে নামিয়ে তিন জন ধর্ষণ করে। পরে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে আরো তিন-চারজনকে ডেকে আনে। তারাও তাকে ধর্ষণ করে। এক পর্যায়ে তিনি শারীরিকভাবে খুব ক্লান্ত হয়ে পড়েন। অনেক অনুরোধ করার পর তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়। তিনি দৌড়ে রাস্তায় এসে গাড়িতে ফরিদপুর চলে যান। এরপর তিনি ফরিদপুর র্যাবকে বিষয়টি অবহিত করেন।
র্যাব-৮ ফরিদপুর ক্যাম্পের সদস্যরা অভিযান পরিচালনা করে স্থানীয়দের সহায়তায় ২৪ ফেব্রুয়ারি দুপুরে তিনজনকে আটক করে। আটক হওয়া ব্যক্তিরা ঘটনার সঙ্গে নিজেদের জড়িত থাকার সত্যতা স্বীকার করেন। ধর্ষণের শিকার ওই তরুণী বাদী হয়ে রাজবাড়ী সদর থানায় চার জনের বিরুদ্ধে একটি ধর্ষণ মামলা করে ২৫ ফেব্রুয়ারি।
পরবর্তীতে পুলিশ তদন্ত করে ৬ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগ পত্র দাখিল করে।
রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী সরকারি কৌঁসুলী উজিরআলী শেখ বলেন, ‘এ ধরনের নির্যাতন কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। এই রায় দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে।’
Comments