রোহিঙ্গা গণহত্যা মামলায় গাম্বিয়ার পাশে কানাডা ও নেদারল্যান্ডস
আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে (আইসিজে) গত বছর নভেম্বরে করা রোহিঙ্গা গণহত্যা মামলায় গাম্বিয়াকে সহযোগিতা করার কথা জানিয়েছে কানাডা ও নেদারল্যান্ডস।
গতকাল বুধবার নেদারল্যান্ডসের সরকারি ওয়েবসাইটে এ বিষয়ে একটি যৌথ বিবৃতি প্রকাশ করা হয়েছে।
বিবৃতিতে বলা হয়, মানবতার কথা বিবেচনা করে কানাডা ও নেদারল্যান্ডস এই প্রচেষ্টাকে সমর্থন করা দায়িত্ব বলে মনে করে।
এর অংশ হিসেবে কানাডা ও নেদারল্যান্ডস মামলার জটিল আইনি সমস্যা মোকাবিলায় সহায়তা করবে। এ ছাড়া, ধর্ষণসহ সহিংস অপরাধের বিষয়ে দেশ দুটি বিশেষ মনোযোগ দেবে বলে বিবৃতিতে বলা হয়।
তিন বছর আগে মিয়ানমারের রাখাইনে নৃশংস সামরিক অভিযানের পর প্রায় সাড়ে সাত লাখ রোহিঙ্গা পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়। এ ঘটনায় ইসলামিক সহযোগিতা সংস্থা (ওআইসি) এর সহায়তায় গাম্বিয়া আইসিজেতে মামলা করে।
চীন ও রাশিয়ার বিরোধিতার কারণে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে জাতিসংঘের নিরাপত্তা কাউন্সিল এ বিষয়ে কোনও শক্ত পদক্ষেপ নিতে পারেনি। আফ্রিকার ক্ষুদ্র দেশ গাম্বিয়া মামলা করার পর কানাডা ও নেদারল্যান্ডস ছাড়া তেমন কোনও দেশই একে সমর্থন করেনি। যুক্তরাজ্য আইসিজে এর সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানায় এবং ইউরোপীয় ইউনিয়ন মিয়ানমারকে আইসিজে আদেশ মেনে চলার আহ্বান জানিয়েছিল।
আইসিজে চলতি বছরের জানুয়ারিতে মিয়ানমারকে রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে গণহত্যার যে কোনও ঘটনা রোধ এবং প্রমাণ নষ্ট না করতে একটি রুল জারি করে।
বিবৃতিতে কানাডা ও নেদারল্যান্ডস গাম্বিয়ার প্রশংসা করে জানায়, এটি মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের প্রতি বৈষম্য ও নিপীড়ন থেকে মুক্তির পথ। জেনোসাইড কনভেশনে সই করা দেশগুলোর প্রতি গাম্বিয়াকে সমর্থনের আহ্বান জানানো হয় বিবৃতিতে।
দুই দেশের এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়ে বার্মিজ রোহিঙ্গা অর্গানাইজেশন ইউকে (ব্রুক) বলেছে, এটি একটি ঐতিহাসিক সিদ্ধান্ত। ২০১৭ সালের গণহত্যায় বেঁচে যাওয়াদের রোহিঙ্গাদের ন্যায়বিচার পেতে এটি সাহায্য করবে এবং যুদ্ধাপরাধীদের বিচারে সহায়তা করবে।
ব্রুকের প্রেসিডেন্ট তুন খিন বলেন, 'মিয়ানমারের বিরুদ্ধে গাম্বিয়ার করা গণহত্যার এই মামলায় কানাডা ও নেদারল্যান্ডসের সমর্থন কেবল রোহিঙ্গাদের পাশে দাঁড়ানো নয়, এটা সঠিক ইতিহাসের সাক্ষী হয়ে থাকার মতো বিষয়।'
এ মামলার সমর্থন জানাতে অন্যান্য দেশের সরকারকেও তিনি আহ্বান জানান।
Comments