নিজের অভিনীত চলচ্চিত্রে গান গেয়েছিলেন উত্তম কুমার!

উত্তম কুমার। ছবি: সংগৃহীত

মহানায়ক উত্তম কুমারের ৯৪তম জন্মদিন আজ। তার সুনিপুণ অভিনয় দক্ষতার কারণে বাংলা চলচ্চিত্র তাকে ‘মহানায়ক’ খেতাব দিয়েছে।

১৯২৬ সালের ৩ সেপ্টেম্বর উত্তম কুমার কলকাতায় জন্মগ্রহণ করেন। তার প্রকৃত নাম অরুণ কুমার চট্টোপাধ্যায়। পিতা সাতকড়ি চট্টোপাধ্যায় এবং মা চপলা দেবী। তিন ভাই-বোনের মধ্যে তিনি ছিলেন সবার বড়।

উত্তম কুমারের অভিনয় জীবন শুরু হয় ১৯৪৮ সালে ‘দৃষ্টিদান’ চলচ্চিত্রের মাধ্যমে। নায়ক হিসেবে তার অভিনীত প্রথম চলচ্চিত্রের নাম ‘মায়াডোর’। যদিও এই চলচ্চিত্রটি আলোর মুখ দেখেনি। তবে, ‘বসু পরিবার’ চলচ্চিত্রে অভিনয় করে সবার নজর কাড়েন উত্তম কুমার। ‘সাড়ে চুয়াত্তর’ চলচ্চিত্রে অভিনয়ের মাধ্যমে আর তাকে পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। এই চলচ্চিত্রে প্রথমবারের মতো সুচিত্রা সেনের বিপরীতে অভিনয় করেন তিনি। ‘সাড়ে চুয়াত্তর’ দিয়েই উত্তম-সুচিত্রা জুটির সূত্রপাত। তারপর এই জুটি অভিনয় দক্ষতা দিয়ে আলোচিত জুটি ওঠে। উত্তম-সুচিত্রা জুটির উল্লেখযোগ্য চলচ্চিত্র হলো- হারানো সুর, পথে হল দেরী, চাওয়া পাওয়া, বিপাশা, জীবন তৃষ্ণা সাগরিকা ও সপ্তপদী।

মহানায়ক উত্তম কুমার অভিনয় জীবনে প্রায় দুই শতাধিক ছবিতে অভিনয় করেন। তার অভিনীত উল্লেখযোগ্য চলচ্চিত্রের মধ্যে আছে- অ্যান্টনি ফিরিঙ্গি, নায়ক, পথে হলো দেরি, অগ্নিপরীক্ষা, সপ্তপদী, ঝিন্দের বন্দী, হারানো সুর, সাগরিকা, পুত্রবধূ, চাঁপা ডাঙার বৌ, রাই কমল, চৌরঙ্গী, নিশিপদ্ম, বন পলাশীর পদাবলী, ওগো বধূ সুন্দরী।

সত্যজিৎ রায়ের পরিচালনায় ‘নায়ক’ ও ‘চিড়িয়াখানা’ ছবিতে গোয়েন্দা ব্যোমকেশ বক্সীর ভূমিকায় অভিনয় করেছিলেন তিনি।

তার অভিনীত হিন্দি চলচ্চিত্রের মধ্যে আছে- অমানুষ, ছোটিসি মুলাকাত, আনন্দ আশ্রম।

উত্তম কুমার অভিনয়ের পাশাপাশি গান খুব পছন্দ করতেন। গান তার জীবনের একটা অংশ ছিল। নিজের গাওয়া গানে অভিনয়ও করেছেন উত্তম কুমার। ১৯৫৬ সালে ২৮ ডিসেম্বর মুক্তি পাওয়া দেবকীকুমার বসু পরিচালিত ‘নবজন্ম’ চলচ্চিত্রে নচিকেতা ঘোষের সুরে মোট ৬টি গানে কণ্ঠ দেন তিনি। এরমধ্যে উল্লেখযোগ্য দুটি গান হলো- ‘কানু কহে রাই, কহিতে ডরাই’ ও ‘আমি আঙুল কাটিয়া’।

উত্তম কুমার ১৯৬৭ সালে ‘অ্যান্টনি ফিরিঙ্গি’ ও ‘চিড়িয়াখানা’ চলচ্চিত্রে অভিনয় করে জাতীয় পুরস্কার পান। তখন এই পুরস্কার ‘ভরত’ নামে পরিচিত ছিল। ১৯৫৭ সালে অজয় কর পরিচালিত ‘হারানো সুর’ ছবিতে অভিনয় করে পান রাষ্ট্রপতির সার্টিফিকেট অফ মেরিট।

উত্তম কুমার গৌরী দেবীর সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। তাদের একমাত্র সন্তান গৌতম চট্টোপাধ্যায় ক্যানসারে আক্রান্ত হয়ে ৫৩ বছর বয়সে মারা যান। উত্তম কুমারের এক মাত্র নাতি গৌরব চট্টোপাধ্যায়।

১৯৮০ সালের ২৪ জুলাই পরলোকগমন করেন উত্তম কুমার মারা যান। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত দীর্ঘ ১৭ বছর অভিনেত্রী সুপ্রিয়া দেবীর সঙ্গে ছিলেন উত্তম কুমার।

Comments

The Daily Star  | English

Please don't resign: An appeal to Prof Yunus

A captain cannot abandon ship, especially when the sea is turbulent

9h ago