বার্সা ছাড়তে চাওয়ার সিদ্ধান্ত কতোটা কঠিন ছিল, জানালেন মেসি
বার্সেলোনায় ২০ বছর ধরে আছেন লিওনেল মেসি। শহরটির সঙ্গে আত্মার সম্পর্ক গড়ে উঠেছে। তারপরও এ সম্পর্ক ভাঙতে চেয়েছিলেন তিনি। আর সিদ্ধান্ত নেওয়াটা বেশ কঠিন ছিল মেসির জন্য। রীতিমতো নিজের সঙ্গে যুদ্ধ করতে হয়েছে তাকে। সঙ্গে তার পরিবারকেও। ক্রীড়াভিত্তিক ওয়েবসাইট গোলডটকমকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে সে সব আবেগ ঘন কথা জানিয়েছেন রেকর্ড ছয় বারের ব্যালন ডি'অর জয়ী এ তারকা।
দুই দশক বার্সেলোনাতে কাটালেও মেসির জন্ম আর্জেন্টিনার রোজারিওতে। শৈশবের পুরোটাই কেটেছে সেখানে। কিন্তু তার তিন সন্তানের জন্ম এই বার্সেলোনাতেই। শহরটির সঙ্গে তার সন্তানদের সম্পর্কটা যে আরও নীবির। এ শহরকে ছেড়ে যাওয়া তাই তার পরিবারের জন্য ছিল আরও কঠিন। তাই মেসির বার্সা ছাড়ার সিদ্ধান্তের কথা শুনেই হাউমাউ করে কেঁদেছিল তার স্ত্রী-সন্তানরা।
সাক্ষাৎকারে মেসি বলেছেন, 'আমি যখন আমার স্ত্রী এবং বাচ্চাদের কাছে (বার্সা) ছাড়ার ইচ্ছার কথা জানিয়েছিলাম, তখন নির্মম এক নাটকের অবতারণা হয়েছিল। পুরো পরিবার কাঁদতে শুরু করেছিল। আমার বাচ্চারা বার্সেলোনা ছেড়ে যেতে চায় না। তারা স্কুলও পরিবর্তন করতে চায় না।'
মাতেও ছোট হওয়ায় তার কাছ থেকে কোনো চাপে পড়েননি মেসি। কিন্তু বড় দুই সন্তানের চোখের পানি কষ্ট দিয়েছে মেসিকে, 'মাতেও এখনও ছোট এবং সে অন্য কোথাও যাওয়ার এবং কয়েক বছর অন্য কোথাও জীবনযাপন করার অর্থ কী তা বোঝে না।
'থিয়াগো, ওর বয়স একটু বেশি। সে টিভিতে শুনেছিল এবং কিছুটা জানতে পেরে আমাকে প্রশ্ন করেছিল। আমি তাকে বাধ্য হয়ে ক্লাব থেকে চলে যাওয়া নিয়ে কিছু জানাতে চাইনি কিংবা নতুন স্কুলে থাকা নিয়ে বা নতুন বন্ধু তৈরি করা নিয়ে।
'সে কাঁদতে কাঁদতে আমাকে ডেকে বলল, " আমরা না যাই "। আমি আবারও বলছি যে, এটা ছিল ভীষণ কষ্টদায়ক।'
তবে শুধু যে সন্তানরাই কষ্ট পাচ্ছিলেন তাও নয়, মেসি নিজেও কষ্ট পাচ্ছিলেন বলে জানান, 'এটা বোধগম্য ছিল। এটা আমার সঙ্গেও ঘটেছিল। এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া খুব কঠিন।'
'আমি বার্সেলোনাকে ভালোবাসি এবং আমি কোথাও এর চেয়ে ভাল জায়গা খুঁজে পাচ্ছি না। তবুও সিদ্ধান্ত নেওয়ার অধিকার আমার আছে। আমি নতুন লক্ষ্য এবং নতুন চ্যালেঞ্জের সন্ধান করতে যাচ্ছিলাম।
'আমার ছেলে, আমার পরিবার এখানে বড় হয়েছে এবং তারা এখানকার। চলে যেতে চাওয়ার ইচ্ছার ব্যাপারে কোনো ভুল ছিল না। আমার এটা দরকার ছিল, ক্লাবের এটা প্রয়োজন ছিল এবং এটা সবার জন্য ভালো হতো।'
কষ্ট পেয়েছেন মেসির স্ত্রীও, তারপরও তাকে সমর্থন দিয়েছেন বলে জানালেন এ আর্জেন্টাইন, 'আমার স্ত্রী, আত্মায় ব্যথা অনুভব করা সত্ত্বেও আমাকে সমর্থন করেছেন এবং পাশে থেকেছেন।'
Comments