চীন-পাকিস্তান অর্থনৈতিক করিডোর প্রকল্পের প্রধানের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ

চীন-পাকিস্তান অর্থনৈতিক করিডোর অথরিটির চেয়ারম্যান সাবেক আর্মি জেনারেল অসীম সালেম বাজওয়ার বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। ছবি: ফেসবুক

চীন-পাকিস্তান অর্থনৈতিক করিডোরের (সিপিইসি) চেয়ারম্যান ও পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের বিশেষ সহকারী অসীম সালেম বাজওয়ার বিরুদ্ধে বড় ধরনের দুর্নীতির কেলেঙ্কারির অভিযোগ উঠেছে।

সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট জানায়, ওই দুর্নীতির ঘটনাটি পাকিস্তানের ঘরোয়া বিষয় হলেও তাতে চীনের হস্তক্ষেপের সুযোগ রয়েছে।

পাকিস্তানের অবসরপ্রাপ্ত জেনারেল অসীম সালেম বাজওয়াকে নিয়ে অনুসন্ধানী সংবাদ পোর্টাল ‘ফ্যাক্ট ফোকাস’-এ প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, অসীম সালেম বাজওয়ার ভাই, স্ত্রী ও দুই ছেলের চারটি দেশে ৯৯টি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান আছে। এসব প্রতিষ্ঠানের আওতায় পিৎজা ফ্র্যাঞ্চাইজিসহ ১৩৩টি রেস্টুরেন্ট রয়েছে, যার আনুমানিক মূল্য ৩৯.৯ মিলিয়ন ডলার।

গত মাসে এই প্রতিবেদন প্রকাশিত হলেও এতদিন পর্যন্ত এটি পাকিস্তানের মূলধারার গণমাধ্যমের আড়ালে রয়ে গেছে।

গত এপ্রিল মাসে প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী হিসাবে নিযুক্ত হওয়ার পরে বাজওয়া তার সম্পদ ও সম্পদের বিবরণ জনসমক্ষে প্রকাশ করতে বাধ্য হন।

‘ফ্যাক্ট ফোকাস’ এর প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের কাছে সম্পদের বিবরণ জমা দেওয়ার সময় বাজওয়া তার স্ত্রীর ব্যবসায়িক অংশীদারিত্বের বিষয়টি লুকিয়েছিলেন।

এদিকে, ইমরান খানের দল ক্ষমতাসীন পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ এক টুইটে এই দুর্নীতির অভিযোগকে ‘বিদেশে বসে থাকা একটি বিরোধী গোষ্ঠীর ষড়যন্ত্র… ভারতীয় অ্যাজেন্ডা বাস্তবায়নের উদ্দেশ্যে মিথ্যা অভিযোগ’ বলে দাবি করেছে। দুর্নীতির এই অভিযোগটিকে সিপিইসির প্রকল্পে ভারতের আক্রমণ হিসেবে উল্লেখ করেছে দেশটির ক্ষমতাসীন দল।

তবে, দেশটির সাবেক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরীফের মেয়ে ও উত্তরাধিকারী মরিয়ম নওয়াজ মঙ্গলবার বাজওয়ারের সম্পদের তথ্য প্রকাশের দাবি জানিয়ে এ নিয়ে লুকোচুরির অভিযোগ তোলার পর পাকিস্তানের গণমাধ্যমে বিষয়টি নিয়ে তোলপাড় শুরু হয়।

বৃহস্পতিবার রাতে প্রচারিত একটি টিভি সাক্ষাৎকারে ইমরান খানের বিশেষ সহকারী হিসেবে মন্ত্রিসভা থেকে পদত্যাগ করার ঘোষণা দেন বাজওয়া। তবে সিপিইসি কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করে যাওয়ার কথা জানান তিনি।

সমালোচকরা বলছেন, মূলত তদন্ত এড়ানোর জন্য এবং জনগণের চোখ ফাঁকি দিতে বাজওয়া গণমাধ্যমে এমন ঘোষণা দিয়েছেন। তিনি যতদিন কোনো পদের দায়িত্বে থাকবেন ততদিন তিনি ও তার পরিবারের অসৎ ব্যবসা চলবে বলে অভিযোগ উঠেছে।

এদিকে, চীনা বিশ্লেষকরা বলছেন, বাজওয়ার বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ চীন ও পাকিস্তানের গুরুত্বপূর্ণ কূটনৈতিক সম্পর্ক ও ভূ-রাজনৈতিক জটিলতা তৈরি করতে পারে।

সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট জানায়, যদিও প্রাথমিকভাবে এটি একটি ঘরোয়া ইস্যু, কিন্তু পাকিস্তানের সিপিসিই প্রকল্পের প্রধানকে যখন এই ধরনের দুর্নীতির জন্য অভিযুক্ত করা হয়, তখন এটি দুই দেশের দৈত্যাকার প্রকল্পগুলোর জন্য একটি বড় সমস্যা। এক্ষেত্রে পাকিস্তানের ঘরোয়া বিষয়েও চাপ তৈরি করতে পারে চীন।

Comments

The Daily Star  | English

No price too high for mass deportations

US President-elect Donald Trump has doubled down on his campaign promise of the mass deportation of illegal immigrants, saying the cost of doing so will not be a deterrent.

4h ago