লাদাখ সীমান্তের কাছে ২টি নতুন রানওয়ে নির্মাণ করছে চীন

চীনের হোটান বিমানঘাঁটিতে আরও অন্তত দুইটি নতুন রানওয়ে নির্মাণ করা হচ্ছে। (রয়টার্স ফাইল ফটো)

গত জুনে ভারত-চীনের মধ্যকার সীমান্ত উত্তেজনা শুরুর পর থেকেই নিজেদের সামরিক ব্যবস্থা জোরদারে কাজ করছে চীন। এরই জেরে লাদাখের পশ্চিমাঞ্চলে অবস্থিত চীনের হোটান বিমানঘাঁটিতে আরও অন্তত দুইটি নতুন রানওয়ে নির্মাণ করা হচ্ছে। গত জুনের শেষে রানওয়ে দুইটির নির্মাণ কাজ শুরু করে চীন। একইসঙ্গে গোলাবারুদ সংরক্ষণের জন্য হোটানে একটি ভবনও তৈরি করা হচ্ছে।

আজ রোববার ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়া টুডের প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, চীনের হোটান বিমানঘাঁটির অবস্থান কারাকোরাম গিরিপথ থেকে ২৫০ কিলোমিটার দূরে এবং লাদাখের প্যাংগং সো-র ফিঙ্গার ফোর এলাকা থেকে ৩৮০ কিলোমিটার দূরে।

হোটান ঘাঁটিতে বর্তমানে তিন হাজার ৩৩০ মিটার র্দীঘ ও ৬০ মিটার প্রশস্তের একটি রানওয়ে রয়েছে। সম্প্রতি স্যাটেলাইট থেকে পাওয়া ছবিতে দেখা গেছে, গত জুনের শেষ থেকে অন্তত দুইটি নতুন রানওয়ে নির্মাণের কাজ শুরু করেছে চীন। ধারণা করা হচ্ছে, আগের রানওয়ের কাছেই অবস্থিত রানওয়ে দুটি চার কিলোমিটার দীর্ঘ ও ৬০ মিটার প্রশস্ত। নিজেদের বিমানঘাঁটি আরও শক্তিশালী করতেই নতুন রানওয়ে নির্মাণ করছে চীন।

গোলাবারুদ সংরক্ষণের ভবনের বিষয়ে প্রতিবেদনে বলা হয়, চীন তাদের ঘাঁটিতে শক্তিশালী যুদ্ধবিমান জে-২০ যদি স্থায়ীভাবে রাখতে চায়, তাহলে তাদেরকে অবশ্যই গোলাবারুদ সংরক্ষণে আরও ভবন নির্মাণ করতে হবে।

সীমান্তে চলমান উত্তেজনা বিষয়ে গতকাল রাশিয়ার রাজধানী মস্কোর মেট্রোপোল হোটেলে বৈঠক করেন ভারতীয় প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং ও চীনের প্রতিরক্ষামন্ত্রী জেনারেল উই ফেঙ্গ। সীমান্তে অন্তত ২০ জন সৈন্য মারা যাওয়ার পর এটিই দুই দেশের মধ্যে প্রতিরক্ষা পর্যায়ের প্রথম বৈঠক।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, বৈঠকে বেইজিং জানিয়েছে, ‘চীন এক ইঞ্চিও জমি ছাড়বে না। দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষায় ও অখণ্ডতা বজায় রাখতে চীনের সেনাবাহিনী দৃঢ়প্রতিজ্ঞ, সক্ষম ও আত্মবিশ্বাসী।’ বৈঠকে সীমান্ত উত্তেনায় উভয় পক্ষই একে অপরকে দোষারোপ করেছে।

যদিও সীমান্ত উত্তেজনা কমাতে একসঙ্গে কাজ করার ব্যাপারে একমত হয়েছে ভারত ও চীন, তবে সাম্প্রতিক উত্তেজনার জন্য ভারতকে দায়ী করে ‘উস্কানিমূলক কর্মকাণ্ড’ থেকে বিরত থাকতে নয়াদিল্লির প্রতি আহ্বান জানিয়েছে বেইজিং। গতকাল ভারতের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, উভয় দেশই একমত হয়েছে যে ‘কারোরই এমন কিছু করা উচিত না যা পরিস্থিতি আরও জটিল করতে পারে বা সীমান্তে উত্তেজনা বাড়িয়ে তুলতে পারে।’ চীনের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা দুই দেশের বৈঠক নিয়ে এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ভারতকে তার বাহিনীকে নিয়ন্ত্রণ, উস্কানিমূলক তৎপরতা বন্ধ এবং উদ্দেশ্যমূলক নেতিবাচক প্রোপাগান্ডা থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানিয়েছে চীন।

গত ১৫ জুন লাদাখের গালওয়ান ভ্যালিতে চীন ও ভারতের সেনাদের মধ্যে মারামারিতে অন্তত ২০ ভারতীয় সেনা নিহত হন। চীনও তাদের সেনাদের হতাহত হওয়ার কথা স্বীকার করলেও কোনও সংখ্যা প্রকাশ করেনি। উভয় দেশই গত জুনে সংঘর্ষের পর সীমান্তে অতিরিক্ত বাহিনী মোতায়েন করেছে।

আরও পড়ুন:

ভারতকে ‘উস্কানিমূলক কর্মকাণ্ড’ থেকে বিরত থাকার আহ্বান চীনের

সীমান্ত উত্তেজনা নিয়ে চীন ও ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রীর বৈঠক

Comments

The Daily Star  | English

Large-scale Chinese investment can be game changer for Bangladesh: Yunus

The daylong conference is jointly organised by Bangladesh Economic Zones Authority and Bangladesh Investment Development Authority

1h ago