সাইবেরিয়ার তুন্দ্রায় রহস্যময় গভীর খাদের সন্ধান

এই গ্রীষ্মে সাইবেরিয়ার তুন্দ্রা অঞ্চলের উপর দিয়ে উড়োজাহাজে যাওয়ার সময় প্রায় ৩০ মিটার (১০০ ফুট) গভীর ও ২০ মিটার প্রশস্ত একটি গভীর খাদ দেখেছেন রাশিয়ার এক গণমাধ্যম কর্মী। বিশাল ওই গর্তটির আকার ও গঠন বলছে প্রকৃতির কোনো বিস্ফোরক শক্তি থেকেই এটি তৈরি হয়েছে।
ছবি: সংগৃহীত

এই গ্রীষ্মে সাইবেরিয়ার তুন্দ্রা অঞ্চলের উপর দিয়ে উড়োজাহাজে যাওয়ার সময় প্রায় ৩০ মিটার (১০০ ফুট) গভীর ও ২০ মিটার প্রশস্ত একটি গভীর খাদ দেখেছেন রাশিয়ার এক গণমাধ্যম কর্মী। বিশাল ওই গর্তটির আকার ও গঠন বলছে প্রকৃতির কোনো বিস্ফোরক শক্তি থেকেই এটি তৈরি হয়েছে।

আজ শনিবার মার্কিন সংবাদ মাধ্যম সিএনএন এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, এই অঞ্চলে ২০১৩ সাল থেকে এই পর্যন্ত মোট নয়টি খাদ খুঁজে পাওয়া গেছে। বিশাল খাদগুলো তৈরির পেছনের কারণ নিয়ে গবেষকরা এখনো নিশ্চিত হতে পারেননি।

উত্তর-পশ্চিম সাইবেরিয়ার ইয়ামাল উপদ্বীপে তেল ও গ্যাসক্ষেত্রের কাছে প্রথমবারের মতো গভীর খাদ আবিষ্কার করা হয়েছিল। তখন প্রাথমিকভাবে বিচিত্র ধরনের কিছু তত্ত্ব উঠে আসে। যেমন, একটি উল্কাপাতের প্রভাবে তৈরি হয়েছে, কোনো ইউএফও সেখানে অবতরণ করেছে অথবা কোনো গোপন আন্ডারগ্রাউন্ড সামরিক অবকাঠামো সেখানে ধসে পড়ার কারণে বিশাল গর্ত তৈরি হয়েছে।

তবে, এসব কারণে কোনোটার প্রমাণ পাওয়া যায়নি।

বিজ্ঞানীদের বিশ্বাস, দৈত্যকার গর্তটি মিথেন গ্যাসের কোনো একটি বিস্ফোরকের কারণে হতে পারে। যা এই অঞ্চলে তাপমাত্রা বেড়ে যাওয়ার ফলে হয়েছে। তবে, এ বিষয়ে এখানো অনেক তথ্য গবেষকদের অজানা।

চলতি বছর খুঁজে পাওয়া নতুন গর্তটির আকাশ থেকে তোলা ছবিতে দেখা গেছে, এটি এখন পর্যন্ত আবিষ্কৃত সবচেয়ে বড় খাদগুলোর একটি। ২০২০ সালের আগস্টে স্থানীয় ইয়ামাল কর্তৃপক্ষের সহায়তায় আরএএস ইনস্টিটিউট অব অয়েল অ্যান্ড গ্যাস প্রবলেমস নামের একটি সংস্থা ওই খাদটিতে একটি অভিযান পরিচালনা করেছে।

স্কলটেক গবেষকরা সেই অভিযানের চূড়ান্ত পর্যায়ের অংশ নেন।

স্কলকোভো ইনস্টিটিউট অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজির সেন্টার ফর হাইড্রোকার্বন রিকভারি বিভাগের শীর্ষস্থানীয় গবেষক বিজ্ঞানী অ্যাভজেনি চুভলিন নতুন খাদটি পরিদর্শন করেছেন।

সিএনএনকে তিনি বলেন, ‘এই মুহূর্তে এই জটিল ঘটনার কোনো স্পষ্ট ব্যাখ্যা বা কীভাবে এই খাদ তৈরি হয়েছে সে সম্পর্কে কোনো একক তত্ত্ব নেই। এমনো হতে পারে যে বছরের পর বছর ধরে খাদগুলো তৈরি হয়েছে। কিন্তু, কত বছর ধরে সেগুলো তৈরি হয়েছে সেই সংখ্যাটি অনুমান করা কঠিন।

তিনি জানান, যেহেতু খাদগুলো আর্কটিকের জনশূন্য অঞ্চলেই তৈরি হয়েছে, তাই সেগুলো দেখার ও রিপোর্ট করার মতো মানুষ সেখানে নেই। এমনকি এখনো অধিকাংশ খাদই রুটিনমাফিক হেলিকপ্টার টহলের সময় কিংবা এখানে শিকার করতে আসা মানুষেরা খুঁজে পেয়েছেন।

এই অঞ্চলের পারমাফ্রস্ট মিথেনের একটি বিশাল প্রাকৃতিক ভাণ্ডার, যা রাশিয়ার ভূখন্ডের দুই-তৃতীয়াংশের সমান।

গবেষকরা বলেন, মিথেন একটি শক্তিশালী গ্রিনহাউস গ্যাস। এই অঞ্চলে ২০২০ সালসহ সাম্প্রতিক বছরগুলোতে গ্রীষ্মকালে গরমের তীব্রতার সঙ্গে মিথেনের প্রতিক্রিয়া এই খাদগুলো তৈরিতে ভূমিকা রাখতে পারে।

Comments

The Daily Star  | English

3 quota protest leaders held for their own safety: home minister

Three quota protest organisers have been taken into custody for their own safety, said Home Minister Asaduzzaman Khan

32m ago