করোনা পরিস্থিতি

প্রবাসীদের ফিরে আসা ‘আশঙ্কাজনক’ নয়: প্রবাসী কল্যাণমন্ত্রী

করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে বিদেশে থেকে ফেরত আসা বাংলাদেশি কর্মীর সংখ্যা ‘আশঙ্কাজনক’ নয় বলে জানিয়েছেন প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থানমন্ত্রী ইমরান আহমদ।
Minister_Emran_Ahmed.jpg
প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থানমন্ত্রী ইমরান আহমদ। ছবি: সংগৃহীত

করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে বিদেশে থেকে ফেরত আসা বাংলাদেশি কর্মীর সংখ্যা ‘আশঙ্কাজনক’ নয় বলে জানিয়েছেন প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থানমন্ত্রী ইমরান আহমদ।

আজ বুধবার সংসদে এক বিবৃতিতে মন্ত্রী বলেন, ‘কারোনার কারণে বিভিন্ন দেশে ডিপোর্টেশন সেন্টারে থাকা অনিয়মিতদের নিজ নিজ দেশে ফেরত পাঠানোর কারণে আমাদের কর্মীদের একটি ক্ষুদ্র অংশ দেশে ফেরত এসেছে।’

‘প্রবাসী কল্যাণ ডেস্কের তথ্য অনুযায়ী, গত ১ এপ্রিল থেকে ৬ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত এক লাখ ১১ হাজার ১১১ জন কর্মী দেশে ফেরত এসেছেন। তাদের অনেকেই কাজের মেয়াদ শেষে বা কাজ না থাকায় দেশে ফেরত এসেছেন। যদিও আশঙ্কা করা হয়েছিল অর্থনৈতিক মন্দা এবং করোনার কারণে প্রধান কর্মী নিয়োগকারী দেশগুলোর শ্রমবাজার বিপর্যস্ত হওয়ার কারণে অনেক কর্মী বেকার হয়ে পড়বেন। কিন্তু আশার কথা এই যে এখন পর্যন্ত ফেরত আসা কর্মীর সংখ্যা আশঙ্কাজনক হয়ে উঠে নাই। এ ক্ষেত্রে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় একযোগে ভূমিকা পালন করার কারণে এই অবস্থা’— বলেন ইমরান আহমদ।

করোনা পরিস্থিতিতে বৈশ্বিক শ্রমবাজারে বাংরাদেশের অবস্থান এবং উদ্যোগ নিয়ে সংসদের কার্যপ্রণালী বিধির ৩০০ বিধিতে এই বিবৃতি দেন মন্ত্রী ইমরান।

তিনি বলেন, ‘করোনাভাইরাস মহামারী এবং বৈশ্বিক অর্থনৈতিক মন্দার কারণে বিশ্বব্যাপী শ্রম বাজার হুমকির সম্মুখীন হয়েছে। অন্যতম কর্মী প্রেরণকারী দেশ হিসেবে বাংলাদেশের জন্য একটি চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখা দিয়েছে। বিভিন্ন গণমাধ্যমে শ্রমবাজার নিয়ে সংবাদ পরিবেশিত হওয়ায় এই সম্পর্কে বিভ্রান্তি দূর করতে এবং শ্রম বাজারের সর্বশেষ তথ্য প্রদানের জন্য মন্ত্রী হিসেবে এই বিবৃতির প্রদান যৌক্তিক বলে মনে করছি।’

‘বিগত বছরগুলোর হিসাব অনুযায়ী, বাংলাদেশ থেকে প্রায় প্রতি মাসে ৬০ হাজার কর্মী বিদেশে গিয়েছেন। ২০১৯ সালের জানুয়ারি-অগাস্ট মাসে চার লাখ ৬০ হাজার কর্মী বিদেশে গিয়েছেন। কিন্তু অগাস্ট ২০২০ পর্যন্ত মাত্র এক লাখ ৭৬ হাজার কর্মী বিদেশে গিয়েছেন। এর কারণ হলো এ বছরের এপ্রিল থেকে অগাস্ট পর্যন্ত কোনো কর্মী বিদেশে যেতে পারেনি বলা চলে’— বলেন ইমরান আহমদ।

বিদেশে থাকা বাংলাদেশি কর্মীর সংখ্যা এক কোটির বেশি। করোনাভাইরাস মহামারীর কারণে অনেককেই দেশে ফেরত আসতে হয়েছে। এপ্রিলের আগে যারা ছুটিতে দেশে এসে আটকা পড়েছেন, তাদের সংখ্যা ধরলে এই সংখ্যা পৌনে তিন লাখ ছাড়িয়ে যাবে বলে ব্র্যাকের অভিবাসন কর্মসূচি মনে করছে।

সংসদে দেওয়া বিবৃতিতে প্রবাসী কল্যাণমন্ত্রী ইমরান দেশে ফেরত আসা কর্মীদের পুনর্বাসনে কথা তুলে ধরে বলেন, ‘যেসব কর্মী ফিরে এসেছেন বা আসবেন তাদের সামাজিক ও অর্থনৈতিক পুর্বাসনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। করোনা সংকট মোকাবিলায় বিদেশে থাকা কর্মীদের জন্য ১৩ কোটি টাকার জরুরি ত্রাণ সহায়তা দেওয়া হয়েছে। কর্মীদের দেশে আনা এবং ফেরত আসাদের রিইন্টিগ্রেশনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।’

বৈশ্বিক মন্দার মধ্যে দেশে রেমিট্যান্স প্রবাহ বেশি হওয়ায় প্রবাসী কর্মীদের ধন্যবাদ জানান মন্ত্রী। একইসঙ্গে রেমিট্যান্সে দুই শতাংশ ইনসেনটিভ দেওয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রীকেও ধন্যবাদ জানান তিনি। তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর দূরদর্শী উদ্যোগের জন্যই রেমিট্যান্সের ঊর্ধ্বগতি।’

ইমরান আহমদ আরও বলেন, ‘সম্প্রতি আমাদের আন্তরিক প্রচেষ্টা সত্বেও কিছু দেশে আমাদের কর্মীরা অনাকাঙ্ক্ষিত বিষয়ের শিকার হয়েছেন। এদের মধ্যে অনেকই বৈধভাবে বিদেশে যাননি। এর সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনি ও শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।’

প্রবাসী কর্মীদের করোনাভাইরাস টেস্ট ফি ১০০ টাকা করতে প্রধানমন্ত্রী ও স্বাস্থ্যমন্ত্রীর কাছে দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, ‘তারা আমাদের দেশের নাগরিক। বিদেশে গিয়ে আমাদের দেশের জন্য বৈদেশিক মুদ্রা পাঠাচ্ছেন। সাধারণ মানুষের কাছ থেকে যে ফি নেওয়া হচ্ছে, তাদের কাছ থেকেও যেন একই ফি নেওয়া হয়।’

Comments

The Daily Star  | English

One month of interim govt: Yunus navigating thru high hopes

A month ago, as Bangladesh teetered on the brink of chaos after the downfall of Sheikh Hasina, Nobel Laureate Muhammad Yunus returned home to steer the nation through political turbulences.

6h ago