সুরসম্রাজ্ঞী ফিরোজা বেগমের মৃতুদিনে তেমন কোনো আয়োজন ছিল না
নজরুল সংগীতের সুরসম্রাজ্ঞী ফিরোজা বেগমের মৃত্যুদিন আজ। ছয় বছর আগে ২০১৪ সালের ৯ সেপ্টেম্বর না ফেরার দেশে পাড়ি জমান তিনি। তবে, তাকে নিয়ে আজ তেমন কোনো আয়োজনের খবর পাওয়া যায়নি। অনেকটা নীরবেই চলে গেলো বরেণ্য এই শিল্পীর মৃত্যুদিন।
নজরুল সংগীতের এক অনন্য প্রতিষ্ঠান ছিলেন তিনি। নজরুল সংগীত ছাড়াও সঙ্গীতের বিভিন্ন শাখায় দক্ষতার স্বাক্ষর রেখেছেন। প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবেন এই কিংবদন্তি।
ফিরোজা বেগম ১৯৩০ সালের ২৮ জুলাই ফরিদপুরের গোপালগঞ্জে জন্মগ্রহণ করেন। সম্ভ্রান্ত মুসলিম জমিদার পরিবারের সন্তান ছিলেন। সংগীতের প্রতি অনুরাগী ছিলেন ছোটবেলা থেকেই। ষষ্ঠ শ্রেণিতে পড়া অবস্থায় অল ইন্ডিয়া রেডিওতে গান করার সুযোগ পান।
কলকাতায় মামার বসবাসের সুবাদে সেখানে যান তিনি। গুণীজনদের গান শুনিয়ে প্রশংসিত হন সেই সময়ে। কবি কাজী নজরুল ইসলামকে না চিনেই তার সামনে গান করেন। এরপর কবির সান্নিধ্য পান এবং কবির কাছে গানের তালিম নেওয়ার সৌভাগ্যও হয়েছিল ফিরোজা বেগমের।
১৯৪২ সালে মাত্র ১২ বছর বয়সে আনুষ্ঠানিকভাবে আত্মপ্রকাশ হয় শিল্পীর। বিখ্যাত গ্রামোফোন কোম্পানি এইচএমভি থেকে তার গাওয়া ইসলামী গানের রেকর্ড বের হয়। সংগীতে তার প্রথম রেকর্ড প্রকাশ হয় ১৯৪৯ সালে। এরপর তিনি বেশ কিছু নজরুল সংগীত অ্যালবাম প্রকাশ করেন।
ফিরোজা বেগমের মোট ১২টি এলপি, ৪টি ইপি, ৬টি সিডি ও ২০টিরও বেশি অডিও ক্যাসেট প্রকাশিত হয়েছে। তিনি পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে ৩৮০টিরও বেশি একক সংগীতানুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেন।
বরেণ্য কণ্ঠশিল্পী ফিরোজা বেগম ১৯৫৫ সালে কলকাতার গায়ক, গীতিকবি ও সুরকার কমল দাশগুপ্তকে বিয়ে করেন। ১৯৬৭ সালে তারা ঢাকায় আসেন। তাদের তিন সন্তান তাহসিন আহমেদ, হামিন আহমেদ ও শাফিন আহমেদ। এর মধ্যে হামিন ও শাফিন বাংলাদেশের জনপ্রিয় ব্যান্ড ‘মাইলস’-এর অন্যতম সদস্য।
দেশের প্রায় সব সম্মাননাই পেয়েছেন ফিরোজা বেগম। সর্বোচ্চ রাষ্ট্রীয় সম্মান স্বাধীনতা পদক, একুশে পদক, বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি স্বর্ণপদক ছাড়া ভারতের ‘বঙ্গ সম্মান’সহ অনেক পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন তিনি।
Comments