মাছ নেই তিস্তা-ধরলায়
ভরা মৌসুমে কাঙ্ক্ষিত পরিমাণে মাছ ধরা পড়ছে না লালমনিরহাটের তিস্তা ও ধরলা নদীতে। পুরো দিন নদীতে জাল ফেলেও সংসার চালাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে জেলেদের। তারা বলছেন, গত বছরের তুলনায় তিস্তা ও ধরলায় এবার অর্ধেক মাছ উঠছে জালে। আনুমানিক ছয় থেকে সাত বছর ধরে ক্রমাগত মাছ কমছে জেলার প্রধান দুই নদীতে।
প্রতিবছর ভরা মৌসুমের অপেক্ষা করেন জেলেরা। এই সময়ের আয় দিয়ে তারা বাড়ি-ঘর ও নৌকা মেরামত করেন এবং নতুন জাল, নৌকা কেনেন। এবার ভরা মৌসুমেও তাদের সংসার চলছে না।
যতীন চন্দ্র দাসের বাড়ি লালমনিরহাটের সদর উপজেলার সারপুকুর ইউনিয়নের জেলেপাড়ায়। তিনি বলেন, ‘আমরা চার জন ভোরে তিস্তায় মাছ ধরতে যাই। পাঁচ-ছয় ঘণ্টা জাল ফেললে ছয়-সাত কেজি মাছ উঠে। সেই মাছ বাজারে বিক্রি করলে প্রত্যেকের ভাগে তিন শ টাকাও থাকে না। আমরা গেল বছর এ সময় তিস্তা নদীতে ১৫ কেজি পর্যন্ত ধরেছি।’
একই গ্রামের জেলে সুভাষ চন্দ্র দাস বলেন, ‘প্রতিবছর আমরা ভরা মৌসুমের অপেক্ষায় থাকি। এবার ভরা মৌসুমেও আমরা নিরাশ হচ্ছি।’
লালমনিরহাট সদর উপজেলার কুলাঘাট ইউনিয়নের মাঝিপাড়া গ্রামের জেলে সত্যেন চন্দ্র দাস বলেন, ধরলা নদীতেও মিলছে না কাঙ্ক্ষিত পরিমাণে মাছ। এক ছেলেকে সঙ্গে নিয়ে ভোর থেকে দুপুর পর্যন্ত চার কেজি মাছ ধরতে পারি না। গত বছর এই সময়ে দুপুরের মধ্যে ১০ কেজি মাছ ধরেছি। বর্তমানে মাছ ধরে যে আয় করছি, তা দিয়ে সংসার চলছে কিন্তু সঞ্চয় করতে পারছি না।’
লালমনিরহাট জেলা মৎস্য অধিদপ্তর সূত্র জানায়, জেলায় প্রায় ২০ হাজার মৎস্যজীবী আছেন। এদের মধ্যে সাড়ে সাত হাজার জেলে মৎস্য অধিদপ্তরের তালিকাভুক্ত।
জেলা মৎস্য কর্মকর্তা এএসএম রাসেল দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘দিন দিন তিস্তা ও ধরলা নদীসহ অন্য সব নদীতেই মাছের পরিমাণ কমে আসছে। এর প্রধান কারণ হলো, শুষ্ক মৌসুমে নদীগুলো শুকিয়ে যায় এবং জেলেরা নিষিদ্ধ জাল ব্যবহার করেন। মা মাছ, এমনকি পোনাও শিকার করেন জেলেরা। এর প্রভাব পড়ে ভরা মৌসুমে।’
Comments