নৌকাবাইচে উৎসবমুখর চলনবিল
বন্যার পর পানিতে পরিপূর্ণ চলনবিল তার সৌন্দর্য মেলে ধরেছে। চলনবিলের সৌন্দর্য উপভোগ করতে আসা দর্শনার্থীদের জন্য প্রতিবছরের মতো এবারও আয়োজন করা হয়েছে নৌকা বাইচ।
গতকাল শুক্রবার বিকেলে চলনবিলের ফরিদপুর উপজেলার হাটগ্রামের সোনালি সৈকতে শুরু হওয়া এবারের মাসব্যাপী নৌকাবাইচে অংশ নিচ্ছে বিভিন্ন জেলার ৩২টি নৌকা। করোনা ঝুঁকির মধ্যেই প্রতিদিন বাইচ দেখতে আসছেন হাজারো মানুষ।
পাবনা-সিরাজগঞ্জের সংরক্ষিত আসনের সংসদ সদস্য নাদিরা ইয়াসমিন জলি আয়োজন উদ্বোধন করে বলেন, ‘নৌকা বাইচ নদীমাতৃক বাংলাদেশের ঐতিহ্যকে ধারণ করে বছরের পর বছর ধরে চলে আসছে। যদিও নদ-নদী শুকিয়ে যাওয়ায় কালের আবর্তে অনেক এলাকা থেকেই হারিয়ে গেছে নৌকা বাইচের উৎসব তবে চলনবিলের মানুষ চিরায়িত বাঙ্গালির অতীত ঐতিহ্যকে আবার ফিরিয়ে এনেছে।’
হাদল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. সেলিম হোসেন দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘চলনবিলের প্রতিটি কানা এখন পানিতে পূর্ণ। প্রতিবছর চলনবিলের মানুষ নৌকা বাইচের আয়োজন করে যা চলনবিলের অন্যতম বৃহত্তম উৎসবে পরিণত হয়েছে। চলনবিলের এ উৎসবকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিয়ে এ বছর হাদল ইউনিয়ন পরিষদের উদ্যোগে মাসব্যাপী এ নৌকা বাইচের আয়োজন করা হয়েছে।’
নৌকাবাইচ দেখতে আসা পাবনার মিজান তাঞ্জিল দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘সোনালি সৈকতের চারদিকে যতদূর চোখ যায় শুধু পানি আর পানি, এরই মাঝে নানা রঙের নৌকা সাজিয়ে ছুটে চলেছে। চলনবিলের পাড় ঘেঁষে দাঁরিয়ে আছে হাজার হাজার মানুষ, এ এক অপরূপ দৃশ্য যা নিজ চোখে না দেখলে বিশ্বাস করা যায় না।’
চলনবিলের নৌকাবাইচ ঘিরে হাতগ্রাম এখন উৎসবমুখর। বসেছে নানান পসরার দোকানপাট। তবে এর পরিসর বাড়ানোর দাবি জানিয়েছেন দর্শনার্থীরা।
পাবনা থেকে এসেছেন আমিরুল ইসলাম। তিনি বলেন, এক সময় এলাকার কিছু নৌকা নিয়ে এ বাইচ অনুষ্ঠিত হয়ে থাকলেও এখন উৎসবের কলেবর বেড়েছে। এখন মাসব্যাপী এ উৎসব চলে, যা উপভোগ করতে বিভিন্ন এলাকা থেকে বিপুল মানুষ আসে ফলে এখানে স্থান সংকুলান হয় না।
এ প্রসঙ্গে হাদল ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সেলিম হোসেন বলেন, এ অঞ্চলের মানুষ তাদের নিজেদের উদ্যোগে বছরের পর বছর এ নৌকাবাইচ করে আসছে, এখন তা মাসব্যাপী চলনবিলের সর্ববৃহৎ উৎসবের রূপ নিয়েছে। তিনি বলেন, সরকারের সহযোগিতা পেলে চলনবিলের এ অঞ্চল কে পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলা সম্ভব।
Comments