ইউএনও অফিসের বরখাস্তকৃত কর্মচারী হামলা করেছে: পুলিশ

দিনাজপুরের ঘোড়াঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ওয়াহিদা খানম ও তার বাবা মুক্তিযোদ্ধা ওমর আলী শেখের ওপর হামলার ঘটনায় রবিউল ও নাদিম নামে আরও দুজনকে গ্রেপ্তার দেখিয়েছে পুলিশ। গ্রেপ্তার রবিউল ইউএনও অফিসের বরখাস্তকৃত কর্মচারী এবং তিনি ইউএনও’র ওপর হামলা চালিয়েছেন বলে পুলিশ জানিয়েছে।
গ্রেপ্তার রবিউল ইসলামকে আদালতে হাজির করে ডিবি। ছবি: সংগৃহীত

দিনাজপুরের ঘোড়াঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ওয়াহিদা খানম ও তার বাবা মুক্তিযোদ্ধা ওমর আলী শেখের ওপর হামলার ঘটনায় রবিউল ও নাদিম নামে আরও দুজনকে গ্রেপ্তার দেখিয়েছে পুলিশ। গ্রেপ্তার রবিউল ইউএনও অফিসের বরখাস্তকৃত কর্মচারী এবং তিনি ইউএনও’র ওপর হামলা চালিয়েছেন বলে পুলিশ জানিয়েছে।

আজ শনিবার বিকেলে দিনাজপুর পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে পুলিশের রংপুর রেঞ্জের ডিআইজি দেবদাস ভট্টাচার্য এ কথা জানান।

তিনি বলেন, ‘ঘোড়াঘাটে ইউএনও’র ওপর হামলার ঘটনায় অনেককে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। সম্প্রতি রবিউল ইসলাম নামে একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তিনি ঘটনার সাথে সম্পৃক্ততার কথা স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছেন। তার জবানবন্দি অনুযায়ী আমরা কিছু আলামতও উদ্ধার করেছি। সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করে মিলিয়ে দেখছি।’

তিনি আরও বলেন, ‘আজকে আমরা তাকে বিজ্ঞ আদালতে সোপর্দ করবো এবং রিমান্ড চাইব। রিমান্ডে নিয়ে আমরা তাকে আরও জিজ্ঞাসাবাদ করব এবং ঘটনা সম্পর্কে সম্পূর্ণ তথ্য সংগ্রহ করার চেষ্টা করব। যেহেতু বিষয়টি এখনো চলমান, আমি মনে করি এই পর্যন্তই আমার বক্তব্য। পরবর্তীতে তদন্ত সমাপ্ত হলে আমরা বিস্তারিত জানাতে পারব।’

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘যেহেতু বিষয়টি তদন্ত চলছে, তাই তদন্তধীন বিষয়ে এই মুহূর্তে এর চেয়ে বেশি কিছু বলা ঠিক হবে না, তদন্ত শেষ হলেই আমরা সবকিছু জানাব। ব্যবহৃত অস্ত্রের মধ্যে হাতুড়ি উদ্ধার করা হয়েছে।’

আজ বিকেল পাঁচটায় তাদের দিনাজপুরের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ইসমাইল হোসেনের আদালতে হাজির করা হয়।

এ সময় রবিউল ইসলামের ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা দিনাজপুর ডিবি পুলিশের ওসি ইমাম জাফর। বিচারক শুনানি শেষে তার ছয় দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। তবে, নৈশপ্রহরী নাদিম হোসেন পলাশের রিমান্ড আবেদন না করায় তাকে জেল হাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন বিচারক।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা দিনাজপুর ডিবি পুলিশের ওসি ইমাম জাফর বলেন, ‘এ মামলায় রবিউল ইসলাম ও নাদিম হোসেন পলাশকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে হাজির করা হয়। আদালত রবিউল ইসলামের ছয় দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করায় তাকে শনিবারই রিমান্ডে নেওয়া হয়। অপর আসামি নাদিম হোসেনের রিমান্ড আবেদন করা হয়নি।’

পলাশের পারিবারিক সূত্রের দাবি, ইউএনও অফিসের নৈশ্যপ্রহরী নাদিম হোসেন পলাশকে গত ৩ সেপ্টেম্বর ঘোড়াঘাট ইউএনও অফিস থেকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়। তখন থেকেই তিনি পুলিশি হেফাজতে ছিলেন। তবে, রবিউল ইসলামকে কখন এবং কোথা থেকে আটক করা হয় পুলিশ তা জানায়নি।

গ্রেপ্তারকৃত রবিউল ইসলাম (৩০) দিনাজপুরের বিরল উপজেলার ধামাহার ভীমপুর গ্রামের বাসিন্দা। তিনি ইউএনও অফিসের বরখাস্তকৃত একজন কর্মচারী। ঘোড়াঘাট উপজেলায় মালি হিসেবে কর্মরত থাকা অবস্থায় গত জানুয়ারিতে তাকে ইউএনও ওয়াহিদা খানমের ব্যাগ থেকে টাকা চুরির অভিযোগে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়।

নতুন গ্রেপ্তার দেখানো অপর আসামি নাদিম হোসেন নয়ন (২৬) দিনাজপুর সদর উপজেলার পরজপুর গ্রামের বাসিন্দা। তিনি ঘোড়াঘাট ইউএনও বাসভবনের নৈশ প্রহরী।

এদিকে, মামলার প্রধান আসামি আসাদুল ইসলামের সাত দিনের রিমান্ড শেষ হওয়ায় আজ বিকেলে তাকে আদালতে সোপর্দ করে দিনাজপুর ডিবি পুলিশ। আদালতে আসাদুলের কোনো জবানবন্দি নেওয়া হয়নি। এ ছাড়াও, নতুন করে কোনো রিমান্ড আবেদন করা হয়নি ডিবি পুলিশের পক্ষ থেকে। ফলে, তাকে জেল হাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেয় আদালতের বিচারক দিনাজপুরের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ইসমাইল হোসেন।

গত ৪ সেপ্টেম্বর র‌্যাব-১৩ রংপুর কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে জানায়, আসাদুল ইসলাম চুরির উদ্দেশ্যে ইউএনও’র বাসায় প্রবেশ করে হামলা চালায়। এ কথা আসাদুল ইসলাম স্বীকার করেছেও বলে দাবি করা হয় র‌্যাবের পক্ষ থেকে। র‌্যাবের দেওয়া সেই তথ্য অনুযায়ী আসাদুল ইসলামকে এই মামলার প্রধান আসামী করা হয় এবং তাকে ৭ দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়। কিন্তু, এর ৮ দিন পর পুলিশ বলছে আসাদুল ইসলাম নয় এই হামলার মূল নায়ক রবিউল ইসলাম।

আরও পড়ুন:

Comments

The Daily Star  | English

Abu sayed’s death in police firing: Cops’ FIR runs counter to known facts

Video footage shows police shooting at Begum Rokeya University student Abu Sayed, who posed no physical threat to the law enforcers, during the quota reform protest near the campus on July 16. He died soon afterwards.

9h ago