নতুন পথে, নতুন রঙে ইয়াবা

কক্সবাজারে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণের চলমান অভিযানের কারণে, বিশেষ করে টেকনাফ এড়িয়ে মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে ইয়াবা আনতে নতুন পথ ব্যবহার করা হচ্ছে।

কক্সবাজারে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণের চলমান অভিযানের কারণে, বিশেষ করে টেকনাফ এড়িয়ে মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে ইয়াবা আনতে নতুন পথ ব্যবহার করা হচ্ছে।

নতুন পথে মাদক পরিবহনে বাংলাদেশিদের চেয়ে বেশি ব্যবহার করা হচ্ছে রোহিঙ্গাদের। সবার কাছে পরিচিত কমলা রঙের ইয়াবা ট্যাবলেটের বদলে আনা হচ্ছে সাদা রঙের ট্যাবলেট।

মাদক চোরাকারবারের নতুন পথ বান্দরবান জেলার নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুম সীমান্ত পয়েন্ট হয়ে ইয়াবা আসছে বাংলাদেশে।

কক্সবাজার এবং বান্দরবানভিত্তিক মাদক চোরাকারবারিরা মিয়ানমারের সীমান্তবর্তী অঞ্চলে বসবাসকারী রোহিঙ্গাদের কাছ থেকে ইয়াবার চালান সংগ্রহ করে।

সেখান থেকে ইয়াবা ঢাকাসহ সারা দেশে যায় তিনটি পৃথক রুট ব্যবহার করে। রোহিঙ্গাদের মধ্যে অনেকেই ১৯৯০ সাল থেকে কক্সবাজারে বসবাস করছেন। তারাই এসব চালান দেশের বিভিন্ন জায়গায় পাঠাতে মূল ভূমিকা রাখেন।

টেকনাফে সপ্তাহব্যাপী অবস্থানকালে আইন প্রয়োগকারী সংস্থা ও স্থানীয় বাসিন্দাদের কাছ থেকে এসব তথ্য পেয়েছে দ্য ডেইলি স্টার।

ইয়াবা চোরাচালানের নতুন পথ

স্থানীয় বাসিন্দা ও আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সূত্রে জানা গেছে, ৮০ শতাংশ ইয়াবা নাইক্ষ্যংছড়ি, ১০ শতাংশ টেকনাফের বিভিন্ন পয়েন্ট এবং বাকি ১০ শতাংশ ভারতীয় সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করছে।

মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের মংডু শহরের ডেকিবুনিয়া থেকে টমব্রু সীমান্তে ইয়াবা আসে। সেখান থেকে এগুলো চলে আসে মিয়ানমারের পাশে থাকা রোহিঙ্গা শিবিরে, যেটি মিয়ানমার-বাংলাদেশ সীমান্তের শূন্যরেখার পাশে অবস্থিত।

সেখান থেকে ঘুমধুম সীমান্ত হয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করে নাইক্ষ্যংছড়িতে যায় ইয়াবা।

নাইক্ষ্যংছড়ি উখিয়ার রোহিঙ্গা শিবির থেকে তুলনামূলকভাবে কাছে। ইয়াবার চোরাচালানগুলোর প্রায় ৭০ শতাংশ এই শিবিরে সাময়িকভাবে রাখা হয় এবং চাহিদা ও সুযোগের ওপর নির্ভর করে দেশের বিভিন্ন জেলায় পাঠিয়ে দেওয়া হয়।

আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের (এপিবিএন-১৬) কমান্ডিং অফিসার মো. হেমায়েতুল ইসলাম দ্য ডেইলি স্টারকে জানান, চোরাচালানকারীরা ইয়াবা লুকানোর জন্য শিবিরগুলোকেই নিরাপদ মনে করে।

তিনি বলেন, ‘রোহিঙ্গা শিবিরের ভেতরে কয়েক হাজার ছোট ছোট ঘর আছে। সবগুলো দেখতে প্রায় একই রকম। যার কারণে সুনির্দিষ্ট তথ্য না থাকলে সেখান থেকে ইয়াবা খুঁজে বের করা বেশ কঠিন।’

সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের মতে, মাদক চোরাকারবার বন্ধে তারা জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করেছে এবং নিয়মিত অভিযান চলছে।

যোগাযোগ করা হলে, নাইক্ষ্যংছড়ি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আলমগীর হোসেন গত ৩ সেপ্টেম্বর দ্য ডেইলি স্টারকে জানান, যেসব পথ ধরে মাদক বাংলাদেশে প্রবেশ করে সেসব জায়গায় অতিরিক্ত ফোর্স মোতায়েন করা হয়েছে।

তিনি বলেন, ‘মাদক চোরাচালান শূন্যে আনা সম্ভব নাও হতে পারে। তবে আমরা যথাসাধ্য চেষ্টা করছি এবং এটাকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে পেরেছি।’

নতুন ইয়াবা ট্যাবলেট

দ্য ডেইলি স্টারের সঙ্গে আলাপকালে একজন ইয়াবা বাহক বলেছেন যে, তারা এখন সাদা বড়িগুলো বিক্রি করছেন। সেগুলোরও বেশ চাহিদা তৈরি হয়েছে।

তিনি বলেন, ‘এই বড়িগুলোর এখন রোহিঙ্গা শিবিরের ভেতরে ৫০ টাকা করে বিক্রি হয়। তবে এই দামে পেতে হলে কমপক্ষে ১০ হাজার পিসের একটি বাক্স কিনতে হবে।’

শিবিরের বাইরেও এগুলো পাইকারি দামে বিক্রি হয়। টেকনাফে এর দাম ৮০ টাকা এবং কক্সবাজার সদরে ১০০ থেকে ১২০ টাকার মধ্যে। তবে তিনি এর খুচরা দাম জানাতে পারেননি।

নতুন এই সাদা রঙের ট্যাবলেট ছাড়া আরও তিনটি রঙের ইয়াবা দেখা যায়। যেগুলোর দাম সাদাগুলোর চেয়েও কম।

সংক্ষেপিত: ইংরেজিতে মূল প্রতিবেদনটি পড়তে ক্লিক করুন এই লিংকে Unstoppable Yaba: New route, new colour

Comments

The Daily Star  | English

Post-August 5 politics: BNP, Jamaat drifting apart

The taunts and barbs leave little room for doubt that the 33-year-old ties have soured. Since the fall of Sheikh Hasina’s government on August 5, BNP and Jamaat-e-Islami leaders have differed in private and in public on various issues, including reforms and election timeframe.

10h ago