অবিশ্বাস্য ব্যাটিং ধসে ডুবল অস্ট্রেলিয়া
মিচেল স্টার্ক, জস হ্যাজেলউডদের পেস আর অ্যাডাম জাম্পার স্পিনে ইংল্যান্ডকে মাঝারি পূঁজিতে আটকে রেখেছিল অস্ট্রেলিয়া। রান তাড়ায় অ্যারন ফিঞ্চ, মারনাস লাবুশানের ব্যাটে অনায়াসে জেতার রাস্তাতাতেও ছিল তারা। কিন্তু আচমকা ব্যাটিং ধসে হুড়মুড় করে ভেঙ্গে পড়ে অসিদের ইনিংস। মুঠোয় থাকা ম্যাচ বিস্ময়করভাবে হেরে বসে তারা।
ক্রিস ওকস, জোফরা আর্চার আর স্যাম কারানের পেসের ঝাঁজে অস্ট্রেলিয়াকে ধসিয়ে দুর্দান্ত এক জয় পেয়েছে ইংল্যান্ড। রোববার ম্যানচেস্টারের ওল্ড ট্রাফোর্ডে দ্বিতীয় ওয়ানডেতে ফিঞ্চের দলকে ২৪ রানে হারিয়ে তিন ম্যাচ সিরিজে সমতায় ফিরেছে ইয়ন মরগ্যানরা।
ইংল্যান্ডের ২৩২ রান টপকাতে গিয়ে ৮ বল আগে ২০৭ রানে শেষ হয়ে যায় সফরকারীদের ইনিংস।
২৩২ রান তাড়ায় নেমে ডেভিড ওয়ার্নারকে চতুর্থ ওভারেই হারায় অস্ট্রেলিয়া। তিনে নামা মার্কাস স্টয়নিসও ফেরেন ৯ রান করেই। ৩৭ রানে ২ উইকেট হারালেও তৃতীয় উইকেটে দারুণ জুটি পান মারনাস লাবুশানে আর অধিনায়ক অ্যারন ফিঞ্চ।
দুজনের শতরানের জুটিতে ম্যাচ অনায়াসে জেতার পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল। কিন্তু আচমকা ঝড়ে জেতার সেই মঞ্চের ক্ষণিকের মধ্যেই লাপাত্তা। ১৪৪ থেকে ১৬৬ রানের মধ্যেই নেই ৬ উইকেট।
শুরুটা লাবুশানেকে দিয়ে। ক্রিস ওকসের ভেতরে ঢোকা বলে পরাস্ত হয়ে প্যাডে লেগেছিল তার। মাঠের আম্পায়ার আউট না দিলেও রিভিউ নিয়ে সাফল্য পায় ইংল্যান্ড। জোফরা আর্চার এসে পরের ওভারেই কাবু করে দেন নতুন ব্যাটসম্যান মিচেল মার্শকে।
লাইন মিস করে অফ স্টাম্প হারিয়ে বসেন তিনি। এই ধাক্কার রেশ থাকতে পরের ওভারে আবার আঘাত। এবার ওকসের বলে প্রায় হুবহু একইভাবে বোল্ড হন ৭৩ রান করা ফিঞ্চ। মাঝে আর্চারের এক ওভার বিরতি দিয়ে ওকসের পরের ওভারে ম্যাক্সওয়েলও অবিশ্বাস্যভাবে লাইন মিস করার একই ভুল করে খোয়ান স্টাম্প। ২ উইকেটে ১৪৪ থেকে অস্ট্রেলিয়া কয়েক মিনিটের মধ্যে পরিনত হয় ৬ উইকেটে ১৪৭ রানে।
কিপার ব্যাটসম্যান অ্যালেক্স ক্যারি, প্যাট কামিন্সকে নিয়ে বিপর্যয় সামাল দিতে চেয়েছিলেন। ১৯ বলে ১১ করা কামিন্স স্যাম কারানের বল স্টাম্পে টেনে বিদায় নেন। ঠিক পরে বলে এসেই মিচেল স্টার্ক ক্যাচ দেন উইকেটের পেছনে।
টপাটপ উইকেট পড়তে থাকায় বেড়ে যান আস্কিং রানরেটের চাপও। তা পুষিয়ে পেরে উঠা বাকিদের পক্ষে ছিল দুরূহ। রান বাড়ানোর তাড়ায় কারানের স্লোয়ারে তাই বিদায় নেন জাম্পা। শেষ উইকেটে হ্যাজেলউডকে নিয়ে প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়া সমীকরণ আর মেলানো হয়নি ক্যারির।
এর আগে টস জিতে ব্যাট করতে গিয়ে শুরুতেই ধাক্কা খায় ইংল্যান্ড। আগের ম্যাচে রান পাওয়া জনি বেয়ারস্টো এবার ফেরেন খালি হাতে। মিচেল স্টার্কের বলে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়ে তার ফেরার সময় দলের রান্ন মোটে কুড়ি। ৯ রান পরই আরেক ধাক্কায়। এবার আরেক ওপেনার জেসন রয় ২২ বলে ২১ রান করে কাটা পড়েন রান আউটে।
দ্রুত ২ উইকেট খুইয়ে বসা দল থই খুঁজে পায় জো রুট আর অধিনায়ক ইয়ন মরগ্যানের ব্যাটে। তৃতীয় উইকেট জুটিতে দুজনে আনেন ৬১ রান। বড় ইনিংস সম্ভাবনা জাগিয়ে দুজনেই ফেরেন মাঝপথে। কিছুটা সময় নিয়ে সেট হওয়া রুট ৭৩ বলে ৩৯ করে অ্যাডাম জাম্পার বলে ক্যাচ দিয়েছেন ফিঞ্চের হাতে।
৫২ বলে ৪২ করা মরগ্যানের হন্তারকও ওই জাম্পা। এই লেগ স্পিনারের বলে মরগ্যান এলবিডব্লিও হয়ে আউট হওয়ার আগে তড়িঘড়ি ফিরে যান জস বাটলারও। আগের ম্যাচের সেঞ্চুরিয়ান স্যাম বিলিংস এদিন টিকতে পারেননি।
সব মিলিয়ে দেড়শো রানের ভেতর ৮ উইকেট হারিয়ে ফেলে স্বাগতিকরা। এরপরও তাদের দুশো পেরুনোর কৃতিত্ব টম ক্যারান আর আদিল রশিদের। নবম উইকেট জুটিতে মহাগুরুত্বপূর্ণ ৭৬ রান আনেন তারা। ৩৯ বলে ৩৭ করেন কারান। রশিদ অপরাজিত থাকেন ২৬ বলে ৩৫ রানে। এই রান যে কতটা গুরুত্বপূর্ণ, বোঝা গেছে ম্যাচের বাকি অংশে।
Comments