মধুপুরে বন বিভাগের অভিযান: কলা বাগান ধ্বংসের প্রতিবাদে ক্ষোভ, মানববন্ধন

টাঙ্গাইলের মধুপুরে বন বিভাগের অভিযানে বাসন্তী রেমার ৫০০ কলার গাছ কেটে নেওয়ার ঘটনায় ক্ষোভ জানিয়েছেন স্থানীয় গারো সম্প্রদায়। এ ঘটনায় বনবিভাগের সহকারী বন সংরক্ষককে প্রত্যাহার এবং ক্ষতিগ্রস্থ বাসন্তী রেমাকে যথাযথ ক্ষতিপূরণের দাবি জানিয়েছেন তারা। অন্যথায় কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে জানান তারা।
টাঙ্গাইলের মধুপুরে বন বিভাগের অভিযানে ৫০০ কলা গাছ কাটার প্রতিবাদে মানববন্ধন কর্মসূচি পালিত হয়। ছবি: সংগৃহীত

টাঙ্গাইলের মধুপুরে বন বিভাগের অভিযানে বাসন্তী রেমার ৫০০ কলার গাছ কেটে নেওয়ার ঘটনায় ক্ষোভ জানিয়েছেন স্থানীয় গারো সম্প্রদায়। এ ঘটনায় বনবিভাগের সহকারী বন সংরক্ষককে প্রত্যাহার এবং ক্ষতিগ্রস্থ বাসন্তী রেমাকে যথাযথ ক্ষতিপূরণের দাবি জানিয়েছেন তারা। অন্যথায় কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে জানান তারা।

আজ মঙ্গলবার উপজেলার পঁচিশ মাইল এলাকায় মানববন্ধন করে এসব দাবি জানান তারা।

এদিকে বনবিভাগ জানিয়েছে, বনভূমি উদ্ধারে চলমান অভিযানের অংশ হিসেবেই কলার বাগান কাটা হয়েছে।

সোমবার মধুপুর উপজেলার দোখালা রেঞ্জের সেগামারী এলাকায় বনবিভাগের অভিযানে ৫০ শতাংশের একটি কলা বাগানের ৫০০ কলা গাছ কেটে ফেলা হয়।

মধুপুর বন বিভাগের সহকারী বন সংরক্ষক (এসিএফ) জামাল হোসেন তালুকদার দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘বনের ওই জমিটি বাসন্তী রেমা দীর্ঘদিন ধরে অবৈধভাবে নিজের দখলে রেখে কলার বাগান করার জন্য অন্য লোকের কাছে লিজ দিয়ে রেখেছিলেন। মধুপুর বনাঞ্চলের দখলকৃত বনভূমি উদ্ধারে চলমান অভিযানের অংশ হিসাবে বন বিভাগ কলার বাগান কেটে সরকারি জমিটি উদ্ধার করে।’

তবে বনবিভাগ কোনো ধরনের নোটিশ না দিয়েই গাছগুলো কেটে ফেলে বলে অভিযোগ করেছেন স্থানীয় গারো নেতা ইউজিন নকরেক। তিনি দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘ওই জমিটি বাসন্তী রেমা বংশপরম্পরায় ভোগ দখল করে আসছিল। বন বিভাগ তাকে কোন নোটিশ না দিয়েই তার বাগানের সব গাছ কেটে ফেলে।’

এ ব্যাপারে এসিএফ জামাল হোসেন তালুকদার বলেন, সরকারের নির্দেশেই মধুপুরের দখলকৃত বনভূমি উদ্ধারে অভিযান চালানো হচ্ছে।

‘সরকারি জমি উদ্ধার করার আগে দখলকারীকে নোটিশ করার আইন বা প্রয়োজন কোনটাই নেই। দখলকারীরা বনের জমিতে কলাগাছ লাগানোর আগে কি সরকারকে নোটিশ করেছিল?’ বলেন তিনি।

এদিকে, বনবিভাগের অভিযানে বাগান ধ্বংসের ঘটনায় এলাকায় ক্ষোভ দেখা দিলে বন কর্মকর্তারা এ ব্যাপারে এই সপ্তাহেই স্থানীয়দের সাথে বৈঠক করে বিষয়টি নিষ্পত্তির আশ্বাস দেন। স্থানীয় গারো নেতাদেরও সেই বৈঠকে আমন্ত্রণ জানানো হয়।

আগামী কাল বুধবার এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা থাকলেও গারো নেতা ইউজিন নকরেক জানান, বন বিভাগ আলোচনার তারিখ পিছিয়ে দিয়েছে।

তিনি দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘সোমবারের ঘটনায় আগামীকাল বন বিভাগের সাথে আমাদের আলোচনা হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু বন বিভাগের কর্মকর্তারা সেটি ২৪ সেপ্টেম্বর হবে বলে জানিয়েছেন।’

সমস্যা সমাধানে বন বিভাগের এই কালক্ষেপণের প্রতিবাদে বুধবার সকালে দোখলা রেঞ্জ অফিস ঘেরাও ও বিক্ষোভ কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়েছে বলে জানান তিনি।

জানা গেছে, বন বিভাগ গত এক বছরে মধুপুরের দোখালা, আরনখোলা, সেগামারী, জয়নাগাছা, আমতলীসহ বিভিন্ন স্থান থেকে ১৫৭ একর বনভূমি উদ্ধার করেছে। এসব জমিতে ‘সুফল’ কর্মসূচির আওতায় বিভিন্ন প্রজাতির গাছের বাগান তৈরির কাজ চলছে।

টাঙ্গাইল বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) জহিরুল হক দ্য ডেইলি স্টারকে জানান, সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী মধুপুর বনাঞ্চলের দখলিকৃত ভূমি উদ্ধারে বন বিভাগের অভিযান চলমান রয়েছে।

তিনি বলেন, ‘বনভূমি উদ্ধারে বর্তমানে ছোট পরিসরে অভিযান চালানো হলেও পরবর্তীতে বড় পরিসরে অভিযান শুরু করা হবে।’

Comments

The Daily Star  | English
government changed office hours

Govt office hours 9am-3pm from Sunday to Tuesday

The government offices will be open from 9:00am to 3:00pm for the next three days -- from Sunday to Tuesday -- this week, Public Administration Minister Farhad Hossain said today

1h ago