কুড়িগ্রাম ও লালমনিরহাটে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি
কুড়িগ্রাম ও লালমনিরহাটে বিপৎসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে ধরলা নদীর পানি। আজ শুক্রবার সকাল ৬টা থেকে কুড়িগ্রামে ধরলা নদীর পানি বিপৎসীমার ৩১ সেন্টিমিটার এবং লালমনিরহাটে ১৯ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে বলে জানিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ড।
পাউবো আরও জানায়, ব্রহ্মপুত্র নদ ও তিস্তা নদীর পানি বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হলেও প্রবল বৃষ্টিপাত আর উজানের পানিতে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হচ্ছে।
লালমনিরহাটের সদর উপজেলার ধরলা নদীপাড়ের কুলাঘাট, মোগলহাট ও বড়বাড়ী ইউনিয়ন এবং কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলার শিমুলবাড়ী, বড়ভিটা ইউনিয়ন, রাজারহাট উপজেলার ছিনাই ইউনিয়ন, কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার হলোখানা, যাত্রাপুর, মোগলবাসা ও উলিপুর উপজেলার বেগমগঞ্জ ইউনিয়নের ৩০টি গ্রামের ১৫ হাজারের বেশি পরিবার বন্যাদুর্গত হয়ে পড়েছে।
বড়বাড়ী ইউনিয়নের বাসুরিয়া গ্রামের নজরুল ইসলাম দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, তারা বাড়ি-ঘর ছেড়ে সরকারি রাস্তার ওপর আশ্রয় নিয়েছেন। গ্রামের রাস্তা-ঘাট বন্যার পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় তাদের নৌকা ও কলার ভেলায় চলাচল করতে হচ্ছে।
কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলার শিমুলবাড়ী ইউনিয়নের চর শিমুলবাড়ী গ্রামের খোদেজা বেওয়া বলেন, তার একটি ছাগল ও কয়েকটি মুরগি বন্যার পানিতে ভেসে গেছে। বাড়ি-ঘর ছেড়ে তাদের পানি উন্নয়ন বোর্ডের বাঁধে আশ্রয় নিতে হয়েছে।
ধরলা নদীর পানি বিপৎসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় লালমনিরহাট সদর উপজেলায় হুমকির কুরুল ও বাসুরিয়া এলাকায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ ঝুঁকির মধ্যে পড়েছে। যে কোনো সময় বাঁধ ভেঙে নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হতে পারে।
ইতোমধ্যে কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার হলোখানা ইউনিয়নে সারডোব গ্রামে বাঁধের ক্ষতিগ্রস্ত অংশ দিয়ে নদীর পানি প্রবেশ করে অন্তত আটটি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। হলোখানা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান উমর ফারুখ দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘সারডোব গ্রামে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের ক্ষতিগ্রস্ত অংশ মেরামত না করায় বড় ক্ষতি হয়ে গেছে। বাঁধের ক্ষতিগ্রস্ত অংশ দিয়ে ধরলার পানি প্রবেশ করায় নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলীকে একাধিকবার জানিয়েও ফল হয়নি।’
কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আরিফুল ইসলাম বলেন, ‘এক মাসে আগে জিও ব্যাগ ফেলে সারডোব গ্রামে বাঁধটি ভাঙন থেকে রক্ষা করা হয়েছিল। বাঁধের প্রায় ৭০ মিটার অংশ সম্পূর্ণ ভেঙে গেছে। ধরলা নদীর পানি বেড়ে যাওয়ায় বাঁধের ক্ষতিগ্রস্ত অংশ দিয়ে পানি ঢুকছে। শুষ্ক মৌসুম ছাড়া বাঁধ সংস্কার করা সম্ভব না।’
লালমনিরহাট পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মিজানুর রহমান দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘বৃষ্টিপাত ও উজানের পানি আসা বন্ধ না হলে ধরলা নদীর পানি আরও বাড়তে পারে। এতে বন্যা পরিস্থিতি মারাত্মক আকার ধারণ করতে পারে। পানি উন্নয়ন বোর্ড বন্যাকবলিত এলাকায় খোঁজ-খবর রাখছে।’
Comments