বকেয়া মজুরি চাওয়ায় কিশোরকে খুঁটিতে বেঁধে নির্যাতন

কুড়িগ্রামের রাজীবপুর উপজেলায় মজুরির টাকা চাওয়াকে কেন্দ্র করে সাগর হোসেন (১৩) নামের এক কিশোরকে খুঁটির সঙ্গে হাত পা বেঁধে নির্যাতন করা হয়েছে। এ ঘটনায় একজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
কিশোর সাগর হোসেনকে খুঁটির সঙ্গে হাত পা বেঁধে নির্যাতন করা হয়। ছবি: সংগৃহীত

কুড়িগ্রামের রাজীবপুর উপজেলায় মজুরির টাকা চাওয়াকে কেন্দ্র করে সাগর হোসেন (১৩) নামের এক কিশোরকে খুঁটির সঙ্গে হাত পা বেঁধে নির্যাতন করা হয়েছে। এ ঘটনায় একজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

গতকাল রাত সাড়ে ১০টার দিকে উপজেলার শহরের মাছহাটি সংলগ্ন সাঈম হোটেলে এ ঘটনা ঘটে। স্থানীয়দের মাধ্যমে খবর পেয়ে গতকাল রাতেই ওই কিশোর হোটেল শ্রমিককে হাত-পা বাঁধা অবস্থায় উদ্ধার করে পুলিশ।

আজ শুক্রবার রাজীবপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) নবীউল হাসান বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

ওসি নবীউল হাসান জানান, খবর পেয়েই পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে ওই কিশোরকে উদ্ধার করে সমাজসেবা অধিদপ্তরের মাধ্যমে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করেছে। এ ঘটনায় হোটেল মালিকের ভাই শফি আলমকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তবে, তার ভাই হোটেলে মালিক সাঈম হোসেন পলাতক আছেন।

এ ঘটনায় ভুক্তভোগীর মা মমতা বেগম বাদী হয়ে রাজীবপুর থানায় হোটেল মালিক সাঈম হোসেন ও তার ভাই শফি আলমের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছেন। পরে, পুলিশ রাতে ওই হোটেল মালিকের ভাই শফি আলম ওরফে দুখু মিয়াকে আটক করে।

নির্যাতিত কিশোর সাগরের বাড়ি পার্শ্ববর্তী জামালপুর জেলার দেওয়ানগঞ্জ উপজেলার জোয়ানেরচর কারখানা পাড়া গ্রামে। অভিযুক্ত হোটেল মালিকের বাড়িও একই এলাকায়।

প্রত্যক্ষদর্শী ও থানা পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, সাগর বুধবার কাজে আসেনি। কিন্তু, পরের দিন বৃহস্পতিবার বিকেলের দিকে বকেয়া মজুরি চাইতে এলে হোটেল মালিক সাঈম হোসেন তাকে কাজ করতে বলেন। সাগর রাত পর্যন্ত কাজ করে বেতনের টাকা চাইলে হোটেল মালিক তাকে গালিগালাজ করেন এবং বুধবার কাজে না আসার কারণ জানতে চান। তখন সাগর তাকে শারীরিক অসুস্থতার কথা বলেন।

এতে হোটেল মালিক ক্ষিপ্ত হয়ে তার মজুরি দিতে অস্বীকৃতি জানালে বাকবিতণ্ডা সৃষ্টি হয়। পরে হোটেল মালিক ও তার ভাই সাগরকে ধরে মারপিট করে হোটেলের পিছনে রান্নাঘরের খুঁটির সঙ্গে হাত ও পা বেঁধে রাখে। তার চিৎকারে আশেপাশের মানুষ ছুটে এলেও সাগরকে উদ্ধার করতে পারেনি।

প্রত্যক্ষদর্শী স্থানীয় সাংবাদিক সহিজল ইসলাম দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘নির্যাতনের শিকার হোটেল শ্রমিককে সমাজসেবা অধিদপ্তরের মাধ্যমে তার পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এ রকম বর্বরোচিত নির্যাতনের ঘটনায় দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হওয়া দরকার।’

রাজীবপুর সমাজসেবা অধিদপ্তরের মাঠ কর্মী জাহাঙ্গীর আলম ওই কিশোরকে পরিবারের কাছে হস্তান্তরের বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, তার শরীরে আঘাতের চিহ্ন আছে। তাকে স্থানীয় পল্লী চিকিৎসকের মাধ্যমে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।

সাগরের মা মমতা বেগম জানান, অভাবের কারণে তিনি নিজেও অন্যের বাড়িতে কাজ করেন। ছেলেকে হোটেলে রেখেছেন দৈনিক ১৫০ টাকা মজুরিতে। সাত দিনের মজুরির টাকা বকেয়া আছে। এ টাকা চাইতে গেলে সাগরকে অমানবিক নির্যাতন করেন হোটেলের মালিক সাঈম ও তার ভাই শফি আলম।

Comments

The Daily Star  | English

Culprits of Khagrachhari, Rangamati violence will be brought to book: CA office

High-powered probe body to be formed; home adviser to visit Khagrachharai and Rangamati tomorrow

1h ago