মনের জোরেই কাজ করে যাচ্ছেন ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী
শারীরিকভাবে সুস্থ নন ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী। শারীরিক জটিলতার কারণে গতকাল শুক্রবার নিতে পারেননি নিয়মিত ডায়ালাইসিসও। তারপরও দায়িত্ববোধ থেকেই তিনি ছুটে বেড়াচ্ছেন, মানুষের জন্য কাজ করছেন।
দ্য ডেইলি স্টারের সঙ্গে আলাপকালে আজ শনিবার এসব কথা বলেন ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর স্ত্রী, নারী নেত্রী শিরীন হক।
তিনি বলেন, ‘তার যে শারীরিক অবস্থা তাতে বিশ্রামের কোনো বিকল্প নেই।’
গত বৃহস্পতিবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এক মানববন্ধনে বক্তৃতা দিতে গিয়ে অসুস্থ বোধ করায় হঠাৎ বসে পড়েন তিনি। ভারতের পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধের প্রতিবাদসহ কয়েকটি দাবিতে এই মানববন্ধনের আয়োজন করা হয়েছিল।
সেখান থেকে তাকে চিকিৎসার জন্য নেওয়া হয় গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতালে। গতকাল শুক্রবার সারাদিন চিকিৎসকদের পরামর্শে বিশ্রামে ছিলেন তিনি। তবে তার রক্ত চাপ ছিল স্বাভাবিকের চেয়ে কম। ফলে কিডনি জটিলতায় ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী যে নিয়মিত ডায়ালাইসিস নেন, তা দেওয়া সম্ভব হয়নি।
শিরিন হক জানান, গতকাল ডায়ালাইসিস দেওয়ার কথা থাকলেও তা দেওয়া সম্ভব না হওয়ায় আজ গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতালে তার ডায়ালাইসিস দেওয়া হবে।
দেশে করোনার সংক্রমণের শুরু থেকেই করোনা শনাক্তে কিটসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কাজ করতে গিয়ে ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী নিজেও করোনায় আক্রান্ত হন। গত ২৫ মে নিজেই এ তথ্য জানান তিনি। দীর্ঘদিন নিজের প্রতিষ্ঠিত গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। বাংলাদেশ, ইংল্যান্ড ও ভারতের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের সমন্বিত বোর্ডের মাধ্যমে তাকে চিকিৎসা দেওয়া হয়।
নিয়মিত চিকিৎসার পাশাপাশি প্লাজমা থেরাপির মাধ্যমে সুস্থ হয়ে ওঠেন তিনি। এই পদ্ধতি কার্যকর হওয়ায় গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতালে তিনি গড়ে তোলেন প্লাজমা ব্যাংক।
পরবর্তীতে তিনি করোনামুক্ত হলেও কোভিড-উত্তর ফুসফুসের নিউমোনিয়ায় ভুগছিলেন। পূর্বের কিডনি রোগের সঙ্গে দেখা দেয় হৃদরোগসহ বেশকিছু শারীরিক জটিলতা।
করোনামুক্ত হওয়ার পর হৃদরোগ সম্পর্কিত জটিলতায় ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীকে ইব্রাহিম কার্ডিয়াক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে যাবতীয় পরীক্ষা সম্পন্ন করে চিকিৎসকরা জানান, তার লিভারও কিছুটা আক্রান্ত। সবমিলিয়ে তার শারীরিক অবস্থা একেবারেই সন্তোষজনক নয়।
তবুও নিজেকে অসুস্থ মানতে নারাজ তিনি। নিজের শারীরিক অবস্থা সম্পর্কে জানতে চাইলে ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘অসুখ নিয়ে এত চিন্তা করলে কাজ করব কখন? এখন বের হতে হবে, কাজ করতে হবে।’
শিরীন হক বলেন, ‘তিনি মূলত মানসিক শক্তির জোরে কাজ করেন, চলেন। শরীর পারমিট না করলেও তিনি থেমে থাকেন না। মন দিয়েই কাজ করেন। কিন্তু, এখন তার অনেক বেশি বিশ্রামে থাকা দরকার।’
Comments