ইসরায়েল ইস্যুতে বিভক্ত সৌদি রাজপরিবার

ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপনের ক্ষেত্রে সৌদি আরবও সংযুক্ত আরব আমিরাত ও বাহরাইনের পথ অনুসরণ করবে কিনা এ নিয়ে চলছে জোর গুঞ্জন।
সৌদি আরবের বাদশাহ সালমান বিন আব্দুল আজিজ ও তার ছেলে যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান। ছবি: সংগৃহীত

ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপনের ক্ষেত্রে সৌদি আরবও সংযুক্ত আরব আমিরাত ও বাহরাইনের পথ অনুসরণ করবে কিনা এ নিয়ে চলছে গুঞ্জন।

বিশ্লেষকরা বলছেন, ইহুদি রাষ্ট্রের সঙ্গে আনুষ্ঠানিকভাবে সম্পর্ক স্বাভাবিক করার বিষয়ে বাদশার উত্তরাধিকার যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান আগ্রহী হলেও অসম্মতি জানিয়েছেন বাদশাহ সালমান বিন আব্দুল আজিজ।

সৌদি বাদশাহ আব্দুল আজিজ আরব দেশগুলোর ইসরায়েল বয়কট করা ও ফিলিস্তিনিদের স্বাধীন রাষ্ট্রের দাবির দীর্ঘদিনের সমর্থক।

ইসরায়েলের সঙ্গে ব্যবসা করতে ও ওই অঞ্চলে ইরানের বিরুদ্ধে শক্তিশালী জোটবদ্ধ গড়ে তুলতে ইসরায়েলের সঙ্গে দ্বন্দ্ব কাটিয়ে উঠতে চান যুবরাজ সালমান।

ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের এক বিশ্লেষণী প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত ১৩ আগস্ট ইসরায়েল ও আমিরাতে মধ্যকার সমঝোতা চুক্তি নিয়ে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের ঘোষণা পর, ৮৪ বছর বয়সী বাদশাহ স্তম্ভিত হলেও অবাক হননি যুবরাজ সালমান।

মধ্যপ্রাচ্যের বৃহত্তম অর্থনীতির প্রধান সৌদি আরবের বাদশাহ যদি ইসরায়েলের সঙ্গে শান্তিচুক্তি সমর্থন না করতেন, তবে প্রতিবেশী দেশ আমিরাতের পক্ষে এগিয়ে যাওয়া কঠিন হতো। জানা গেছে, যুবরাজ সালমানই সংযুক্ত আরব আমিরাতকে ইসরায়েলের সঙ্গে শান্তিচুক্তি করতে সাহায্য করেছেন।

শান্তিচুক্তির পর বাদশাহ সালমান তার পররাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার প্রতি সৌদির যে দৃঢ় অবস্থান তা ফিরিয়ে আনার নির্দেশ দিয়েছিলেন।

সৌদি মালিকানাধীন একটি সংবাদপত্রে প্রকাশিত মতামতে সৌদি রাজপরিবারের ঊর্ধ্বতন সদস্য প্রিন্স তুর্কি আল-ফয়সাল বলেন, সৌদি আরবের সঙ্গে ইসরায়েলের সম্পর্ক স্বাভাবিক করতে হলে জেরুজালেমকে রাজধানী করে ফিলিস্তিনকে একটি সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে ঘোষণা করতে হবে।

তিনি বলেন, ‘ইসরায়েল ও আরব দেশগুলোর মধ্যে চূড়ান্ত শান্তি প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে সৌদি আরব একটি মূল্য নির্ধারণ করেছে। আর তা হলো, প্রয়াত বাদশাহ আবদুল্লাহর উদ্যোগ অনুসরণ করে জেরুজালেমকে রাজধানী ঘোষণা করে সার্বভৌম একটি ফিলিস্তিন রাষ্ট্র গঠন করা।’

সৌদি শাসকগোষ্ঠীর মধ্যে সাম্প্রতিক উত্তেজনা ইঙ্গিত দেয় যে, আঞ্চলিক দ্বন্দ্বের বিষয়ে দেশটির অবস্থান প্রত্যাশার তুলনায় দ্রুতই বদলে যেতে পারে।

মধ্যপ্রাচ্যে যুক্তরাষ্ট্রের মিত্র ও ইরানের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী সৌদি আরবকে ইসরায়েলের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হতে চাপ দিয়ে চলেছে ট্রাম্প প্রশাসন।

ইসরায়েলের জাতীয় সুরক্ষা কাউন্সিলে ‘ইরান ও উপসাগরীয় ডেস্ক’ এর সাবেক পরিচালক ইওয়েল গুজানস্কি বলেন, ‘এ জন্য ইসরায়েলকে অপেক্ষা করতে হবে। চুক্তির বিষয়টি অনেকদূর এগিয়েছে। কখন এবং কী মূল্যে চুক্তি হবে, তা নিয়ে সৌদি আরব ইসরায়েলের সঙ্গে নয়, হোয়াইট হাউজের সঙ্গে আলোচনা করছে।’

সময় এখন ইসরায়েলের পক্ষে

দীর্ঘদিন সৌদি আরবে কর্মরত অবসরপ্রাপ্ত মার্কিন কূটনীতিক ডেভিড রান্ডেল বলেন, ‘সময় এখন ইসরায়েলের পক্ষে। সৌদি আরবের এ প্রজন্মের তরুণরা তাদের মা-বাবা ও তার আগের প্রজন্মের চেয়ে ফিলিস্তিনিদের দুর্দশার প্রতি কম সহানুভূতিশীল।’

‘যারা দুটি আরব-ইসরায়েল যুদ্ধের মধ্যে বড় হয়েছে ও ফিলিস্তিনিদের আর্তনাদ ছোটবেলা থেকে যাদের হৃদয়ে বেজেছে তারা এ ব্যাপারে ক্ষুব্ধ। তারা মনে করেন যে, আমিরাতিরা ফিলিস্তিনিদের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছে। কিন্তু, ৩০ বছরের কম বয়সী সৌদিরা সত্যিই এ নিয়ে মাথা ঘামান না,’ বলেন তিনি।

সৌদি আরব ও ইসরায়েল প্রায় ৩০ বছর ধরে বিভিন্ন ইস্যুতে, বিশেষ করে ইরানের সম্পর্কিত নিরাপত্তা ইস্যুতে সর্তকতার সঙ্গে অনানুষ্ঠানিক যোগাযোগ রেখেছে।

সাম্প্রতিক বছরগুলোতে, একইসঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে জোট বজায় রাখার (বিশেষত ইরান মোকাবিলায়) পাশাপাশি ফিলিস্তিনিদের পক্ষে দীর্ঘকালীন সমর্থন রাখার মতো দুটি বিপরীতমুখী লক্ষ্য অনুসরণ করতে গিয়ে সূক্ষ রাস্তায় হাঁটছে সৌদি আরব।

কখনো কখনো সৌদি কর্মকর্তাদের গোপনে এক অবস্থান এবং জনসাধারণের সামনে অন্য অবস্থান প্রচার করতে দেখা গেছে। এমনকি সম্পূর্ণ পরস্পরবিরোধী কর্মকাণ্ডেও জড়িয়েছে সৌদি আরব।

সৌদি বিশ্লেষক ও মার্কিন কর্মকর্তাদের মতে, আধুনিক সৌদি আরবের প্রতিষ্ঠাতা ইবনে সৌদের ছেলে বাদশাহ সালমান বিন আবদুল আজিজ তার জীবদ্দশায় আরব অঞ্চলে ইসরায়েলের যে বিজয় উল্লাস দেখেছেন সেটি তার মধ্যে ফিলিস্তিনিদের প্রতি সহানুভূতি জাগিয়ে তুলেছিল।

ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রদূত বাসেম আল আগা জানান, সিংহাসনে আরোহণের আগে সৌদি রাজধানীর গভর্নর হিসেবে দায়িত্ব পালন করার সময়, বাদশাহ আজিজ প্রায়ই নিজেকে ‘রিয়াদে নিযুক্ত ফিলিস্তিনের রাষ্ট্রদূত’ হিসেবে উল্লেখ করতেন।

কয়েক দশক ধরে বাদশাহ আজিজ ফিলিস্তিনিদের কয়েক বিলিয়ন ডলার অর্থসাহায্যের পাশাপাশি তাদের বেশিরভাগ নেতার সঙ্গে ব্যক্তিগত সম্পর্ক গড়ে তুলেছেন।

মিশর ও জর্ডান আগেই ইসরায়েলের সঙ্গে শান্তিচুক্তি করলেও এই গ্রীষ্মে আমিরাত ও বাহরাইনের চুক্তির আগে সমস্ত আরব রাষ্ট্রের অবস্থান ফিলিস্তিনের পক্ষেই ছিল।

ট্রাম্প প্রশাসনের প্রতি যুবরাজের সমর্থন রাখা দরকার

সাবেক মার্কিন রাষ্ট্রদূত জোসেফ ওয়েস্টফাল বলেন, ‘২০১৭ সালে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প যখন ক্ষমতায় আসেন, বাদশাহ আজিজ তাকে একটি বার্তা পাঠিয়ে বলেছিলেন যে, তিনি ইসরায়েলের অস্তিত্বের অধিকারের পাশাপাশি ফিলিস্তিনিদের নিজস্ব রাষ্ট্র থাকার অধিকারেও বিশ্বাস করেন।

মে মাসে প্রথম বিদেশ সফরের সময়, সৌদি আরব প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে রিয়াদ থেকে তেল আবিবে যাওয়ার অনুমতি দেয়। এমন সিদ্ধান্ত সৌদি আরবের প্রত্যাশা অনুযায়ী ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রের প্রতি নতুন মার্কিন প্রশাসন কাজ করবে- প্রবীণ বাদশাহর এমন প্রত্যাশাকেই ইঙ্গিত করে।

তবে, শিগগির হতাশ হয়েছিলেন বাদশাহ আজিজ।

প্রেসিডেন্টের জামাতা ও সিনিয়র উপদেষ্টা জ্যারেড কুশনার সৌদির কাছে ট্রাম্পের মধ্যপ্রাচ্যের শান্তি পরিকল্পনা নিয়ে আলোচনা করতে এই অঞ্চলে পৌঁছানোর পর তিনি এমন একটি চুক্তি নিয়ে কথা বলেন যা ফিলিস্তিনিদের রাজধানী পূর্ব জেরুজালেমকে অস্বীকার করে।

সেপ্টেম্বরে ফোনে যোগাযোগের সময় বাদশাহ সালমান ফিলিস্তিন ইস্যু সমাধান নিয়ে তার আকাঙ্ক্ষার কথা আবারও প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে জানান।

ওই কথোপকথন নিয়ে সৌদি আরবের রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থায় প্রকাশিত সংক্ষিপ্ত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ফোনে তিনি ২০০২ সালের আগে সৌদি-সমর্থিত একটি উদ্যোগের কথা উল্লেখ করেন, যেখানে ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের বিনিময়ে ইসরায়েলের সঙ্গে স্বাভাবিক সম্পর্কের প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়।

২০১৭ সালে সৌদি সরকারের দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে ৩৫ বছর বয়সী যুবরাজ সালমান নিরাপত্তা ও বাণিজ্য নিয়ে ইসরায়েলের প্রতি অস্বাভাবিক আগ্রহ দেখিয়েছেন।

সৌদি কর্মকর্তারা জানান, যুবরাজ ট্রাম্পের ওই শান্তি পরিকল্পনা গ্রহণের জন্য ফিলিস্তিনি নেতাদের ব্যক্তিগতভাবে চাপ দিয়েছেন। তবে, ফিলিস্তিনিরা সেটা অস্বীকার করে বলেছিলেন যে, এটি স্বাধীন রাষ্ট্রের প্রতি তাদের আকাঙ্ক্ষাকে বিপন্ন করবে।

২০১৭ সালের অক্টোবরে যুবরাজ সৌদি আরব, জর্ডান ও মিশরের ইসরায়েল সংলগ্ন অংশে ২৫ হাজার বর্গ কিলোমিটারের শহর, প্রযুক্তি গবেষণার রাজধানী, ‘নিওম’ নির্মাণের পরিকল্পনা জানান।

যুবরাজের পরামর্শদাতা এবং বিদেশি কূটনীতিকদের মতে, ৫০০ বিলিয়নের ওই হাইটেক শহর নির্মাণে বায়োটেকনোলজি ও সাইবার সিকিউরিটিতে সম্ভাব্য বিনিয়োগের মাধ্যমে ইসরায়েল বড় ভূমিকা রাখবে বলে আশা করেছিলেন যুবরাজ সালমান।

২০১৪ থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত সৌদি আরবে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত ওয়েস্টফাল বলেন, ‘তিনি এটাকে বাস্তবতা ও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা হিসেবে দেখেছেন। ৮৪ বছর বয়সী বাদশাহর এ বছর পিত্তথলিতে অস্ত্রোপচার হয়েছিল। বেশ কয়েক বছর ধরে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন তিনি। এই সমস্ত কিছুর বোঝার মতো বুদ্ধিমান তিনি নন ও সবকিছু নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য যে পরিমাণে কূটনৈতিক বিষয়ে যুক্ত হওয়া প্রয়োজন তিনি ততটা যুক্ত নন। আর যুবরাজ সালমানের ট্রাম্প প্রশাসনের প্রতি সমর্থন বজায় রাখা প্রয়োজন।’

২০১৮ সালে সাংবাদিক জামাল খাশোগিকে হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় যুক্তরাষ্ট্রসহ বেশ কয়েকটি দেশের গোয়েন্দা সংস্থার তদন্তে হত্যাকাণ্ডটির নির্দেশনা সৌদি যুবরাজই দিয়েছিলেন বলে জানা গেছে।

খাশোগি হত্যাকাণ্ডের পর সৌদি যুবরাজ এখন পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্র বা ইউরোপ সফর করেননি।

মধ্যপ্রাচ্যে ট্রাম্প প্রশাসনের কূটনীতি

নভেম্বরে যুক্তরাষ্ট্রে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগে যুক্তরাষ্ট্র-ইসরায়েল চুক্তির অধীনে আরও আরব দেশকে নিয়ে আসতে আগ্রহী ট্রাম্প প্রশাসন।

একটি সূত্র জানায়, নিওমে গত ১ সেপ্টেম্বর এক সভায় যুবরাজ সালমান জানান, বাদশাহ কখনোই সৌদি আরব ও ইসরায়েলের মধ্যে সমঝোতা চুক্তিতে রাজি হবেন না। যুবরাজ সেসময় কুশনারকে জানান, সৌদি এখন সর্বোচ্চ যা করতে পারে তা হলো- বাহরাইনকে ইসরায়েলের সঙ্গে সমঝোতা চুক্তিতে রাজি করিয়ে দেওয়া চেষ্টা করতে পারে।

সৌদি আরব ইসরাইলের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করার জন্য বাহরাইনকে অনুমোদন দিয়েছে কিনা জানতে চাইলে বাহরাইন সরকারের এক মুখপাত্র বলেন, ‘আঞ্চলিক ন্যায়বিচার ও স্থায়ী শান্তি অর্জনের জন্য দেশটি তার সমস্ত কৌশলগত অংশীদারদের সঙ্গে কাজ করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।’

গত মঙ্গলবার হোয়াইট হাউজে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুসহ আমিরাত ও বাহরাইনের পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা একটি চুক্তিতে সই করেন। ওই অনুষ্ঠানে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পও যোগ দিয়েছিলেন। ওই ‘ঐতিহাসিক চুক্তি’র দিনটিকে ট্রাম্প ‘নতুন মধ্যপ্রাচ্যের ভোর’ হিসেবে উল্লেখ করেন। তবে, সেখানে কোনো সৌদি প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন না।

যুবরাজ সালমানের অবস্থান

যুবরাজ সালমান শুরু থেকেই ধর্মীয় উগ্রবাদকে নির্মূল ও ইসলামের আরও সহিষ্ণু দৃষ্টি প্রচার করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। তিনি সবসময় ইহুদী ধর্মসহ অন্যান্য ধর্মের সঙ্গে সম্প্রীতি রাখার দিকে ইঙ্গিত করেছেন।

২০১৮ সালে তিনি ইসরায়েলিদের নিজস্ব জমিতে থাকার অধিকার আছে বলে জানান।

সৌদি ও পশ্চিমা রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলেছেন, ইসরায়েলের সঙ্গে আনুষ্ঠানিক সম্পর্কের ঝুঁকিগুলো কী হতে পারে তা সৌদি যুবরাজ জানেন।

এটা সৌদি আরবকে আঞ্চলিকভাবে মারাত্মক সমালোচনার মুখে ফেলবে। কেবল ফিলিস্তিনিদের পরিত্যাগ করার জন্য নয়, বরং ইসরায়েলকে জেরুজালেমের পুরো নিয়ন্ত্রণ নিতে ও ইসলামের তৃতীয়-পবিত্রতম স্থান আল আকসা মসজিদে প্রবেশের অনুমতি দেওয়ার মতো সিদ্ধান্তে সম্মতি দেওয়ার কারণে সৌদি আরব আঞ্চলিক বিতর্কে পড়বে।

যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক কূটনীতিক রান্ডেল ১৫ বছর সৌদি আরবে কর্মরত ছিলেন। তার মতে, যুবরাজ সালমান ইসরায়েলের সঙ্গে আনুষ্ঠানিক সমঝোতায় পৌঁছানোর আগে অন্যান্য দেশ, বিশেষ করে- সুদান ও মরক্কোর মতো দেশ যেখানে সৌদির প্রভাব আছে, সেগুলোকে চাপ দেবে।

২০১৫ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত জাতিসংঘে নিযুক্ত ইসরায়েলের রাষ্ট্রদূত ড্যানি ড্যানন জানান, সৌদি ও আমিরাতের অংশীদারদের সঙ্গে কয়েক ডজন ব্যক্তিগত কথোপকথনের পাশাপাশি কর্মকর্তাদের সফর, মূলত ইরানের বিরুদ্ধে ক্রিয়াকলাপকে সমন্বিত করার জন্য বেশ কিছু সামাজিক চুক্তিও করতে হয়েছে।

তিনি বলেন, ‘ইসরায়েলকে পুরোপুরি স্বীকৃতি দেওয়ার ক্ষেত্রে আরও সময় লাগতে পারে।’

অনেক বিশ্লেষকদের ধারণা, ইসরায়েলের সঙ্গে আনুষ্ঠানিকভাবে সমঝোতা চুক্তিতে পৌঁছানোর ক্ষেত্রে সর্বশেষ আরব দেশ হবে সৌদি আরব।

এ ব্যাপারে যুবরাজ সালমানই ভূমিকা রাখবেন।

যুবরাজের ঘনিষ্ঠ দুই উপদেষ্টা জানান, তিনি ইসরায়েলের সঙ্গে একটি চুক্তিতে পৌঁছাতে চান। তবে তিনি এটাও জানেন যে, যতদিন বাদশা বেঁচে আছেন ততদিন এটা প্রায় অসম্ভব।

স্থানীয় গণমাধ্যমকে আমিরাত ও বাহরাইনের চুক্তি নিয়ে খবর প্রকাশের জন্য নির্দেশনা দেন যুবরাজ।

সৌদি সংবাদপত্রগুলোর সম্পাদকদের উদ্দেশ্যে পাঠানো একটি বার্তায় চুক্তিটিকে ‘ঐতিহাসিক এবং সম্মানজনক’ হিসেবে তুলে ধরে খবর প্রকাশের জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়। ওই বার্তাটির একটি অনুলিপি ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল হাতে পেয়েছে।

পরিচয় প্রকাশে অনিচ্ছুক এক সৌদি উপদেষ্টা বলেন, ‘তিনি (যুবরাজ) যাচাই করছেন। বাদশাহ হওয়ার পর সৌদি আরবে যেসব পরিবর্তন আসবে সেসবের জন্য দেশের মানুষকে প্রস্তুত করছেন।’

Comments

The Daily Star  | English

Unrest emerges as a new threat to RMG recovery

The number of apparel work orders received by Bangladeshi companies from international retailers and brands for the autumn and winter seasons of 2025 dropped by nearly 10 percent compared to the past due to major shocks from the nationwide student movement and labour unrest in major industrial belts over the past two and half months.

8h ago