ঢাকা ও চট্টগ্রাম ওয়াসায় বিতর্কিতদের পুনর্নিয়োগ না দেয়ার আহ্বান ক্যাবের
ঢাকা ও চট্টগ্রাম ওয়াসায় তাকসিম এ খান ও এ কে এম ফজলুল্লাহকে আবারও ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) হিসেবে নিয়োগ না দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে ক্রেতা-ভোক্তাদের জাতীয় প্রতিনিধিত্বকারী প্রতিষ্ঠান কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব)।
আজ রবিবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে এ আহ্বান জানানো হয়।
একই ব্যক্তিকে বারবার নিয়োগ উদ্যোগের প্রতিবাদ জানিয়ে ক্যাব নেতারা বলেন, বর্তমান দুই এমডিকে অনৈতিক ও বিধিবহির্ভূতভাবে পুনঃনিয়োগ দেওয়ার সুপারিশ করেছে ওয়াসা বোর্ড। যা ওয়াসার কার্যক্রম ও নীতিমালাকে সহায়তা করার জন্য বোর্ড সদস্যদের ওপর অর্পিত দায়িত্বের বরখেলাপ। কারণ বোর্ড সদস্যদের ওয়াসার স্বার্থ সুরক্ষার জন্য সরকার নিয়োগ দিয়েছে। কিন্তু তারা ব্যবস্থাপনা পরিচালকের স্বার্থ রক্ষা ছাড়া কিছুই করতে পারেনি।
ক্যাব প্রশ্ন রাখে, এক ব্যক্তির পুনঃনিয়োগের জন্য বোর্ড সভা আহ্বান করা কতটা যুক্তিসঙ্গত ও নীতি নৈতিকতার সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ?
বিবৃতিদাতারাদের মধ্যে রয়েছেন- ক্যাব কেন্দ্রীয় কমিটির ভাইস প্রেসিডেন্ট এস এম নাজের হোসাইন, ক্যাব চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাধারণ সম্পাদক কাজী ইকবাল বাহার ছাবেরী, ক্যাব মহানগরের সভাপতি জেসমিন সুলতানা, সাধারণ সম্পাদক অজয় মিত্র।
‘নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করেই ঢাকা ও চট্টগ্রাম ওয়াসার ব্যবস্থাপনায় এক ব্যক্তির অনৈতিক ও অবৈধ বহাল অব্যাহত রেখে দীর্ঘকালের লালিত এককেন্দ্রিক আধিপত্যবাদ অপরিবর্তিত রাখার সুযোগ তৈরি করা হয়েছে। রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন সেবা প্রতিষ্ঠানের ধারাবাহিক ব্যর্থতা ও গ্রাহকদের কাছে কাঙ্ক্ষিত সেবা দিতে অনিয়মের গুরুতর সব অভিযোগ থাকার পরও এই পদে প্রশ্নবিদ্ধ নিয়োগ ও পুনঃনিয়োগ দুর্নীতি ও অনিয়মের বিরুদ্ধে প্রধানমন্ত্রীর ‘শূন্য সহনশীলতাকে’ বৃদ্ধাঙ্গুলি প্রদর্শনের সামিল বলে মন্তব্য করে ক্যাব।
বিবৃতিতে ক্ষোভ প্রকাশ করে বলা হয়, ‘সরকারি যে কোন চাকরিতে নিয়োগে বিধিমালা অনুযায়ী হওয়ার কথা। আর একজন কতবার চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ পেতে পারেন? তার সুনির্দিষ্ট ব্যাখ্যা থাকার পরও দুই ওয়াসায় বোর্ড সভার আলোচ্য সুচিতে শুধুমাত্র বর্তমান ব্যবস্থাপনা পরিচালকের নাম উল্লেখ করে তাকে আবারও তিন বছর মেয়াদে পুনঃনিয়োগের সুপারিশ চূড়ান্ত করার কথা বলা হয়েছে। নিয়ম অনুযায়ী এই পদে দরখাস্ত আহ্বান করা হয়েছিল কি না, কারা আবেদন করেছিলেন, কেন তারা যোগ্য বিবেচিত হলেন না বা কেন বর্তমান ব্যবস্থাপনা পরিচালকই একমাত্র উপযুক্ত প্রাার্থী, কেন সংশ্লিষ্ট বিধি অবমাননা করে মেয়াদের পর মেয়াদ একই ব্যক্তিকে বারবার পুনঃ নিয়োগ অপরিহার্য তার প্রক্রিয়াগত প্রশ্নের উত্তর যাচাই করা হয়েছে কি না, তার উল্লেখ দরকার ছিল।’
ক্যাব নেতারা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘ঢাকা ও চট্টগ্রাম ওয়াসার দুই বর্তমান ব্যবস্থাপনা পরিচালক ২০০৯ সালে প্রশ্নবিদ্ধ বিতর্কিত নিয়োগের পর টানা পাঁচ মেয়াদে ১১-১২ বছর ধরে দায়িত্ব পালন করছেন। প্রতিবারই নিয়োগ নবায়নের ক্ষেত্রে কোনো না কোনোভাবে আইন ও নীতিমালার ব্যত্যয় ঘটিয়েছেন। কিন্তু সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় থেকে পরবর্তী নিয়োগে সতর্কতা অবলম্বনের জন্য পরামর্শ দেয়া হলেও কখনো বয়সসীমা বাড়িয়ে, আবার কখনো বোর্ডের সাম্প্রতিক সভার সুপারিশ পাশ কাটিয়ে পুরনো সভার সুপারিশ ব্যবহার করে, এমনকি বোর্ডের মতামত গ্রহণেরই তোয়াক্কা না করে পুনঃনিয়োগ দেয়া হয়।
একই ঘটনার পুনরাবৃত্তির না ঘটিয়ে বর্তমান দুই ব্যবস্থাপনা পরিচালকের নিয়োগে স্বচ্ছ প্রক্রিয়ায় সংশ্লিষ্ট খাতে যোগ্য, অভিজ্ঞদের নতুন ব্যবস্থাপনা পরিচালক নিয়োগ দেয়ার দাবি জানিয়েছে ক্যাব। একইসঙ্গে গ্রাহকদের স্বার্থ সুরক্ষায় বর্তমান এমডিসহ ওয়াসার যাবতীয় নিয়োগ প্রক্রিয়ার বিষয়ে সম্পূর্ণ নিরপেক্ষ তদন্ত ও নিরীক্ষার দাবি তাদের।
Comments