চুল গজাতে বায়োটিনের অপব্যবহার
ইদানিং অনেকে চুল পড়ে যাওয়া রোধ করতে বা চুল গজাতে বিদেশ থেকে আমদানি করা দামি বায়োটিন ওষুধ হিসেবে খাচ্ছেন। কিছু চিকিৎসক রোগীদের বায়োটিন গ্রহণে উৎসাহিত করছেন বলেও প্রতীয়মান। কিন্তু, প্রশ্ন হচ্ছে— বায়োটিন চুল গজাতে কাজ করে কি না? কিংবা বাড়তি বায়োটিন আদৌ খাওয়ার প্রয়োজনীয়তা রয়েছে কি না? সাধারণত অপুষ্টিতে না ভুগলে একজন সুস্থ-স্বাভাবিক মানুষের শরীরে বায়োটিনের ঘাটতি হওয়ার সম্ভবনা খুবই কম।
বায়োটিন কি?
বায়োটিন ভিটামিন বি গোত্রের একটি ভিটামিন, যা ভিটামিন এইচ নামেও পরিচিত। এটি শরীরে তৈরি হয় না। কাজেই দৈনন্দিন খাবারের মাধ্যমেই এর চাহিদা পূরণ করতে হয়। আবার বেশি মাত্রায় গ্রহণ করলেও এটি শরীরে জমে থাকে না। একজন প্রাপ্ত বয়স্ক মানুষের জন্য প্রতিদিন ৫০-১০০ মাইক্রোগ্রাম বায়োটিন প্রয়োজন হয়। যা দৈনন্দিন খাবার থেকে মেটানোর জন্য যথেষ্ট।
বায়োটিন-সমৃদ্ধ খাবার
যেকোনো ধরনের ডাল, সয়াবিন, চাল, গম, ভুট্টা, বাদাম, ফুলকপি, ডিমের কুসুম, কলিজা, কলা, মাশরুম, চিনা/কাজু বাদামে যথেষ্ট পরিমাণ বায়োটিন থাকে। দৈনন্দিন খাদ্য তালিকায় এসব খাদ্যের যেকোনো একটি থাকলেও বায়োটিন ঘাটতির সম্ভাবনা নেই।
কী কাজ করে?
চুল, ত্বক, ও নখের গঠনে বায়োটিনের ভূমিকা রয়েছে। এ ছাড়াও, এটা বুদ্ধিমত্তা বাড়ানো, প্রদাহ বা ডায়াবেটিস কমাতে সাহায্য করে। খারাপ কোলেস্টেরল কমানো বা ভালো কোলেস্টেরল বাড়িয়ে রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রার ভারসাম্য রক্ষাও করে থাকে বায়োটিন।
অভাবে কী ঘটে?
বায়োটিনের অভাব ঘটলে ত্বক খসখসে বা লাল হয়ে যায়, চুল ঝরে পড়া ত্বরান্বিত করে। তবে, বায়োটিন চুল গজিয়ে উঠতে কাজ করে কি না, এই বিষয়ে অদ্যাবধি কোনো গ্রহণযোগ্য প্রমাণ বা গবেষণা নেই।
করণীয়
দৈনন্দিন খাবার তালিকায় বায়োটিন-সমৃদ্ধ খাদ্য রাখুন। শুধুমাত্র চিকিৎসকের পরামর্শে বায়োটিন ওষুধ হিসেবে গ্রহণ করতে পারেন।
লেখক: ডা. এম আর করিম রেজা, ত্বক, সৌন্দর্য ও সংক্রমণ রোগ বিশেষজ্ঞ
Comments