গাজনার বিলে মাছ ধরার ঘের, চাষাবাদ ব্যাহত
পাবনার সুজানগর উপজেলার গাজনার বিলে অর্ধশতাধিক মাছ ধরার বাঁশের ঘেরে বিলে জলবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। এতে করে জেলার সর্ববৃহৎ এ বিলে ফসল আবাদ ব্যাহত হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন কৃষকেরা। অভিযোগের পর অভিযান চালিয়ে ১০টি ঘের ভেঙ্গে দিয়েছে উপজেলা প্রশাসন।
সুজানগর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. ময়নুল হক সরকার দ্য ডেইলি স্টারকে জানান, গাজনার বিলে প্রায় ১৭ হাজার হেক্টর আবাদি জমি আছে। যার মধ্যে প্রায় ১০ হাজার হেক্টর জমিতেই জলাবদ্ধতার কারণে সময়মত চাষাবাদ করতে পারে না কৃষক।
তিনি বলেন, প্রভাবশালীরা মাছ ধরার জন্য প্রতিবছর বর্ষার পর বিলে পানি প্রবাহের মুখ বন্ধ করে মাছ ধরার ঘের তৈরি করে ফলে বিলের পানি সময়মত নিষ্কাশন সম্ভব হয় না, ফলে বিপুল পরিমান জমি অনাবাদি থেকে যায়।
তিনি বলেন, জলাবদ্ধতার কারণে বিলে ব্যাপক আকারে কচুরিপানা হওয়ায় তা সরিয়ে ফসল আবাদে হিমশিম খেতে হয় কৃষকদের।
কৃষক নেতা হাবিবুর রহমান বলেন, সরকার ২০১২ সালে প্রায় ৪১৩ কোটি টাকা ব্যয়ে বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণ করে। প্রকল্পের আওতায় বিলের ক্যানেল গুলো খনন করা হয়, বিলের মাঝে পানি নিষ্কাশনের জন্য ড্রেনেজ ব্যবস্থা করা হয়, বিলের ভেতর দিয়ে পাকা রাস্তা তৈরি করা হয় যাতে করে কৃষকরা বিলে আবাদ করে ফসল ঘরে তুলে আনতে পারে। কিন্তু রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে এবং প্রভাবশালীদের কারণে বিলের জলাবদ্ধতা দূর করা যাচ্ছে না। ফলে বিশাল এ বিলের বিরাট এলাকাই এখন সময়মত চাষের আওতায় আনা সম্ভব হচ্ছে না।
কৃষকদের দাবির মুখে সুজানগর উপজেলা প্রশাসন গতকাল সোমবার দিনভর বিলের বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে মাছ ধরার ১০টি বড় বাঁশের ঘের ভেঙ্গে দিয়েছে বলে জানান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. রওশন আলী। তবে অভিযানে কাউকে আটক করা হয়নি।
তিনি দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, বিলের পানি প্রবাহের পথ বন্ধ করে মাছ ধরার নামে এসব অবৈধ বাঁশের ঘের দিয়ে বিলের পানি নিষ্কাশনে ব্যাঘাত সৃষ্টি করা হচ্ছে। স্থানীয়দের কাছ থেকে খবর পেয়ে উপজেলা প্রশাসন ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে বিলের পানি প্রবাহের পথ উন্মুক্ত করে।
বিলের অন্য কোথাও এরকম প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করা হলে আবারও অভিযান পরিচালনা করা হবে বলে জানান তিনি।
Comments