লালমনিরহাট-কুড়িগ্রামে ৩০ হাজার পরিবার পানিবন্দি

তিস্তা নদীর পানি কমলেও বেড়েছে ধরলা নদীর পানি। ফলে লালমনিরহাট ও কুড়িগ্রামে তিস্তা ও ধরলাপাড়ে ১০০টি চর, দ্বীপচর ও নদী তীরবর্তী গ্রামের প্রায় ৩০ হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে মানেবতর জীবন যাপন করছে। কিছু পরিবার বাড়িঘর ছেড়ে আশ্রয় নিয়েছে সরকারি রাস্তা ও বাঁধের ওপর। অনেকে বন্যার পানির সঙ্গে লড়াই করে বাড়িতে খাটের ওপরে রয়েছেন। অনেক বানভাসী পরিবারের গবাদি পশু-পাখি ও বাড়ির আসবাব ভেসে গেছে বন্যার পানিতে। খাদ্য, বিশুদ্ধ পানি ও যাতায়াত কষ্টে রয়েছেন বন্যাদুর্গত নদীপাড়ের এসব মানুষেরা।
Deepchar_25Sep20.jpg
লালমনিরহাট ও কুড়িগ্রামে তিস্তা ও ধরলাপাড়ে ১০০টি চর, দ্বীপচর ও নদী তীরবর্তী গ্রামের প্রায় ৩০ হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে মানেবতর জীবন যাপন করছে। ছবি: স্টার

তিস্তা নদীর পানি কমলেও বেড়েছে ধরলা নদীর পানি। ফলে লালমনিরহাট ও কুড়িগ্রামে তিস্তা ও ধরলাপাড়ে ১০০টি চর, দ্বীপচর ও নদী তীরবর্তী গ্রামের প্রায় ৩০ হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে মানেবতর জীবন যাপন করছে। কিছু পরিবার বাড়িঘর ছেড়ে আশ্রয় নিয়েছে সরকারি রাস্তা ও বাঁধের ওপর। অনেকে বন্যার পানির সঙ্গে লড়াই করে বাড়িতে খাটের ওপরে রয়েছেন। অনেক বানভাসী পরিবারের গবাদি পশু-পাখি ও বাড়ির আসবাব ভেসে গেছে বন্যার পানিতে। খাদ্য, বিশুদ্ধ পানি ও যাতায়াত কষ্টে রয়েছেন বন্যাদুর্গত নদীপাড়ের এসব মানুষেরা।

বন্যাদুর্গত মানুষেরা দ্য ডেইলি স্টারকে জানান, এ বছর দফায় দফায় বন্যা পরিস্থিতির ধকলে পড়ে চরম অশান্তি ভোগ করছেন তারা। একটি বন্যার ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে না উঠতে আরেকটি বন্যা পরিস্থিতিতে পড়তে হচ্ছে তাদের। এবারের বন্যায় কষ্ট করে লাগানো আমন ধান ও সবজির খেত তলিয়ে গেছে পানির নিচে।

তারা জানান, আজ-কালের মধ্যে বন্যার পানি নেমে না গেলে ফসল হারানোর ক্ষতিতে পড়তে পারেন নদীপাড়ের মানুষ। এমন আশঙ্কা তাদের জন্য পীড়াদায়ক হয়ে উঠেছে।

‘এ বছর বন্যা আর নদীভাঙনে আমরা সর্বস্বান্ত হয়ে গেলাম। কষ্ট করে জমিতে যে আাবাদ লাগিয়েছিলাম, সেগুলোও এখন পানির নিচে তলিয়ে গেছে’, বলছিলেন কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলার ধরলাপাড়ের গ্রাম শিমুলবাড়ী গ্রামের বন্যাদুর্গত কৃষক মোবারক হোসেন (৬৭)। কান্না-বিজড়িত কণ্ঠে তিনি আরও বলেন, ‘গেল তিন দফা বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে স্থানীয় মহাজনের কাছ থেকে চড়া সুদে ঋণ নিয়ে জমিতে ফসল লাগিয়েছিলাম। সব বন্যার পানির নিচে।’

লালমনিরহাট সদর উপজেলার চর খারুয়া এলাকার বন্যাদুর্গত কৃষক খামির উদ্দিন (৬০) বলেন, ‘দফায় দফায় বন্যা পরিস্থিতি আমাদেরকে অসহায় করে তুলেছে। একদিকে বাড়ি-ঘরের ক্ষতি করছে, অন্যদিকে ফসলের চরম ক্ষতি করছে। এরকম বন্যা পরিস্থিতি জীবনে দেখিনি।’

লালমনিরহাট ও কুড়িগ্রামের পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্র জানায়, উজানের পানি না আসায় তিস্তা নদীর পানি গতকাল বৃহস্পতিবার রাত থেকে বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তবে, উজানের পানিতে ধরলা নদীর পানি আরও বেড়ে গতকাল রাত থেকে বিপৎসীমার ৩৯ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ধরলা নদীর পানি আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

অনবরত বৃষ্টিপাত ও উজানের পানিতে গত ২৩ সেপ্টেম্বর থেকে বাড়তে থাকে তিস্তা ও ধরলা নদীর পানি। গতকাল রাতে তিস্তা নদীর পানি হ্রাস পেলেও ধরলা নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে বলে দ্য ডেইলি স্টারকে জানিয়েছেন লালমনিরহাট পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মিজানুর রহমান।

Comments

The Daily Star  | English

One month of interim govt: Yunus navigating thru high hopes

A month ago, as Bangladesh teetered on the brink of chaos after the downfall of Sheikh Hasina, Nobel Laureate Muhammad Yunus returned home to steer the nation through political turbulences.

10h ago