বাংলাদেশে অভিনব প্রক্রিয়ায় গরু পাচারচক্রে সক্রিয় বিএসএফ

বাংলাদেশের সীমান্ত দিয়ে গরু পাচারের পেছনে কাজ করতেন ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) ও দেশটির শুল্ক বিভাগের কয়েকজন অসাধু কর্মকর্তা। ভারতের কেন্দ্রীয় তদন্ত ব্যুরো (সিবিআই) ইতোমধ্যে বিএসএফ কমান্ডার সতীশ কুমার ছাড়াও পাচারচক্রের সঙ্গে আরও সাত বিএসএফ সদস্য ও শুল্ক বিভাগের পাঁচ জন কর্মকর্তার জড়িত থাকার প্রমাণ পেয়েছে।
প্রতীকী ছবি। স্টার অনলাইন গ্রাফিক্স

বাংলাদেশের সীমান্ত দিয়ে গরু পাচারের পেছনে কাজ করতেন ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) ও দেশটির শুল্ক বিভাগের কয়েকজন অসাধু কর্মকর্তা। ভারতের কেন্দ্রীয় তদন্ত ব্যুরো (সিবিআই) ইতোমধ্যে বিএসএফ কমান্ডার সতীশ কুমার ছাড়াও পাচারচক্রের সঙ্গে আরও সাত বিএসএফ সদস্য ও শুল্ক বিভাগের পাঁচ জন কর্মকর্তার জড়িত থাকার প্রমাণ পেয়েছে।

গত ২৩ সেপ্টেম্বর বিএসএফ কমান্ডার সতীশ কুমার, গরু পাচারকারী ইনামুল হক, আনোয়ারুল শেখ ও মোহাম্মদ গোলাম মোস্তফা নামে তিন জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। অভিনব প্রক্রিয়ায় সীমান্তে গরু পাচার চালানো হয় বলে জানা গেছে।

সিবিআইয়ের বরাতে ভারতীয় সংবাদমাধ্যমগুলো জানায়, নিয়ম অনুযায়ী বিএসএফ প্রায়ই সীমান্তে গরু বাজেয়াপ্ত করে। তবে, খাতায়-কলমে গরুগুলোকে কম ওজনের বাছুর হিসেবে দেখানো হয়। খাতা-কলমে বাছুর অথচ বাস্তবে পূর্ণ বয়স্ক গরুগুলোকে নিয়ম মেনে বাজারে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে বাছুর হিসেবে গরুগুলো কম দামে নিলামে ওঠে। নিলামে মূলত পাচারকারীরাই অংশ নেয় ও গরুগুলোকে কাগজে-কলমে কিনে নেয়। নিলাম এমনভাবে করা হতো, যাতে পাচারের সময় বাজেয়াপ্ত গরু আবারও পাচারকারী আনোয়ার ও মোস্তাফার হাতেই পৌঁছায়।

সিবিআই জানায়, বিএসএফ কর্মকর্তাদের গরু পিছু দুই হাজার টাকা ও সংশ্লিষ্ট শুল্ক বিভাগের কর্মকর্তাদের ৫০০ টাকা ঘুষ দিতেন ইনামুল হক। এরপর পাচারকারীরা আবারও সেই গরু সীমান্তের অন্য পাড়ে পৌঁছে দেয়। কাগজে কলমে বাছুর হিসেবে বিক্রি হওয়া গরুগুলোকে আর সীমান্তে আটক করা হতো না।

হিন্দুস্তান টাইমস জানায়, ২০১৫ সালের ডিসেম্বর থেকে ২০১৭ সালের এপ্রিল পর্যন্ত মালদহে ৩৬ নম্বর ব্যাটালিয়নের কমান্ডার হিসেবে দায়িত্বে ছিলেন সতীশ কুমার। তার অধীনে মালদহে দুই ও মুর্শিদাবাদে চার কোম্পানি বাহিনী ছিল।

সতীশ কুমার দায়িত্ব থাকাকালীন ওই ১৬ মাসে সীমান্তে পাচারের সময় ২০ হাজারেরও বেশি গরু বাজেয়াপ্ত করেছে বিএসএফ। কিন্তু, কখনো গাড়ি কিংবা পাচারকারীদের আটক করা হয়নি।

মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, বাজেয়াপ্ত গবাদি পশুদের চারণের জন্য কোনো টাকা নেওয়া হতো না। তবে, খাওয়ানোর জন্য কয়েকজন বিএসএফ কর্মকর্তাদের গরু পিছু ৫০ টাকা করে দিতেন ইনামুল, মোস্তফা ও আনোয়ার।

২০১৮ সালে জানুয়ারিতে বিএসএফ কমান্ডার জিবু টি ম্যাথুকে নগদ ৪৭ লাখ টাকাসহ কেরালার আলাপ্পুজা স্টেশন থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। একইবছর জিবু টি ম্যাথুকে ঘুষ দেওয়ার অভিযোগে ইনামুলকে গ্রেপ্তার করেছিল সিবিআই।

ইনামুলের বিরুদ্ধে গরু পাচারের অভিযোগে ২০১৮ সালের এপ্রিল থেকে তদন্ত শুরু করে সিবিআই। সেই তদন্তেই কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার হাতে এসব তথ্য বেরিয়ে আসে।

গত ২৩ সেপ্টেম্বর দিল্লি, পশ্চিমবঙ্গের কলকাতা, শিলিগুড়ি, মুর্শিদাবাদ, উত্তরপ্রদেশের গাজিয়াবাদ, পঞ্জাবের অমৃতসর ও ছত্তিশগড়ের রায়পুরের ১৫টি জায়গায় তল্লাশি চালানো হয়।

আরও পড়ুন:

গরু পাচারে সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে বিএসএফ কর্মকর্তা গ্রেপ্তার

Comments

The Daily Star  | English

The Daily Star-IPDC unsung women nation builders award-2023: Hats off to grassroots women trailblazers

Five grassroots women were honoured at the seventh edition of the Unsung Women Nation Builders Award-2023 yesterday evening for their resilience and dedication that empowered themselves and brought about meaningful changes in society.

2h ago