পুরো কাজের সমন্বয় দাবি

সৌদি আরবগামী সবার করোনা নেগেটিভ, সনদ মিলবে বিমানবন্দরে

আজ রাতের ফ্লাইটে সৌদি আরবগামী বাংলাদেশিদের কারও করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়নি। তবে এই প্রবাসীদের কেউই এখনো পরীক্ষার প্রতিবেদনের প্রিন্ট বা ছাপা কপি হাতে পাননি।
হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর। ফাইল ছবি

আজ রাতের ফ্লাইটে সৌদি আরবগামী বাংলাদেশিদের কারও করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়নি। তবে এই প্রবাসীদের কেউই এখনো পরীক্ষার প্রতিবেদনের প্রিন্ট বা ছাপা কপি হাতে পাননি।

স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা বলছেন, প্রত্যেকের মোবাইলে মেসেজ দেওয়া হয়েছে। যাদের হোয়াটস অ্যাপ আছে, সেখানেও মেসেজ দেওয়া হয়েছে। তারা এগুলো নিয়েই বিমাবন্দরে চলে যেতে পারবেন। সেখান থেকেই প্রয়োজনে প্রিন্ট কপি দেওয়া হবে।

সৌদি এয়ারলাইনসের এসভি-৮০২ ফ্লাইটে আজ রাতে ২৬০ জন বাংলাদেশির সৌদি আরবে যাওয়ার কথা। তারা সবাই কোভিড-১৯ সনদের অপেক্ষায় ছিলেন। কিন্তু রাত ৮টা পর্যন্ত তারা কেউ মেসেজ না পাওয়ায় দুশ্চিন্তায় ছিলেন। তবে রাত ৮টার পর থেকেই অনেকেই মেসেজ পেতে থাকেন বলে জানিয়েছেন প্রবাসীরা।

বিদেশগামীদের করোনা পরীক্ষার দায়িত্বে থাকা মহাখালীর ডিএনসিসি মার্কেটে করোনাভাইরাস নমুনা পরীক্ষা কেন্দ্রের সমন্বয়ক চিকিৎসক সমীর কান্তি সরকার রাত সাড়ে ৯টায় দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘আমরা রাত ৮টার পর থেকে সবাইকে মেসেজ দেওয়া শুরু করেছি। যাদের হোয়াটস অ্যাপ আছে সেখানেও মেসেজ দেওয়া হয়েছে। আজকের ২৬০ জনসহ মোট ৩০০ জনের নমুনা পরীক্ষা হয়েছে। কারও করোনা শনাক্ত হয়নি। তবে মহাখালীতে প্রিন্ট নিতে আসলে বিমানবন্দরে পৌঁছানো অসম্ভব হয়ে যাবে। কাজেই সৌদি আরবগামী প্রত্যেককে অনুরোধ করছি, তারা যেন বিমানবন্দরে চলে যান। সেখানে আমাদের হেলথ ডেস্কের কর্মকর্তাদের আমার বলে দিয়েছি। প্রয়োজনে সেখান থেকেই প্রিন্ট কপি দেওয়া হবে। আমরা চাইছি না একজনও ফ্লাইট মিস করুক।’

সারাদিন করোনা সনদের অপেক্ষায় থাকা মোহাম্মদ শহিদুল্লাহ বলেন, ‘আমাদের ওপর দিয়ে ঝড় যাচ্ছে। আমার বুঝতে পেরেছিলাম যথাসময়ে প্রিন্ট কপি পাব না। কাজেই রাতেই বিমানবন্দরে চলে গেছি। আমরা অনেকেই গত পাঁচদিন ধরে এক কাপড়ে আছি। এভাবে যেন আর প্রবাসীদের কষ্ট না দেওয়া হয়।’

বিমানবন্দরে থাকা বেশ কয়েকজন প্রবাসী জানান, ফকিরাপুলসহ বিভিন্ন হোটেলে থাকা অনেকেই এখনো বিমানবন্দরে পৌঁছাননি। তারা হয়তো এখন পথে আছেন।

গত ১৫ সেপ্টেম্বর থেকে আন্তর্জাতিক ফ্লাইট চালুর অনুমতি দেয় সৌদি সরকার। এরপর সৌদি এয়ারলাইনসকে সপ্তাহে দুটি ফ্লাইট চালানোর অনুমতি দেয় বাংলাদেশ। এই টিকিট পাওয়া নিয়ে শুরু হয় যুদ্ধ।

প্রবাসীরা বলছেন, ৩০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে না যেতে পারলে তাদের চাকরি থাকবে না, ভিসায়ও জটিলতা হবে। ফলে গত সপ্তাহ পুরোটাই রাজধানীর কারওয়ান বাজারে সোনারগাঁও হোটেল সংলগ্ন সৌদি এরাবিয়ান এয়ারলাইনসের টিকিট বুকিং অফিসের সামনে প্রবাসীরা বিক্ষোভ করেন।

সমস্যা সমাধানে বাংলাদেশের অনুরোধের প্রেক্ষিতে আটকে পড়া প্রবাসীদের কাজের অনুমতিপত্র বা আকামার মেয়াদ আরও ২৪ দিন বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেয় সৌদি আরব। তাতে বেশ স্বস্তি এলেও টিকিট ও ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে করোনা সনদ নিয়ে দুশ্চিন্তার এখনো শেষ নেই।

প্রবাসীরা জানিয়েছেন, বহু কষ্টে টিকিট পাওয়ার পর বৃহস্পতিবার বিকাল থেকেই তারা ছুটতে থাকেন মহাখালীর করোনা পরীক্ষা কেন্দ্রে। অনেকেই বিকালের আগে নমুনা দিতে পারলেও, নির্ধারিত সময়ে পৌঁছাতে পারেননি অনেকে। ফলে শুক্রবার ভোর থেকে আবার এই প্রবাসীরা লাইনে দাঁড়ান।

রাজধানীর মহাখালীর ডিএনসিসি মার্কেটে করোনাভাইরাস নমুনা পরীক্ষা কেন্দ্রের দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তারা জানান, ২৬, ২৭ ও ২৮ সেপ্টেম্বরের সৌদি এয়ারলাইনস ও বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের টিকিট যারা হাতে পেয়েছেন, তারা সবাই করোনা পরীক্ষার জন্য আসছেন। ফলে শুক্রবার সকাল থেকেই প্রচণ্ড ভিড়। এর মধ্যে বিদ্যুৎ চলে যাওয়ায় আরও সমস্যা তৈরি হয়।

নমুনা পরীক্ষা কেন্দ্রের দায়িত্বে থাকা চিকিৎসক সমীর কান্তি সরকার রাতে দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘প্রচণ্ড চাপ যাচ্ছে। আমরা আমাদের সাধ্যমতো চেষ্টা করছি। কিন্তু পুরো কাজটার একটা সমন্বয় দরকার। বৃহস্পতিবার বিকাল ৪-৫টায় অনেকে টিকিট পেয়েছেন। আমাদের অনুরোধ, যাদেরকে টিকিট দেওয়া হচ্ছে, তাদের যেন দুপুর ১২টা থেকে সাড়ে ১২টার মধ্যে টিকিট দিয়ে দেওয়া হয়, যাতে দ্রুত এসে ওইদিনই তারা নমুনা দিতে পারেন। এই পুরো কাজের যথাযথ সমন্বয় দরকার।’

শরিফুল হাসান, ফ্রিল্যান্স সাংবাদিক

আরও পড়ুন:

রাতে সৌদির ফ্লাইট, নাটকীয় প্রতীক্ষা করোনা সনদের

Comments

The Daily Star  | English

One month of interim govt: Yunus navigating thru high hopes

A month ago, as Bangladesh teetered on the brink of chaos after the downfall of Sheikh Hasina, Nobel Laureate Muhammad Yunus returned home to steer the nation through political turbulences.

7h ago