এমসি কলেজের ছাত্রাবাসে অভিযান, অস্ত্র উদ্ধার
সিলেটের ঐতিহ্যবাহী মুরারিচাঁদ (এমসি) কলেজের ছাত্রাবাসে গতরাতে ধর্ষণের ঘটনায় ধর্ষণ ও অস্ত্র মামলা দায়ের করা হয়েছে।
গতকাল শুক্রবার রাতে ধর্ষণের এ ঘটনা ঘটে।
সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার জ্যোতির্ময় সরকার গতরাতে দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘ছয় জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাতনামা আরও কয়েকজনের নামে মামলা দায়ের করেছেন ধর্ষণের শিকার তরুণীর স্বামী।’
মামলায় সাইফুর রহমান, শাহ মাহবুবুর রহমান রনি, অর্জুন লস্কর, মাহফুজুর রহমান মাসুম, তারেক আহমেদ ও রবিউল ইসলামের নাম উল্লেখ করা হয়েছে।
তাদের মধ্যে সাইফুর, মাহবুবুর, অর্জুন ও মাহফুজুর কলেজের শিক্ষার্থী এবং তারেক ও রবিউল বহিরাগত বলে জানা যায়।
কলেজের একাধিক শিক্ষার্থী নিশ্চিত করেছেন যে তারা বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কর্মী। তবে, সিলেট জেলা, মহানগর এবং কলেজে ছাত্রলীগের কোনো কমিটি না থাকায় তারা কোনো পদে নেই।
শাহপরান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল কাইয়ূম দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘আসামিদের গ্রেপ্তার করতে ছাত্রাবাসে অভিযান চালালে সেখান থেকে অস্ত্র উদ্ধার হয়। রাতেই পুলিশ বাদী হয়ে সাইফুর রহমানকে আসামি করে অস্ত্র মামলা দায়ের করেছে।’
অভিযানে ছাত্রাবাসের সুপারেন্ডেন্টের জন্য বরাদ্দকৃত একটি কক্ষ থেকে একটি পিস্তল, চারটি ধারালো অস্ত্র এবং কিছু লোহার রড উদ্ধার করেছে পুলিশ। পুলিশ জানিয়েছে এই কক্ষটি ছাত্রলীগের দখলে ছিল।
মামলার বরাত দিয়ে ওসি জানান, গতকাল রাত ৮টার দিকে ওই তরুণী তার স্বামীর সঙ্গে প্রাইভেটকার যোগে কলেজ ক্যাম্পাসে ঘুরতে আসলে কয়েকজন যুবক তাদেরকে ভয় দেখিয়ে কলেজের ছাত্রাবাসে নিয়ে যান। সেখানে স্বামীকে বেঁধে রেখে তরুণীকে কয়েকজন মিলে ধর্ষণ করেন।
অতিরিক্ত উপকমিশনার জ্যোতির্ময় সরকার বলেন, ‘খবর পেয়ে রাত ১২টার দিকে ধর্ষণের শিকার ওই তরুণী ও তার স্বামীকে উদ্ধার করা হয়েছে। তরুণীকে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজের ওয়ান-স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে ভর্তি করা হয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আসামিরা পলাতক আছে। তাদের ধরতে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।’
অভিযোগ পাওয়া গেছে, ঘটনাটি মীমাংসা করতে স্থানীয় কয়েকজন আওয়ামী লীগ নেতা চেষ্টা চালান। এর কারণেই ভুক্তভোগীদের উদ্ধার করতে প্রায় দুই ঘণ্টা দেরি হয় এবং আসামীরা পালানোর সুযোগ পান।
পুলিশ এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
করোনা মহামারির কারণে কলেজ এবং ছাত্রাবাস বন্ধ ঘোষণা করা হলেও ছাত্রলীগের কর্মীরা সেখানেই অবস্থান করছিলেন।
কলেজের অধ্যক্ষ সালেহ আহমেদ দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘তারা কেউই কলেজের বর্তমান শিক্ষার্থী না। কয়েক বছর আগেই তারা পাশ করে বের হয়ে গেছে।’
আরও পড়ুন: এমসি কলেজে ধর্ষণ ঘটনায় ‘ছাত্রলীগ’র ৬ জনের নামে মামলা
Comments