গাজীপুরে পুলিশের অস্ত্র ও গুলি ছিনতাই, গ্রেপ্তার ৫
গাজীপুরের শ্রীপুরে আটকে রাখা ব্যক্তিদের উদ্ধারের সময় পুলিশের ওপর হামলা চালিয়ে অস্ত্র ও গুলি ছিনিয়ে নেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। পরে অভিযান চালিয়ে তিন ঘণ্টা পর অস্ত্র ও গুলি উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় পাঁচ জনকে গ্রেপ্তার করে আদালতে পাঠানো হয়েছে।
গতকাল দিবাগত রাত ১১টার দিকে উপজেলার নোয়াগাঁও এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এসময় পুলিশের একজন উপপরিদর্শক, একজন কনস্টেবল, একজন আনসার সদস্যসহ সাত জন আহত হন। আহতরা হলেন- উপপরিদর্শক(এসআই) রফিকুল ইসলাম, কনস্টেবল খোরশেদ আলম, আনসার সদস্য সুকুমার রায়।
যাদের আটকে রাখা হয়েছিল, তারা হলেন- আবুল হোসেন রনি, ফয়সাল আহমেদ, আবুল কালাম ও অমর বেপারী। তারা কুমিল্লা জেলার দেবীদ্বার, হোমনা ও লক্ষ্মীপুর জেলার রায়পুর উপজেলার বাসিন্দা। তারা বিদেশে লোক পাঠানোর কাজে নিয়োজিত প্রতিষ্ঠান ঢাকার ‘রাখা ইন্টারন্যাশনাল কোম্পানি’তে কাজ করেন।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- শ্রীপুরের নোয়াগাঁও গ্রামের মৃত আব্দুর রহমানের স্ত্রী রৌশনী, নাজমুল হকের স্ত্রী মনীষা মনি, আফসার উদ্দিনের ছেলে ফরহাদ, জাফর মোল্লার ছেলে তাজুল ইসলাম এবং সোলায়মানের ছেলে তাজুল ইসলাম।
উদ্ধারকৃতদের বরাত দিয়ে শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খোন্দকার ইমাম হোসেন জানান, আবুল হোসেন রনি বিদেশে লোক পাঠিয়ে থাকেন। নোয়াগাঁও গ্রামের রৌশনীর পরিবারের দুজনকে দুবাই পাঠানোর কথা বলে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে তিনি দুই লক্ষাধিক টাকা নেন। করোনাভাইরাস মহামারির কারণে বিদেশে পাঠাতে না পারায় ওই পরিবারের সদস্যরা তাদের টাকা ফেরত চান। আবুল হোসেন রনি কিছু টাকা ফেরতও দেন। পরে বিদেশে আরও লোক পাঠানোর কথা বলে খবর পাঠিয়ে তাদেরকে কুমিল্লা থেকে শ্রীপুরের নোয়াগাঁও গ্রামের রৌশনীর বাড়িতে আসতে বলেন।
গত বৃহস্পতিবার কুমিল্লা থেকে আবুল হোসেন রনি ও মালেক নামের একজন রৌশনীর বাড়িতে আসেন। পরে তাদেরকে ওই বাড়িতে আটক করে মারধর করা হয় এবং বাড়ি থেকে আরও টাকা নিয়ে আসার জন্য বলা হয়। তারা ফোনে যোগাযোগ করলে বিষয়টি মীমাংসার জন্য কুমিল্লা থেকে তাদের আরও তিনজন শুক্রবার নোয়াগাঁও আসেন। পরে তাদেরকেও আটক করে মারধর করা হয়। একপর্যায়ে তাদের মধ্য থেকে মালেক পালিয়ে রক্ষা পান। পরে তাদের মধ্য থেকে একজন কৌশলে ৯৯৯ নম্বরে ফোন করে পুলিশকে খবর দেন।
শুক্রবার দিবাগত রাত সাড়ে ১০টার দিকে পুলিশের একটি দল তাদের উদ্ধার করতে যায়। এসময় পুলিশ সদস্যদের দেখে রৌশনীর বাড়ির লোকজন ক্ষিপ্ত হয়। পরে তারা পুলিশ সদস্যদের মারধর করে একটি শটগান ও আট রাউন্ড গুলিভর্তি একটি ম্যাগজিন ছিনিয়ে নেয়।
এরপর শ্রীপুর থানার ওসি খোন্দকার ইমাম হোসেনসহ জেলা পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা রৌশনীর বাড়িতে বিশেষ অভিযান পরিচালনা করেন। পরে রাত দেড়টার দিকে অস্ত্র ও গুলিসহ তিন পুলিশ সদস্য এবং আটককৃত চার জনকে উদ্ধার করা হয়।
ওসি জানান, এ ঘটনায় গ্রেপ্তারকৃত পাঁচ জন, চিহ্নিত ২৪ জন ও অজ্ঞাতনামা কমপক্ষে ১৫ জনসহ ৪০ জনকে অভিযুক্ত করে একটি মামলা করা হয়েছে। আহত উপপরিদর্শক রফিকুল ইসলাম ওই মামলার বাদী। আটক করে রাখার ঘটনায় উদ্ধারকৃত আবুল হোসেন রনি গং পৃথক আরেকটি মামলা করেছেন। আহতদের শ্রীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।
Comments