আমি আসার আগেই সুয়ারেজকে বিক্রির সিদ্ধান্ত হয়: কোমান

লুইস সুয়ারেজের বিদায়ের ধরনটা মোটেও ভালো লাগেনি লিওনেল মেসির। অসন্তুষ্টি প্রকাশ করে বার্সেলোনা বোর্ডের প্রতি ক্ষোভ উগড়ে দিয়েছেন তিনি। তবে চমকপ্রদ ব্যাপার হলো, সুয়ারেজকে বিক্রির নেপথ্যের কারিগর হিসেবে যে রোনাল্ড কোমানের দিকে আঙুল তাক করছেন অনেকে, বার্সার সেই নতুন কোচও দায় চাপিয়েছেন ক্লাব কর্তাদের ঘাড়ে।
সুয়ারেজের সঙ্গে বার্সেলোনার চুক্তির মেয়াদের আরও এক বছর বাকি ছিল। কিন্তু কোমান দায়িত্ব গ্রহণের পরপরই উরুগুইয়ান স্ট্রাইকারকে স্পষ্ট করে জানিয়ে দেন যে, তার পরিকল্পনায় স্থান নেই সুয়ারেজের। বার্সার ইতিহাসের তৃতীয় সর্বোচ্চ গোলদাতাকে নতুন ক্লাব খুঁজে নেওয়ার পরামর্শও দেন তিনি। উপায়ন্তর না দেখে স্প্যানিশ লা লিগার আরেক শক্তিশালী ক্লাব অ্যাতলেতিকো মাদ্রিদে যোগ দিয়েছেন সুয়ারেজ। তার আগেও হয়েছে অনেক নাটক। বার্সা সভাপতি জোসেপ মারিয়া বার্তোমেউ শুরুতে সুয়ারেজকে অ্যাতলেতিকোতে যেতে দিতে সম্মত ছিলেন না।
বন্ধন ছিন্ন করে প্রিয় বন্ধুর অন্য কোনো ক্লাবে যোগ দেওয়া এমনিতেই কষ্টদায়ক। তার উপর মেসির দৃষ্টিতে, ‘সুয়ারেজকে বের করে দেওয়া হয়েছে বার্সা থেকে’। তাই বন্ধুর উদ্দেশ্যে আবেগঘন বার্তায় ক্লাব কর্তৃপক্ষের সমালোচনা করতে পিছপা হননি আর্জেন্টাইন ফরোয়ার্ড।
তবে কোমানের দাবি, যদিও তাকে ‘খলনায়ক’ হিসেবে উপস্থাপন করা হচ্ছে, সুয়ারেজকে বিক্রি করার সিদ্ধান্ত আসলে নেওয়া হয়েছিল তিনি ক্লাবে যোগ দেওয়ার আগেই। শনিবার এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেছেন, ‘আপাতদৃষ্টিতে মনে হচ্ছে, আমি এই সিনেমার খলনায়ক। কিন্তু আমি এখানে আসার আগেই কিছু সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়ে গিয়েছিল এবং আমি কেবল সেগুলোকে সমর্থন জানিয়েছি। এটা আমার হাতে ছিল না।’
পরিকল্পনায় খাপ না খেলেও সুয়ারেজকে কখনোই একেবারে বাতিলের খাতায় ফেলে দেননি জানিয়ে তিনি যোগ করেছেন, ‘ব্যক্তি ও খেলোয়াড় হিসেবে লুইস সুয়ারেজের প্রতি আমি সম্মান দেখিয়েছি। আমি তাকে বলেছিলাম যে, যদি সে (বার্সায়) থেকে যায়, তাহলে খেলার সুযোগ পাওয়া তার জন্য কঠিন হবে, কিন্তু নিশ্চিতভাবেই সে স্কোয়াডের অংশ থাকবে।’
বার্সেলোনা বোর্ডের উপর ফের বিরক্তি প্রকাশ করায় পুরনো প্রশ্নটা নতুন করে আবার উঠে আসছে। কিছুদিন আগে ক্লাব ছাড়তে মনস্থির করে ফেলা অধিনায়ক মেসির কাছ থেকে সেরাটা পাবে তো কাতালানরা? নেদারল্যান্ডসের সাবেক কোচ কোমানের জবাব, ‘এটা খুবই স্বাভাবিক যে, একজন বন্ধু চলে যাওয়ায় মেসি দুঃখ পেয়েছে। কিন্তু অনুশীলনে ও মাঠে লিও সবার জন্য উদাহরণস্বরূপ। এমন একটা অনুশীলন সেশনও যায়নি, যেখানে সে অসাধারণ নিবেদন দেখায়নি। তাকে নিয়ে আমার কোনো সন্দেহ নেই।’
বার্সায় কোচ হয়ে আসতে না আসতেই একের পর এক জটিলতার সম্মুখীন হচ্ছেন কোমান। তবে বিষয়গুলোকে স্বাভাবিকভাবেই দেখছেন তিনি, ‘আপনি যদি সেসব কোচকে জিজ্ঞাসা করেন, যারা বার্সায় থেকেছে, তারা নিশ্চিতভাবেই আপনাকে বলবে যে, তারা কখনোই পুরোপুরি নির্ঝঞ্ঝাট দিন কাটায়নি।’
Comments