এমসি কলেজ ছাত্রাবাসে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ

২৪ ঘণ্টা পরেও গ্রেপ্তার নেই, ফেসবুকে পোস্ট দুই অভিযুক্তের

সিলেটের মুরারিচাঁদ কলেজের ছাত্রাবাসে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনার ২৪ ঘণ্টা পার হলেও অভিযুক্ত কোন আসামিকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ।
বামে মাহফুজুর রহমান মাসুম, ডানে রবিউল হাসান। ছবি: সংগৃহীত

সিলেটের মুরারিচাঁদ কলেজের ছাত্রাবাসে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনার ২৪ ঘণ্টা পার হলেও অভিযুক্ত কোন আসামিকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ।

তবে এর মধ্যে নিজেদের নির্দোষ দাবি করে ফেসবুকে পোস্ট দিয়েছেন আসামি মাহফুজুর রহমান মাসুম ও রবিউল হাসান।

শনিবার সকাল ৯টার দিকে ফেসবুকে পোস্ট দেন মাহফুজুর রহমান মাসুম। সেখানে তিনি লিখেন, 'এরকম জঘন্য কাজের সাথে আমি জড়িত না। যদি জড়িত প্রমাণ পান প্রকাশ্যে আমাকে মেরে ফেলবেন। একমাত্র আল্লাহর উপর বিশ্বাস আছে। আল্লাহ আমাকে নির্দোষ প্রমাণ করবেন। তবে নির্দোষ প্রমাণিত হওয়ার আগে আমাকে সুইসাইডের দিকে নিয়ে যাওয়া আপনাদের বিচার আল্লাহ করবেন।’

এরপর সকাল ১০:৪০ মিনিটে পোস্ট দেন রবিউল হাসান। তিনি লিখেন, 'গতকাল এম সি ছাত্রাবাসে গনধর্ষনের সাথে, কে বা কারা আমাকে জরিয়ে অনেক অনলাইন নিউজ করিয়েছেন, আমি এম সি কলেজ ছাত্র, কিন্তু আই হোস্টেলে কখনোই ছিলাম না, আমি বাসায় থেকে পড়াশোনা চালিয়ে যাচ্ছি।’

তিনি লিখেন, 'আপনাদের সকলের কাছে অনুরোধ করছি, আমি এই নির্মম গনধর্ষনের সাথে জড়িত নই, আমাদের পরিবার আছে। যদি আমি এই জঘন্য কাজের সাথে জড়িত থাকি তা হলে প্রকাশ্যে আমাকে দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তি দেওয়া হোক। আমি কোনো ভাবেই এই কাজের সাথে জড়িত নই।’

পুলিশ গ্রেপ্তার করতে না পারলেও অভিযুক্ত দুই আসামির ফেসবুক পোস্ট দেয়ার বিষয়টি ব্যাপক সমালোচিত হয়েছে সারাদিন। 

পরে অন্য অভিযুক্তদের মতো মাহফুজুর রহমান মাসুম তার ফেসবুক অ্যাকাউন্ট ডিঅ্যাকটিভেট করে দেন। তবে রবিউলের অ্যাকাউন্ট এখনো সচল রয়েছে।

শনিবার রাত ১০টায় আসামিদের গ্রেপ্তারের বিষয়ে অগ্রগতি জানতে চাইলে সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার (মিডিয়া) জ্যোতির্ময় সরকার দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'এখন পর্যন্ত দৃশ্যত কোন অগ্রগতি নেই। গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।’

উল্লেখ্য, শুক্রবার রাতে সিলেটের টিলাগড়ে অবস্থিত মুরারিচাঁদ কলেজ ক্যাম্পাস এলাকায় বেড়াতে গেলে এক দম্পত্তিকে জোরপূর্বক ছাত্রাবাসে নিয়ে যায় অভিযুক্তরা। পরে স্বামীকে বেধে রেখে স্ত্রীকে সংঘবদ্ধভাবে ধর্ষণ করে তারা।

এ ঘটনায় রাতে ছয় জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাত আরো ২-৩ জনকে আসামি করে মামলা করেন ধর্ষণের শিকার তরুণীর স্বামী।

অভিযুক্তরা হলেন-- সাইফুর রহমান (২৮), শাহ মাহবুবুর রহমান রনি (২৫), অর্জুন লস্কর (২৫), মাহফুজুর রহমান মাসুম (২৫), রবিউল ইসলাম (২৫) ও তারেকুল ইসলাম (২৮)।

অভিযুক্ত সাইফুর রহমানের বাড়ি সিলেটের বালাগঞ্জ উপজেলায়, শাহ মাহবুবুর রহমানের বাড়ি হবিগঞ্জ সদর উপজেলার বাগুনিপাড়ায়, অর্জুনের বাড়ি সিলেটের জকিগঞ্জের আটগ্রামে, মাহফুজুর রহমানের বাড়ি সিলেটের কানাইঘাটের গাছবাড়ি গ্রামে, রবিউলের বাড়ি সুনামগঞ্জের দিরাই উপজেলায় জগদল গ্রামে এবং তারেকের বাড়ি সুনামগঞ্জ শহরের নিসর্গ আবাসিক এলাকায়।

শাহ মাহবুবুর রহমান রনি কলেজের ইংরেজি বিভাগের স্নাতকোত্তর শ্রেণির শিক্ষার্থী এবং কলেজ ছাত্রাবাসের বৈধ আবাসিক শিক্ষার্থী বলে জানিয়েছে কলেজ কর্তৃপক্ষ। বাকিদের মধ্যে সাইফুর রহমান, অর্জুন লস্কর এবং মাহফুজুর রহমান মাসুম কলেজের সাবেক শিক্ষার্থী এবং রবিউল ইসলাম ও তারেকুল ইসলাম বহিরাগত।

তবে তারা সবাই ছাত্রলীগের কর্মী বলে নিশ্চিত করেছেন কলেজের সাবেক এবং বর্তমান শিক্ষার্থী ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা।

Comments

The Daily Star  | English
Chief Adviser Muhammad Yunus

Chief Adviser Yunus's UNGA trip a critical turning point

Now is the best chance for Bangladesh to strengthen international cooperation.

12h ago