‘লতার গানের জন্য একদিন লাইন ধরবে সবাই’

লতা মঙ্গেশকর। ছবি: সংগৃহীত

উপমহাদেশের কিংবদন্তি কণ্ঠশিল্পী লতা মঙ্গেশকরের জন্মদিন আজ। চলতি বছরে এই শিল্পী পা রাখলেন ৯১ বছরে।

১৯২৯ সালের ২৮ সেপ্টেম্বর জন্মগ্রহণ করেন মধুকন্ঠী এই শিল্পী। সাত দশক ধরে এক হাজারের বেশি ভারতীয় ছবির জন্য প্রায় ২৫ হাজার গান গেয়েছেন তিনি। হিন্দি, বাংলাসহ ৩৬টি ভাষায় গান গেয়েছেন লতা মঙ্গেশকর।

মাত্র ১৩ বছর বয়সে সংসারের দায়িত্ব পড়ে তার কাঁধে। অভিনয় আর গান দুটোই সমানতালে করতেন। ছোট ছোট ভাইবোনকে নিয়ে মা শিবন্তী মঙ্গেশকর যেন অকূল পাথারে পড়ে না যান সে দিকে লক্ষ্য রাখতেন তিনি।

বাবা দীননাথ মঙ্গেশকর প্রখ্যাত নাট্য ব্যক্তিত্ব এবং ধ্রুপদী সংগীতশিল্পী ছিলেন। জন্মের পর হেমা নাম থাকলেও পরে মঙ্গেশকর দম্পতি তার নাম রাখেন লতা।

মাত্র ১৩ বছর বয়সে সংসারের দায়িত্ব পড়ে লতা মঙ্গেশকরের কাঁধে। ছবি: সংগৃহীত

পাঁচ বছর বয়সেই লতা প্রথম অভিনয় করেন বাবার নাটকে। যখন ১৩ বছর বয়স, বাবা দীননাথ মারা যান। তখন আশা, ঊষা এবং ভাই হৃদয়নাথ অনেক ছোট। তাদের পারিবারিক বন্ধু মাস্টার বিনায়কের প্রতিষ্ঠানে মারাঠি ছবিতে অভিনয় শুরু করেন শিশুশিল্পী লতা ও আশা। ১৯৪২ সালে মারাঠি ছবি ‘কিটি হাসাল’-এ প্রথম প্লেব্যাক করেন তিনি। যদিও গানটা বাদ পড়ে ছবি থেকে। ১৯৪৫ সালে মাস্টার বিনায়কের প্রতিষ্ঠান আসে বম্বেতে (বর্তমান মুম্বাইয়ে)। এখানেই ধ্রুপদী সংগীতের তালিম নেন লতা। পাশাপাশি চলতে থাকে মারাঠি ও হিন্দিতে গানের প্লেব্যাক।

তখনকার একজন নামী প্রযোজক শশধর মুখোপাধ্যায়ের ‘শহিদ’ ছবির জন্য বাদ দিয়েছিলেন লতার গাওয়া গান। গুলাম হায়দার নামে লতার পরিচিত একজন সেই প্রযোজককে বলেছিলেন, ‘একদিন লতাকে দিয়ে গাওয়ানোর জন্য লাইন ধরবে সবাই।’ কথাটা সত্য হয়েছিল।

১৯৪৮ সালে ‘মজবুর’ ছবিতে প্রথম বড় একটা সুযোগ আসে লতার। হিট হয় তার গাওয়া ‘দিল মেরা তোড়া’ গানটি। এরপরের বছর ১৯৪৯ সালে ‘মহল’ ছবিতে ‘আয়েগা আনেওয়ালা’ গানটি তাকে সফলতার পথে এগিয়ে দেয়।

সেই সময় এক সাক্ষাতকারে লতা মঙ্গেশকর বলেছিলেন, ‘কাজটাকেই আসলে আমার ধ্যানজ্ঞান করে রেখেছি। তার বাইরে কোনো কিছুতে জড়াইনি। সেই ছোটবেলা থেকেই জীবন যুদ্ধে জড়িয়ে যাই। জীবনে প্রথম যখন বাবার সঙ্গে মঞ্চে উঠি, আমার বয়স তখন নয় বছর। ফিল্মে আসি ১৩ বছর বয়সে। অনেক কিছু সহ্য করেছি জীবনে। কিন্তু তাতে কখনও দুঃখ পাইনি।’

ভারতীয় প্রথম শিল্পী হিসেবে লতা মঙ্গেশকর লন্ডনের রয়্যাল অ্যালবার্ট হলে অনুষ্ঠান করেন। ১৯৭২ সালে পরিচয় ছবিতে ‘বিতি না বিতাই র‌্যায়না’ গানের জন্য তিনি জাতীয় পুরস্কার পান। ১৯৬৯ সালে পদ্মভূষণ এবং ১৯৭১ সালে পদ্মবিভূষণে সম্মানিত হন তিনি। ২০০১ সালে ভারতরত্ন সম্মানে ভূষিত হন এই কিংবদন্তি।

লতার গানে নূরজাহানের গানের প্রভাব পাওয়া যেত। নূরজাহানের সঙ্গে তার ব্যক্তিগত সম্পর্ক ছিল খুবই ভালো। তবে কিশোর কুমারের গান তিনি খুবই পছন্দ করতেন। অজানা কারণে কিংবদন্তী শিল্পী লতা মঙ্গেশকরের চিরজীবন অবিবাহিতই থেকেই গেলেন।

Comments

The Daily Star  | English

Opening aid corridors, leasing out ports not this govt’s job

Making decisions on a “humanitarian corridor” to Rakhine and leasing out container terminal of Chittagong Port to foreign companies are not the interim government’s job, said BNP acting chairman Tarique Rahman last night.

3h ago